ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবহেলায় দিন পার করছে সুতা ও টেক্সটাইল শিল্প

দেশের অপারসম্ভাবনাময় সুতা ও টেক্সটাইল শিল্প অবহেলায় দিন পার করছে। সরকারে তদারকির অভাব ও আর্থিক সংকটকে দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টখাতের ব্যবসায়িরা। ব্যবসায়ীরা বলছেন মাত্র ৫-১০ কোটি টাকা খরচ করে যারা গার্মেন্টস  খুলে বসেছেন তাদের জন্য সুবিধার সবরকমের দুয়ার খোলা আছে। অথচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে যারা সুতা-কাপড়ের মিল স্থাপন করেছেন তাদের জন্য সরকারী কোন সুবিধা নায়।

ব্যাবসায়িরা অভিযোগ করে আরও বলেন যেখানে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতসহ অন্যান্য প্রতিযোগী দেশগুলো সুতা-কাপড়ের শিল্পে অলআউট সাপোর্ট দিয়ে বিশ্বে বড় বাজারের সৃষ্টিতে সক্ষম হয়েছে। সেখানে আমাদের দেশ অনেক পিছিয়ে আছে। অথচ  সরকার শুধু ব্যস্ত গার্মেন্টস নিয়ে। আমরা যারা কাপড় ও সুতার মিল ব্যবসায়ী তাদের  শুধু মাটি-পানি আর শ্রম ছাড়া নিজের বলতে কিছুই নেই। সুতার মিল স্থাপন কারি ব্যবসায়ীদের নানা প্রতিকূলতার মাঝে ব্যবসা করতে হচ্ছে। মূলধনী যন্ত্রপাতি ও এই শিল্পের কাঁচামালসহ সব কিছুই আমদানিনির্ভর।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাদিক ব্যবসায়ী বলেন, বাজার প্রতিযোগিতায় অবস্থান শক্তিশালী করতে চীন ও ভারত বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, সেখানে দেশে গড়ে ওঠা বস্ত্রশিল্প প্রয়োজনীয় নীতি-সহায়তার অভাবে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে। তারা মনে করেন, বিশ্ববাজারে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে সুতা-কাপড়ের মতো ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ শিল্পকে সহায়তা দেয়া সময়ের দাবি। এতে একদিকে অর্থনীতিতে নতুন বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি কর্মসংস্থানও বাড়বে। তাছাড়া এই সংকট নিয়ে শুধু ভুক্তভোগী শিল্প উদ্যোক্তারা ভাবলে চলবেনা না, সরকারের নীতিনির্ধারক মহল থেকে শুরু করে আমলাতন্ত্রকেও অর্থবহ ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে ওভেন খাতে ৬০-৭০ শতাংশ এবং সোয়েটারে ৮০-৮৫ শতাংশ কাপড় বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। দেশীয় শিল্পের স্বার্থে সরকারকে নেতিবাচক এ পথ বন্ধ করতে হবে। বিপরীতে গার্মেন্টসগুলো যেন দেশীয় বস্ত্রকল থেকে কাপড় কেনে সেজন্য প্রয়োজনীয় প্রণোদনা প্রদানসহ কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া খুবই দরকার বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সুতা ও টেক্সটাইল শিল্পে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবেন। এ খাতে এখন পর্যন্ত  কোনো প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে না। তবে নতুন বছরে আমরা বিষয়টি ভেবে দেখব। ইতিমধ্যে তৈরি পোশাক শিল্পে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। অথচ হাজার হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে যারা সুতা শিল্প ও টেক্সটাইল শিল্প গড়ে তুলেছেন তাদের কোনো সুবিধা দেয়া হচ্ছে না, এমন বাস্তব অবস্থা তুলে ধরা হলে মন্ত্রী বলেন, এখন তৈরি পোশাক শিল্পকে প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে।

কিন্তু এরপরও তৈরি পোশাক শিল্পের অবস্থা ভালো নয়। এটি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এজন্য টেক্সটাইল ও সুতা শিল্পে প্রণোদনা দেয়ার বিষয়টি ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এছাড়া বন্ডের সুবিধা নিয়ে যারা আমদানিকৃত সুতা খোলাবাজারে বিক্রি করছে তাদের বিরুদ্ধে আরও শক্ত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আনন্দবাজার/এফআইবি

সংবাদটি শেয়ার করুন