আদালতের প্রধান ফটক থেকে পুলিশের চোখে-মুখে পিপার স্প্রে করে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই জঙ্গিকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দশ আসামির ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রিমান্ডে নেওয়া আসামিরা হলেন- শাহীন আলম ওরফে কামাল, শাহ আলম ওরফে সালাউদ্দিন, বি এম মজিবুর রহমান, সুমন হোসেন পাটোয়ারী, আরাফাত রহমান, খাইরুল ইসলাম ওরফে সিফাত, মোজাম্মেল হোসেন, শেখ আব্দুল্লাহ, আ. সবুর, রশিদুন্নবী ভূঁইয়া।
বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) তাদের আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাদেরকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক মুহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শফি উদ্দিনের আদালত তাদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সিএমএম আদালতের পরিদর্শক জুলহাস বাদী হয়ে রাজধানীর কোতোয়ালি থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, দুই জঙ্গিকে একটি মামলায় আদালতে হাজির করা হয় গত ২০ নভেম্বর বেলা ১২টার দিকে। হাজিরা শেষে পুলিশ সদস্যরা তাদের নিয়ে যাচ্ছিলেন হাজতখানার দিকে। এ সময় পুলিশের চোখে-মুখে স্প্রে করে জঙ্গি সদস্য মইনুল হাসান শামীম ও আবু সিদ্দিক সোহেল ওরফে সাকিবকে ছিনিয়ে নেয় তাদের সহযোগীরা। এই দুই জঙ্গি দীপন হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে সাগর ওরফে বড় ভাই ওরফে মেজর জিয়ার (চাকরিচ্যুত মেজর) পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় আয়মান ওরফে মশিউর রহমান (৩৭), সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে আকাশ ওরফে কনিক (২৪), তানভীর ওরফে সামশেদ মিয়া ওরফে সাইফুল ওরফে তুষার বিশ্বাস (২৬), রিয়াজুল ইসলাম ওরফে রিয়াজ ওরফে সুমন (২৬) ও মো. ওমর ফারুক ওরফে নোমান ওরফে আলী ওরফে সাদ (২৮) পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামিদের ছিনিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করে। এ পরিকল্পনার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দুটি মোটরসাইকেলে করে আনসার আল ইসলামের অজ্ঞাতপরিচয় ৫/৬ জন সদস্য অবস্থান নেয়। এছাড়াও আদালতের আশপাশে অবস্থান করা অজ্ঞাতপরিচয় আরও দশ/বার জন আনসার আল ইসলামের সদস্য আদালতের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করে। এরপর তারা পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
মামলার এজাহারে আরও বলা হয়, ঘটনার দিন সকাল ৮টা ৫ মিনিটে কাশিমপুর থেকে ১২ জন আসামিকে ঢাকার আদালতে প্রিজন ভ্যানে নিয়ে আসা হয়। সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার প্রসিকিউশন বিভাগে আসামিদের হাজিরা দেওয়ার জন্য সিজেএম আদালত ভবনের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনাল ৮-এ নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন এ মামলার শুনানি শেষে জামিনে থাকা ১৩ নম্বর আসামি মো. ঈদী আমিন (২৭) ও ১৪ নম্বর আসামি মেহেদী হাসান অমি ওরফে রাফি (২৪) আদালত থেকে বের হয়ে যান।
ওইদিন বেলা ১২টার দিকে আদালতের মূল ফটকের সামনে আসামিরা পৌঁছামাত্র হামলা চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। যার মধ্যে দুইজনকে ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হয় জঙ্গিরা।
আনন্দবাজার/কআ