ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কূটনীতির চাপে রাজনীতি

কূটনীতির চাপে রাজনীতি

বিশ্বায়নের এই যুগে কোনো দেশই নিজস্ব মানচিত্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে পারছে না। ব্যবসাবাণিজ্য কিংবা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের জন্য অন্য দেশ, গোষ্ঠী বা অঞ্চলের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। আর এই সুযোগ নিয়ে অপেক্ষাকৃত দুর্বল অর্থনীতির দেশ বা জোটের ওপর প্রভাব বিস্তার করে চলে শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ বা বৃহৎ জোটগুলো। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে অন্যদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েও হস্তক্ষেপ করে বসে উন্নত দেশ বা রাষ্ট্র। এক্ষেত্রে বিশ্বের বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশগুলোর ব্যাপারে বিদেশি শক্তির হস্তক্ষেপ খুব বেশিই দেখা যায়। তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে বাংলাদেশও অনেক ক্ষেত্রে এমন পরিস্থিতির শিকার হয়।

যদিও বাংলাদেশ বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের কাতার থেকে খানিকটা ওপরে অবস্থান করছে। তারপরও দেশটিতে নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়নে সদা তৎপর বিদেশিরা। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনকেন্দ্রিক তৎপরতা অনেক বেশি বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলেন, উন্নয়ন সহযোগী দেশগুলোও অযাচিতভাবে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে বসে। তাদের যুক্তি হলো, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব যদি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে অস্থিতিশীল করে তোলে সেক্ষেত্রে দাতা কিংবা উন্নয়ন অংশীদদার দেশগুলোতে তার প্রভাব পড়ে। সে কারণেই অনেক ক্ষেত্রে তারা হস্তক্ষেপ করে বসে। তবে অযাচিতভাবে হস্তক্ষেপ যে কূটনীতিকদের নিয়ন্ত্রণকারী আন্তর্জাতিক আইন ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন তা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি বাংলাদেশে বিরোধীদলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সরকারের কড়াকড়ির বিষয়ে ভিয়েনা কনভেনশনের লঙ্ঘন করে কূটনীতিকরা বক্তব্য দিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। রাজনীতিকরা বলছেন, নির্বাচন এলেই বিদেশি কূটনীতিকদের তৎপরতা বেড়ে যায় বহুগুণ। দেশীয় রাজনীতিতে কূটনৈতিক খেলা শুরু হয়। এ খেলায় যারা এগিয়ে যায় ক্ষমতার মসনদের নাগাল তাদের আওতায় চলে আসেন বলে বিশ্বাস করা হয়। যদিও এক্ষেত্রে রাজনীতির মূল শক্তি জনগণকে ঘিরে যে আবর্তিত হয় রাজনীতিকরা সবাই তা স্বীকার করে নেন। দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে কূটনৈতিক লাভ লোকসানের বিষয়টি ব্যাপকমাত্রার আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ময়মনসিংহের বিএনপি দলীয় জনৈতিক সমর্থক গোলাম মোস্তফা বললেন, ইচ্ছা ছিল দলের ঢাকায় আয়োজিত গণসমাবেশে যোগ দেবেন। আগেভাবেই সব প্রস্তুতি নিয়েও রেখেছিলেন। তবে সমাবেশের তিনদিন আগে ৭ ডিসেম্বর তার শাশুড়ির মৃত্যুর কারণে তাকে শ্বশুরবাড়ি যেতে হয়। যে কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সমাবেশে যোগ দেয়ার স্বপ্ন অপূর্ণই থেকে যায়। তবে দলের গণসমাবেশ নিয়ে তার ব্যাপক কৌতুহল, নানা হিসাব-নিকাশ।

মোস্তফার মূল্যায়ন হচ্ছে, ঢাকার সমাবেশে বিএনপির লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি। দলের মহাসচিবসহ শীর্ষ নেতাদের অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এটা অনেক বড় ক্ষতি। তবে মোস্তফার যুক্তিকে সমর্থন করে আরেকজনের ভাষ্য, তবে এই সমাবেশ আন্তর্জাতিক মহল তথা কূটনীতিকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছে। নাঈম কামাল নামের আরেকজনের ভাষ্য, সমাবেশের মূল লক্ষ্যই ছিল কূটনৈতিক অঙ্গনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। তারা দেখাতে চেয়েছে, বাংলাদেশে বিরোধিদলের মতপ্রকাশ ও রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের সুযোগ নেই। ফলে কূটনীতিকরা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। দলের প্রান্তিক পর্যায়ে কূটনৈতিক রাজনীতি নিয়ে এমন আলোচনা এখনও চলছে।

তবে বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে কূটনীতিদের মধ্যেও কিছুটা প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। গণসমাবেশের তিনদিন আগে গত ৭ ডিসেম্বর ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তর তথা ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস (এফসিডিও) থেকে জারি করা বিবৃতিতে বাংলাদেশে ভ্রমণের ক্ষেত্রে ব্রিটিশ নাগরিকদের জন্য এক সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছিল। ‘ডিসেম্বরে ঢাকায় রাজনৈতিক সমাবেশ এবং শহরের বিশৃঙ্খলা’ শিরোনামের সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ঢাকায় ১০ ডিসেম্বরের রাজনৈতিক সমাবেশের কারণে শহরের চারপাশে পরিবহন, যোগাযোগ নেটওয়ার্ক এবং চলাচলে সম্ভাব্য বিঘ্ন ঘটবে। আইন প্রয়োগকারীদের অধিক উপস্থিতি থাকবে। রাজনৈতিক সমাবেশের ফলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে সহিংস সংঘর্ষ হতে পারে। ব্রিটিশ নাগরিকদের রাজনৈতিক সমাবেশসহ সমস্ত বড় জমায়েত এড়িয়ে চলতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

একইদিনে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ডেনমার্ক, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস ও হাইকমিশনসহ ১৫টি দেশ যৌথবিবৃতি দেয়। যেখানে তারা মানবাধিকার রক্ষায় ও বাংলাদেশে উন্নয়নের প্রসারে গণতন্ত্রের ভূমিকা তুলে ধরে। একইসঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার সনদে উল্লিখিত স্বাধীন মতপ্রকাশ, শান্তিপূর্ণ সমাবেশ ও নির্বাচনের গুরুত্বও তুলে ধরে বলা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, জনগণের অংশগ্রহণ, সমতাবিধান, নিরাপত্তা প্রদান এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য মূল্যবোধ ও নৈতিক অবস্থান হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে সমর্থন করি। আমরা বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে এ দেশের সাফল্য অর্জনে আরও সহযোগিতা করতে আগ্রহী এবং একইসঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করছি।

আগামী ২০২৪ সালের শুরুর দিকে ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো ইতোমধ্যে সারাদেশে সমাবেশ করছে। এসব বিবৃতি বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি প্রভাব ফেলে থাকে। গত নভেম্বরে একটি অনুষ্ঠানে ২০১৮ সালের বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য করেন জাপানি হাই কমিশনার ইতো নাওকি। তার কয়েক মাস আগে বাংলাদেশস্থ জার্মান রাষ্ট্রদূত আখিম ট্র্যোস্টার বক্তব্য সমালোচনার মুখে পড়ে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগে ২০০৬ বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে বিদেশি কূটনৈতিকদের নগ্ন হস্তক্ষেপ রাজনৈতিক পরিবেশকে ঘোলাটে করেছিল। ২০০৭-২০০৮ সালে রাজনৈতিক শূন্যতা তৈরি করতে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করে নানা ধরনের নির্যাতন করা হয়। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয় লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসে। সেই ২০০৬ সালে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরী ও মার্কিন হাইকমিশনারের তৎপরতা দেশের রাজনীতিতে একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতি তৈরি করেছিল।

বর্তমানেও বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রদূতদের বক্তব্য ও কার্যক্রম ভিয়েনা কূটনৈতিক কনভেনশনের বিপক্ষে যাচ্ছে বলে একাধিকবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে সতর্কবার্তা উচ্চারণ করা হয়েছে। সেখানে বলা হচ্ছে, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কূটনৈতিকদের নাগ গলানো থেকে বিরত থাকতে হবে। গত ৭ ডিসেম্বর ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি উইন লুইস এক বিবৃতিতে সর্বজনীন ঘোষণাপত্রের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, জন্মগতভাবে সব মানুষ স্বাধীন এবং মর্যাদা ও অধিকারের ক্ষেত্রে সমান। জাতিসংঘ বাংলাদেশের সব মানুষের সঙ্গে এ ব্যাপারে একাত্মতা প্রকাশ করছে এবং সবার সমান অধিকার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখতে অতীতের মতোই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আছে।

