পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মধ্যরাতে উপকূলে আঘাত হানার শঙ্কায় পটুয়াখালীর কলাপাড়ার দুর্যোগ প্রবন এলাকার মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে শুরু করেছে। উপকূলে সাত নম্বর বিপদ সংকেত জারি হওয়ায় মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করে অনুরোধ করা হচ্ছে। গতকাল সোমবার দুপুরে লালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও মুক্তিযোদ্ধা বাজার আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থানরত মানুষের মাঝে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ মোঃ মুহিব্বুর রহমান মহিব। এ সময় কলাপাড়া ইউএনও শংকর চন্দ্র বৈদ্য সহ পুলিশ প্রশাসন ও দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিল। পরিস্থিতি মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে।মানুষের জীবন রক্ষায় সিপিপি’র ৩১৬০ জন সদস্য উপকূলে কাজ শুরু করেছে। ১৯টি মুজিব কিল্লা সহ ১৭৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তত রাখা হয়েছে।
এর আগে সকালে উপজেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, এনজিও প্রতিনিধি সহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা বৃন্দ। পরিস্থিতি মোকাবেলায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে প্রাথমিকভাবে ৯০ হাজার টাকা, চার মেট্রিক টন চাল, ১৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার, ১০০ কার্টুন বিস্কিট ও ড্রাই কেক সরবরাহ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সূত্র।
এদিকে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল হয়ে উঠেছে। রবিবার রাত থেকে উপকূলীয় এলাকায় টানা বর্ষন অব্যাহত রয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় জেলায় ৭৯.৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। এতে জনজীবনে ভোগান্তি নেমে এসেছে। ঘূর্নিঝড় সিত্রাং আজ বিকাল ৫টায় পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৩৩৫ কিলোমিটার দক্ষিন-দক্ষিন পশ্চিমে অবস্থান করছিলো। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ৫৪ থেকে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর প্রভাবে উপকূলীয় এলাকার নদ নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে পানি ৫ থেকে ৮ ফুট বৃদ্ধি পাবে। সকল মাছধরা ট্রলার সমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, উপজেলার ১৭৫ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব রকমের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।