শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধ্বংসের পরও ক্রুশ চিহ্নে ভরে উঠে হিল অব ক্রসেস

ক্রুশ চিহ্নের পাহাড়। নামটি শুনতে অদ্ভুদ মনে হলেও বাস্তবিক অর্থে এর অস্তিত্ব রয়েছে। পৃথিবীর অন্যকোথাও এমন ক্রুশ চিহ্নের পাহাড় খুঁজে পাওয়া যাবে না। ক্রুশ চিহ্নগুলো সরিয়ে ফেলার অনেক বৃথা চেষ্টা করেছিলো স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।

সরানোর কিছুদিন পরই আবার জায়গাটি ক্রুশ চিহ্নে ভরে যায়। এমনই এক রহস্যজন স্থান হলো লিথুনিয়ার হিল অব ক্রসেস। বর্তমানে পাহাড়টিতে প্রায় দুই লাখ ক্রুশ চিহ্ন রয়েছে।

১৮৩১ সালে রাশিয়ার বিদ্রোহের পর থেকে হঠাৎ ক্রসগুলো সবার নজরে আসতে থাকে। জানা যায়, বিদ্রোহে নিহত আত্মীয়-স্বজন ও প্রিয়জনদের কবর দেয়ার মতো কোনো লাশ না পেয়ে পাহাড়ের উপরে ক্রস এবং ক্রুশবিদ্ধ করেন লিথুনিয়ানরা। পরবর্তীতে রাশিয়াদের দখলকালে পাহাড়টি দু’বার ধ্বংস করা হয়। কারণ সে সময় খ্রীষ্ট ধর্ম নিষিদ্ধ ছিল।

ক্রুশ সম্পর্কিত একটি মিথ রয়েছে লিথুয়ানিয়ায়। এক কৃষকের সঙ্গে সম্পর্কিত গল্পটি। যার কন্যা অত্যন্ত অসুস্থ ছিল। এক রাতে কৃষক স্বপ্নে দেখেন এক সাদা পোশাক পরিহিতা নারী তাকে কাঠের একটি ক্রস চিহ্ন তৈরি করে কাছের পাহাড়ে রেখে আসতে বলেন। শর্ত দেয়া হয়, যদি কৃষক স্বপ্নে দেখা নারীর কথা মতো কাজ করেন তবে তার মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠবে। এরপর কৃষক মেয়েকে বাঁচাতে স্বপ্নাদেশ অনুসারে কাজ করলেন। তার মেয়ে অলৌকিকভাবে সুস্থ হয়ে ওঠে। এরপর থেকে সবাই না-কি নিজেদের বিপদ ও রোগব্যাধির সুস্থতা কামনায় পাহাড়ে গিয়ে ক্রস চিহ্নগুলো রেখে যায়।

স্থানীয়রা বলেন, যেভাবে বিভিন্ন উপায়ে লিথুয়ানিয়ানরা স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করেছিল তারই চিত্র তুলে ধরে এখানকার ক্রুসগুলো। ৪ থেকে ৫ বার এটি ধ্বংস করে দেয়ার পরও প্রত্যেকবার এটি পুনঃনির্মাণ করা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের একটি অন্যতম তীর্থস্থান হিসেবে পরিচিত হিল অব ক্রসেস। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষের আনাগোনা ঘটে স্থানটিতে। কেউ যান ধর্মচর্চায় কেউ আবার মনবাসনা পূরণে।

আরও পড়ুনঃ  বাংলাদেশ-ভারত যৌথ প্রযোজনায় নির্মিত ‘মোহন বাঁশি শোনা যায়’

 

আনন্দবাজার/ইউএসএস

সংবাদটি শেয়ার করুন