গত ৮ ডিসেম্বর বাংলাদেশে বিরোধীরাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা ও প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের খবরে উদ্বেগ জানায় সমাবেশের অধিকারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র‌্যাপোর্টিয়ার ক্লেমেন্ট ভউল। এক টুইটে তিনি বলেন, বাংলাদেশের ঘটনাগুলোর ওপর বিশেষ নজর রাখছেন। বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে হবে এবং বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

মার্কিন যুক্তরাস্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র নেড প্রাইস গত ৬ ডিসেম্বর ওয়াশিংটনে ব্রিফিংয়ে বলেন, মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে অপরাধ হিসেবে দেখা যাবে না। এটিকে চাপ বা ভয় দেখানোর কৌশল হিসেবেও ব্যবহার করা যাবে না। বাংলাদেশে ভীতি প্রদর্শন ও রাজনৈতিক সহিংসতার খবরে আমরা উদ্বিগ্ন। স্বাধীন মতপ্রকাশ, সমবেত হওয়ার ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের মতো মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

পরে গত ৮ ডিসেম্বর মার্কিন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ‘রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর বাংলাদেশের নৃশংস ক্র্যাকডাউন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখতে হবে’ শিরোনামে দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক মীনাক্ষী গাঙ্গুলী এক বিবৃতি দেন। সেখানে তিনি বলেন, রাজনৈতিক জীবনের শুরুর দিকে শেখ হাসিনা কখনোই কোনো চ্যালেঞ্জকে ভয় পাননি। তিনি ১৯৮০ এর দশকে সামরিক আইনের বিরুদ্ধে প্রচারণার নেতৃত্ব দিয়ে বেশ কয়েকবার আটক হন। পরে ১৯৯১ সালের সংসদীয় নির্বাচন এবং গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনের দিকে পরিচালিত হয়েছিল। ২০০৯ সালে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এটি পরিবর্তিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। এমনকি তিনি তার সরকারের সাফল্য নিয়ে গর্ব করার পরেও ধারাবাহিক নির্বাচনগুলো ভীতি ও জালিয়াতির দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের দক্ষিণ এশিয়ার পরিচালক বলেন, আগামী ২০২৪ সালের নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ দল টানা চতুর্থবারের মতো নির্বাচন করার জন্য, শেখ হাসিনা এবং তার সরকার বিরোধীদল বিএনপির প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ড দমন করছে। শেখ হাসিনাকে স্বৈরাচারী অপব্যবহার নয়, গণতান্ত্রিক শাসনের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে।

গত ২ অক্টোবর ঢাকায় নিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি এবং এ দেশে নিযুক্ত সংস্থাটির সদস্য রাষ্ট্রগুলোর অন্যান্য রাষ্ট্রদূতদের সাথে বৈঠক করেন জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদের।

চার্লস হোয়াইটলির বাসভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অংশ নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, ইতালি, স্পেন, ডেনমার্ক, সুইডেন, সুইজারল্যান্ড, নরওয়ে, ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতেরা উপস্থিত ছিলেন। তবে বৈঠকটির ব্যাপারে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।

দেশের সবশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে কূটনীতিকদের সঙ্গে গত ৬ ডিসেম্বর বৈঠক করে বিএনপি। যেখানে ঢাকায় বিদেশি সব দূতাবাসসহ জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থাকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। তার আগে ২৮ নভেম্বর বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি. হাসের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমেদের গুলশানের বাসায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বৈঠক হয়।

বিগত কয়েক মাসের কূটনৈতিক তৎপরতা লক্ষ্য করলে দেখা যায় দেশের প্রধান প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো নানা কারণে বিদেশি কূটনৈতিকদের দারস্থ হয়েছেন। এসব বৈঠকে কী কী বিষয়ে আলাপ-আলোচনা হয়ে সে সম্পর্কে কোনো পক্ষই খোলাখুলিভাবে কিছুই জানায়নি। এসব বিষয়ের পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে বাংলাদেশে কূটনৈতিকদের রাজনৈতিক মিশন শুরু হয়েছে। যার শেষ দৃশ্য দেখতে সবাইকে অপেক্ষা করতে হবে।

বিগত ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতিসংঘের তৎকালীন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো কয়েক দফা বৈঠক করেছিলেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। সেখানে ফলাফল শূন্য হয়েছিল। অর্থাৎ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নিজেরাই সমাধান করেছিল।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন