ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতা বেশি
লেনদেন
- সব ধরনের সূচক পতন
- ডিএসইতে ১২শ কোটি টাকা
সিএসইতে ৬৯ কোটি
- সেরা ডিএসইতে ইস্টার্ন হাউজিং
- সিএসইতে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) গতকাল সোমবার সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেন পরিমাণ ডিএসইতে কমলেও সিএসইতে বেড়েছে। লেনদেন ডিএসইতে ১২শ কোটি টাকায় নেমে এসেছে। আর সিএসইতে ৬৯ কোটি টাকায় ওঠেছে। তবে দুই স্টকে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার চাপ বেশি ছিল। লেনদেন সেরা ডিএসইতে ইস্টার্ন হাউজিং। অপরদিকে লেনদেন সেরা সিএসইতে আনোয়ার গ্যালভানাইজিং। ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত রয়েছে। সিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে।
পুঁজিবাজারের পতন প্রসঙ্গে বাজার সংশ্লিষ্টরা বলেন, ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বর চেক ব্রোকারেজ হাউজের হিসাবে নগদায়ন বা জমা না হওয়া পর্যন্ত বিনিয়োগকারী লেনদেন করতে পারবে না বলে বিএসইসি এক সিদ্ধান্ত নেয়। এ কারণে ওইসময় পুঁজিবাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। দুইদিনের মাথায় একই বছরের ৮ ডিসেম্বর সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত করতে বাধ্য হয় বিএসইসি। কিন্তু চলতি বছরের গত ১১ অক্টোবর বিএসইসির সেই একই সিদ্ধান্ত কার্যকরের জন্য ডিএসইর মাধ্যমে ব্রোকারেজ হাউজগুলোকে জানানো হয়। এমন সিদ্ধান্তের খবর গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারে ছড়িয়ে পড়লে ফের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ওইদিন ডিএসইর প্রধান ডিএসইএক্স ৭ পয়েন্ট কমে। গত রবিবার কমেছে ১৬ পয়েন্ট। পরেরদিন গতকাল কমেছে ৬৫ পয়েন্ট।
সংশ্লিষ্টরা বলেন, গতকাল ডিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর অপরিবর্তিত ছিল। তবে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার চাপ বেশি ছিল। সিএসইতে বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। এই স্টকে ক্রেতার চেয়ে বিক্রেতার চাপ বেশি ছিল। আরও বলেন, সরকারের নতুন সময় সূচির প্রথম কার্যদিবস ডিএসইতে গত ২৪ আগস্ট পতন হয়েছিল। যা আগের টানা ছয় কার্যদিবস উত্থানের পর এই মন্দা।
পতন পরের দুই কার্যদিবস (বৃহস্পতিবার ও রবিবার) উত্থানে ছিল পুঁজিবাজার। ওইসময় লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছিলো। পরেরদিন সোমবার লেনদেনে ভাটা পড়ে। সেখান থেকে পরের দুই কার্যদিবস লেনদেন কিছুটা বাড়ে। পরেরদিন লেনদেন আবারো কমে। এরপরের কার্যদিবস লেনদেন বেড়ে ২৩শ কোটি টাকায় ওঠেছিল। পরে জোয়ার ভাটায় চলে পুঁজিবাজারের লেনদেন। তবে ২০ সেপ্টেম্বর লেনদেন বছরের সেরা রেকর্ড করেছিলো। ওইদিন লেনদেন ২৮শ কোটি টাকা এসেছিলো। পরে ফের ভাটা পড়ে লেনদেনে। এরই ধারায় গতকাল লেনদেন ১২শ কোটি টাকায় চলে আসে।
গতকাল সোমবার ডিএসইতে ১ হাজার ২৯৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবস রবিবার ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৩৪৩ কোটি ১২ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬৫ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪১৩ দশমিক শূন্য ১ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ২১ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২৭৭ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৪০৬ দশমিক ৭৭ পয়েন্টে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৬১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ২৬টি এবং কমেছে ১৫৩টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৮২টির। এদিন ডিএসইতে ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন ইস্টার্ন হাউজিং ১০৬ কোটি ৯৯ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ওরিয়ন ফার্মা ৭৩ কোটি ৭৭ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ৬৩ কোটি ৫৬ লাখ টাকা, পেপার প্রসেসিং ৩৭ কোটি ১৪ লাখ টাকা, কেডিএস এক্সেসরিজ ৩৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ৩৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস ২৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা, মনোস্পর পেপার ২৮ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ২৮ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং জেএমআই হসপিটাল ২৭ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপরদিকে, সিএসইতে গতকাল সোমবার লেনদেন হয়েছে ৬৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা শেয়ার। আগের কার্যদিবস রবিবার ১৭ কোটি ৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২১৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৩৪টি, কমেছে ১০৪টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৮০টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ১৬৪ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৯৫ দশমিক ৩৫ পয়েন্টে।
এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ১০ দশমিক ৮৮ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২১ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৯৮ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ১৩ দশমিক ৪০ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৬০ দশমিক ৪১ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৩৩১ দশমিক ৮৬ পয়েন্ট, ১১ হাজার ৩২৫ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ২১৬ দশমিক ১৮ পয়েন্টে।
এদিন সিএসইতে আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন আনোয়ার গ্যালভানাইজিং ৪৫ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে সোনালী পেপার ৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা, কেডিএস এক্সেসরিজ ১ কোটি ৯৬ লাখ টাকা, মনোস্পল পেপার ১ কোটি ২ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ১ কোটি ২ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৭৮ লাখ টাকা, ওরিয়ন ফার্মা ৭১ লাখ টাকা, ইন্দো-বাংলা ফার্মা ৬৬ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস ৪৯ লাখ টাকা এবং ম্যাকসন স্পিনিং ৪৬ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।