রাজশাহীর একটি নার্সিং হোমে ক্লিনিকের বিল পরিশোধ করতে না পারায় এক নবজাতককে চারবার বিক্রির ঘটনা ঘটেছে ।
রোবাবর (২০ নভেম্বর) বিকেল ৩টার দিকে রাজশাহীর তানোর এলাকায় রাজপাড়া থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
জানা গেছে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পেরে নবজাতককে বিক্রি করেন শিশুটির বাবা নিজেই। এরপর হতে থাকে হাত বদল।
এমন ঘটনার পর নবজাতককের বাবা এবং ক্রেতাদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
নবজাতককের বাবা মো. রহিদুল ইসলাম (৪০) রাজশাহী নগরীর সিলিন্দা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন। তিনি পেশায় দিনমজুর। তার বর্তমান স্ত্রী জান্নাতুন খাতুন গত ১০ নভেম্বর রাজশাহী নগরীর লক্ষ্মীপুরের কেয়ার নার্সিং হোমে একটি কন্যা শিশুর জন্ম দেন। জন্ম নেওয়ার দুই দিনের মাথায় শিশুটিকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন বাবা রহিদুল। রহিদুল ও জান্নাতুনের এটি প্রথম সন্তান। তার আগের স্ত্রীর দুই সন্তান রয়েছে।
হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার মতো টাকা ছিল না তার কাছে। তাই নার্সের মাধ্যমে সন্তানকে বিক্রি করেছেন। তাকে ২৪ হাজার টাকা দেওয়া হয়। নার্স ৩০ হাজার টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করেছেন বলে জানান রহিদুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, শিশুটি প্রথমে নার্সের কাছ থেকে তরিকুল আহসান নামে এক ব্যক্তি কিনে নেন। এরপর তিনি গোলাম শাহিনুরের কাছে বিক্রি করেন।
তবে, শিশুটির বৈধ্য কাগজপত্র না থাকায় শাহিনুর শিশুটিকে ফিরিয়ে দেন। পরে তরিকুল গোদাগাড়ীর কাঁকনহাটে নবজাতককে এক নারীর কাছে বিক্রি করেন। ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে তানোরে চলে যান। পুলিশ প্রথমে কাঁকনহাটে ও পরে তানোরে অভিযান চালিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে।
সন্তানের কথা জিজ্ঞেস করলে রহিদুল বলতো অসুস্থ তাই হাসপাতালে ভর্তি আছে। এভাবে বেশ কয়েকদিন কেটে যায়। গত তিনদিন আগে হঠাৎ বলে মেয়ে মারা গেছে। বিষয়টি নিয়ে সন্দেহ হয়। নিজেদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে এলাকার মানুষ জেনে যায়। সবাই মিলে রহিদুলকে চাপ দিলে পুরো বিষয়টা সে খুলে বলে। পরে আমরা রাজপাড়া থানায় এসে পুলিশকে জানাই বলে নিশ্চিত করেন রহিদুলের স্ত্রী জান্নাতুল খাতুন।
শিশুটি উদ্ধার করা হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে বলে জানান মহানগর থানা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. রফিকুল আলম।
আনন্দবাজার/কআ