ঢাকা | শুক্রবার
৩রা জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
১৯শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কাশবনে ইলিশের আড়ৎ

কাশবনে ইলিশের আড়ৎ

ইলিশ জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষা করা রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব: ড. রহিমা খাতুন, ডিসি, মাদারীপুর 

প্রতিনিয়ত প্রশাসন নতুন নতুন কৌশলে অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারীদের জেল-জরিমানা অস্থায়ী আস্তানা উচ্ছেদ করলেও থামেনি ইলিশ শিকারীদের দৌরাত্ম। শিফট ভিত্তিতে টহল থাকলেও নদী ও চরগুলোতে স্থায়ীভাবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা ক্যাম্প না থাকায় মাদারীপুরের শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, ঢাকার দোহার, ফরিদপুরের সদরপুর অংশের পদ্মা নদীতে ওৎ পেতে রয়েছে ইলিশ শিকারীরা।

ইলিশ শিকারীরা পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের কাশবনগুলোকে বেছে নিয়েছে আশ্রয়স্থল হিসেবে। ক্রেতারা নানান উপায়ে পৌঁছাচ্ছেন প্রত্যন্ত এ এলাকাগুলোতে। নদী পাড়ে কাশবনে বসেছে অস্থায়ী বা তাবু টানিয়ে হাট-বাজার আস্তানা আবাসস্থান।

মা ইলিশ সংরক্ষণে সরকারের নিধেধাজ্ঞাসহ বিশেষ অভিযান চলছে। ইলিশ নিধনে সরকারের নিষেধজ্ঞা বাস্তবায়নে অভিযানের শুরু থেকেই জেলার শিবচরের পদ্মা নদী ও সংলগ্ন চরগুলোতে প্রশাসনের ব্যাপক অভিযান চলছে। অভিযানে সংযুক্ত করা হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের। অভিযান চালিয়ে কয়েকটি আস্তানার অর্ধশত অস্থায়ী স্থাপনাও উচ্ছেদ করেছে। চলছে শিফটভিত্তিক ডিউটি। এরইমাঝে সুযোগ পেয়েই জেলেরা নদীতে নেমে পড়ছে।

মাদারীপুরের শিবচর, শরীয়তপুরের জাজিরা, মুন্সীগঞ্জের লৌহজং, ঢাকার দোহার, ফরিদপুরের সদরপুরসহ পদ্মা নদীর বিস্তীর্ণ জলরাশি ও চরগুলোতে প্রশাসন চলে গেলেই শুরু হচ্ছে ইলিশ নিধনের মহোৎসব। ধরা পড়া মাছগুলোর পেট ভরা ডিম। জাটকাও ধরা পড়ছে অজস্র। ভাটি অঞ্চলে কোস্টগার্ড, নেভি ও নৌপুলিশ নদীতে সার্বক্ষণিক থাকায় উজানের এ অঞ্চলের নদীতে এখন ইলিশের ছড়াছড়ি হওয়ায় জেলেরা নিধন যজ্ঞে নেমেছে। দূর চরের যে এলাকাগুলোতে সড়ক যোগাযোগ নেই সেখানেই বসছে বাজার। কাশবনগুলোতে গড়ে তোলা হয়েছে জেলেদের আবাসস্থল ও আড়ৎ।

ইলিশ ধরার বিভিন্ন কৌশল স্বীকার করেন অসাধু জেলেরা স্থানীয়রা। এসময়কালে নদীতে স্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে ক্রেতাদের শক্তহাতে প্রতিরোধ করা হোক এই অসাধু জেলেদের।

ইলিশের উৎপাদন নিয়ে  সম্ভাবনার কথা জানান মৎস্য কর্মকর্তা। মাদারীপুর জেলা মৎস কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, ইলিশ মওসুমে ডিম ফোটা থেকে শুরু করে বড় হওয়া পর্যন্ত নূন্যতম একটি মাছে এক লক্ষ ডিম থাকে। সুতরাং আমাদের যে ২২ দিন ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ এ কার্যক্রম যেকোনো মূল্যে সম্মিলিতভাবে জাতীয় সম্পদ রক্ষা করতে হবে।

মাদারীপুর পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম বলেন, ইলিশ মাছ রক্ষায় মাদারীপুর পুলিশ প্রশাসন জেলা প্রশাসনকে সার্বিক সহযোগিতা করে আসছে। এ অভিযানে পুলিশ সব সময় সচেষ্ট থাকবে।

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, ইলিশ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এ সম্পদ রক্ষা করা রাষ্ট্রীয় দ্বায়িত্ব। যে ২৮ দিন মাছ ধরা বন্ধ, সে সময়ে যেন কোনো জেলে নদীতে না নামে সে জন্য জেলেদের প্রতি আহবান জানানো হচ্ছে।

মা ও জাটকা ইলিশ সংরক্ষনে সরকার ঘোষিত ইলিশের ডিম ছাড়ার মৌসুমে নিধন বন্ধে সার্বক্ষণিক অভিযান ছাড়াও কোস্টগার্ড ও নেভি নদীতে ও চরে স্থায়ীভাবে নিয়োগের দাবি ইলিশপ্রেমীদের। চলতি অভিযানে জেলার শিবচরেই প্রায় ১শ জেলেকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন