ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভালো নেই জেলে পল্লীর বাসিন্দারা

ভালো নেই জেলে পল্লীর বাসিন্দারা

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার মেলারকুল গ্রামের জেলেপল্লীর মানুষ দুর্বিষহ জীবন-যাপন। রোগ-শোক আর দারিদ্র্য তাদের পিছু ছাড়ে না। কেউ বা দেনার দায়ে ঘর ছাড়া। কারো শিশু ভিক্ষা করছে মায়ের চিকিৎসার জন্য। টাকার অভাবে প্রতিবন্ধী অসহায় শিশুদের চিকিৎসা হচ্ছে না। এমন নানা সমস্যা আর সংকটে কাটছে তাদের জীবন।

অসহায় এসব পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার মেলারকুল গ্রামে প্রায় ৫০টি জেলে পরিবারের বসবাস। তারা নদী, খাল, বিলে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন। এছাড়া অনেকে সাগরে মাছ ধরতে যান। বর্তমানে আগের ন্যায় নদী-খাল, বিলে মাছ না থাকায় তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বছরের প্রায় অধিকাংশ সময় অনেকে বেকার বসে থাকেন। এসব পরিবারের জীবনমান উন্নয়নের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হলেও তাদে র কাছে পৌঁছায় না উন্নয়নের অর্থ। ফলে সারা বছর নানা সমস্যার সঙ্গে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের।  জেলে পল্লীর বাসিন্দা অশোক বিশ্বাস, হিরামন পাড়ৈসহ অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, তাদের পল্লীর লোকজন খুবই মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। দেনার দায়ে অনেকে ঘর ছেড়ে পালিয়েছেন।

এছাড়া অনেক প্রতিবন্ধী শিশু চিকিৎসা পাচ্ছে না। খাদ্যের অভাবে শিশুরা পুষ্টিহীনতায় ভুগছে। আদিবাসী হিসেবে সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য শিক্ষা, চিকিৎসা ও বাসস্থানসহ বিভিন্ন বরাদ্দ আসে কিন্তু আদিবাসী সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের লোকজন এ অর্থ নামমাত্র বিতরণ করে বাকিটা তাদের পকেটে পুরছে বলে অভিযোগ তোলেন।  ওই পল্লীর আরেক বৃদ্ধা অপর্ণা পাড়ৈ হতাশা ব্যক্ত করে জানান, আমরা আদিবাসী হওয়া সত্ত্বেও সদস্য প্রতি ৫শথ করে টাকা দিতে না পারায় সমিতি থেকে আমাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। ওই সমিতির নির্বাচনের সময় ভোটের জন্য অনেককে দেখা গেলেও গত চার বছরের মধ্যে সমিতির সভাপতি-সম্পাদক কেউই তাদের খোঁজ নিতে আসেননি। তারা রাতারাতি কোটিপতি বনে গেছেন।

এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্য রমিজ শেখ জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে যে বরাদ্দ আসে সেটা কম-বেশি জেলে পল্লীর লোকদের দেওয়া হয় তবে তাদের আদিবাসী সমিতির পক্ষ থেকে যে বরাদ্দ আসে সেটা কীভাবে ভাগ-বণ্টন হয় সেটা তার জানা নেই।

এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলার আদিবাসী সমিতির সভাপতি অনাদি মণ্ডলকে বার বার ফোন করা হলেও তিনি সেটি রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ইউএনও সাইয়েদা ফয়জুন্নেছা জানান, আসিবাসী সংগঠনের সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন