- জ্বালানি শক্তির দেশ ব্রুনাই থেকে জ্বালানি কেনা যেতে পারে
আয়তন ও জনসংখ্যায় ছোট দেশ হলেও ব্রুনাই উন্নত ও আধুনিক একটি রাষ্ট্র। দেশটি তার প্রাকৃতিক সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে যাচ্ছে। কৃষি, বন, নদী ও পর্যটনকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে। বিভিন্ন দেশে হোটেল ব্যবসার সম্প্রসারণ করছে। সেখানে জনশক্তি রপ্তানি বৃদ্ধিসহ বাংলাদেশে তাদের বিনিয়োগ সম্প্রসারণেও কাজ করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রবীণ কূটনীতি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ। গত ১২ অক্টোবর দৈনিক আনন্দবাজারের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ থেকে ব্রুনাইয়ে পণ্য রপ্তানি কম। ৩৮ বছরে মাত্র ১৮ লাখ মার্কিন ডলারের কাছাকাছি রপ্তানি হয়েছে। এটি বাড়ানো যায় কীভাবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আগে ব্রুনাইয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর বা মালয়েশিয়া দিয়ে যেতে হতো। এখন সরাসরি বাংলাদেশ-ব্রুনাই বিমান চলাচলের ওপর মন্ত্রিসভায় একটি খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে পণ্য রপ্তানি বাড়বে। এক্ষেত্রে রপ্তানিকারক তথা ব্যবসায়ীদের বেশি মনোযোগ দিতে হবে। যদিও দেশটিতে জনসংখ্যা কম, তারপরও পরিকল্পিতভাবে বাজার সৃষ্টি করা যাবে। কেননা, দেশটি প্রায় একশ শতাংশ মুসলিম হওয়াতে আমাদের সঙ্গে তাদের সখ্যতা ভালো। কেননা বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ মুসলিম। এটি আচার-আচরণ, সংস্কৃতি, অর্থনীতিতে প্রায় একই মতাদর্শী হওয়াতে বাজার পাওয়া সম্ভব।
প্রবীণ এই কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞ বলেন, ব্রুনাইয়ের সুলতান হাসানাল বলকিয়ার নিজের মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরে হোটেল ও পর্যটন ব্যবসা আছে। তারা বিভিন্ন দেশে এগুলো সম্প্রসারণ করছে। আমরা সুলতানের কাছে সঠিকভাবে বিষয়টি তুলে ধরতে পারলে বাংলাদেশেও এগুলো সম্প্রসারণ হতে পারে। তিনি বিনিয়োগ করতে পারেন। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে আছে। এখানে কী করে ব্রুনাইয়ের বিনিয়োগ বাড়ানো যায় সেটি নিয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।
অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, আমাদের সুন্দরবনের মতোই ব্রুনাইয়ে ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট আছে। তারা সেটিকে কাজে লাগিয়েছে। প্রচুর পর্যটক সেখানে যায়। নদীর পানির উপর দু’তলা-তিন তলা গ্রামের বাড়ি। সেখানকার মানুষের বসবাস ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ অবস্থাও প্রশংসনীয়। পরিবেশ সুন্দর। তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা নেয়া হলে আমরা উপকৃত হবো।
ড. ইমতিয়াজ বলেন, ব্রুনাইয়ের কৃষিখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। আমাদের জনশক্তি সেখানে বেশি করে রপ্তানি করা যায়। চাহিদাও আছে প্রচুর। কৃষিতে আমরা শুধু জমি নিয়ে চিন্তা করি কিন্তু ব্রুনাই নদী থেকে শুরু করে বনসহ সবকিছু বিষয়ে সুশৃঙ্খলভাবে পদক্ষেপ নিয়ে উন্নয়ন করেছে। অন্যদিকে, জ্বালানি পাওয়ার ক্ষেত্রে ব্রুনাই অন্যতম। তাদের কাছ থেকে জ্বালানি কেনা যেতে পারে।
আনন্দবাজার/শহক