ঢাকা | বুধবার
১৯শে মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৫ই চৈত্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা

পা দিয়ে লিখে আলিম পরীক্ষা

শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও আটকে রাখতে পারেনি হাবিবের মেধাকে, হাত না থাকার পরও পা দিয়ে লিখেই পড়াশোনা চালিয়ে গেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় অংশ নিয়েছেন এবারের আলিম পরীক্ষায়। এ হার না মানা শিক্ষার্থীর বাড়ি রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হেমায়েত খালী গ্রামে।

জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান (১৯) একই গ্রামের দরিদ্র কৃষক আ. সামাদের একমাত্র ছেলে। হাবিব তিন বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তৃতীয়।

জানা যায়, অদম্য মেধাবী হাবিবুর রহমানের দুই হাত নেই। সে প্রথমে তার গ্রামের হেমায়েত খালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। পরে ২০১৫ সালে পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ৪.৬৩ নাম্বার নিয়ে জেএসসি পরীক্ষায় পাশ করে। এরপর ২০১৮ সালে দাখিল পরীক্ষায় ৪.৬১ নাম্বার নিয়ে পাশ করে। এবার একই মাদ্রাসা থেকে পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসা (কেন্দ্রে) আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।

হাবিবুর রহমানের বড় দুলাভাই (ভগ্নিপতি) আনোয়ার হোসেন বলেন, হাবিব জন্মগতভাবেই শারীরিক প্রতিবন্ধী তার দুটি হাত নেই তবে সে অত্যন্ত মেধাবী এবং ভালো ছাত্র। তার ভিতরে অনেক প্রতিভা এবং আত্মবিশ্বাস রয়েছে। সে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে চায়।

পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক হেদায়েতুল ইসলাম বলেন, হাবিব আমার মাদ্রাসার অত্যন্ত মেধাবী একজন ছাত্র, সে প্রতিটা ক্লাসেই ভালো করে আজকে আলিম পরীক্ষা দিতে আসছে, সে আমাদের মাদ্রাসা এবং দেশের গর্ব। তাকে নিয়ে আমরা অনেক আশাবাদী, তবে তার পরিবার দরিদ্র। সমাজের বিত্তবান ও সরকারের পক্ষ থেকে তার পাশে এসে দাঁড়ালে হয়তো সে আরো ভালো কিছু করতে পারবে।

হাবিবুর রহমান বলেন, আমি জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবে আমি লেখাপড়া চালিয়ে যেতে চাই। বাবা মা ও সকলের দোয়া নিয়ে আমি একদিন ভালো কিছু করতে পারবো ইনশাআল্লাহ।

এ বিষয়ে পাংশা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও চলমান আলিম পরীক্ষার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আওয়াবুল্লাহ ইব্রাহিম বলেন, জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী হাবিবুর রহমান আমার তত্ত্বাবধানে এই কেন্দ্রেই জেএসসি এবং দাখিল পরীক্ষা দিয়েছে, ও চলমান আলিম পরীক্ষা দিচ্ছে। তার দুটো হাত না থাকলেও তার পায়ের লেখনী দ্বারা বোঝার উপায় নেই যে সে প্রতিবন্ধী। তবে শুনেছি সে অতিদরিদ্র পরিবারের সন্তান। সাহায্য সহযোগিতা পেলে হয়তো সে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন