ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

টেকসই কৃষিতে পরিবেশ প্রকৌশল

টেকসই কৃষিতে পরিবেশ প্রকৌশল

জৈব প্রযুক্তিতে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা সম্ভব

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা ৮০ ভাগ এবং শ্রমশক্তির প্রায় ৬০ ভাগ কৃষিতে নিয়োজিত। কৃষি এখনো দেশের বৃহত্তর গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর প্রধান পেশা এবং অধিকাংশ জনগণই জীবন-জীবিকা ও কর্মসংস্থানের জন্য কৃষির ওপর নির্ভরশীল। কৃষি প্রযুক্তির আধুনিকায়নের মাধ্যমে অনবায়নযোগ্য শক্তির উৎস কিংবা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রেখে বর্ধিত জনসংখ্যার জন্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদন করে খাদ্য চাহিদা পূরণের পাশাপাশি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিসহ সামাজিক ও আর্থিক স্থিতিশীলতা অর্জন সম্ভব।

টেকসই উন্নয়ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কৃষি ক্ষেত্রে আধুনিক, যুগোপযোগী ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে ব্যাপক অগ্রগতি লাভ করা সম্ভব। প্রাকৃতিক সম্পদের সঙ্গে উন্নত ও উদ্ভাবনমূলক যন্ত্রের কার্যকর ব্যবহারের মাধ্যমে জৈব প্রযুক্তির ব্যবহার খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা আনয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সঠিক ব্যবস্থাপনা এবং পরিকল্পিত পন্থায় কীটনাশক বালাইনাশক ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে গ্রিন হাউজ গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস করা সম্ভব। পাশাপাশি প্রাকৃতিক সম্পদের (মাটি, পানি ও অন্যান্য) সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও ভূমিক্ষয় রোধ করা সম্ভব।

টেকসই কৃষি প্রযুক্তির মধ্যে আরো অন্তর্ভুক্ত কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতির সঠিক রক্ষণাবেক্ষণ এবং কৃষিপণ্য উৎপাদনে যন্ত্রপাতি আনুষাঙ্গিক জিনিসপত্রের সঠিক ও পরিকল্পিত ব্যবহার, পরিবেশ প্রকৌশলের মাধ্যমে কৃষি সম্পদের যথাযথ ব্যবহার, কৃষিপণ্য বর্জ্যজাত ব্যবস্থাপনা, জৈব জ্বালানি, অনবায়ন শক্তির সঠিক ব্যবহার, কার্যকর শক্তির সংরক্ষণ সম্ভব। পাশাপাশি জৈব চাষপদ্ধতি ভূমি ক্ষয় রোধ করে ভূমি সংরক্ষণ ও সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা সম্ভব।

তাই বায়োটেকনোলজি উদ্ভুত খরাসহিষ্ণু, লবণাক্ততা সহনীয়, কম সময়ে অধিক ফলনদায়ী বীজ উৎপাদন সম্ভব। বায়োমাস ও কম্পোস্টিং প্রক্রিয়ায় উদ্ভাবিত সার জমির উর্বরতা রক্ষার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখছে। পরিকল্পিত সেচ ব্যবস্থা, এগ্রোফরেস্ট্রি কালচার, প্রাকৃতিক উপায়ে বালাইনাশক প্রক্রিয়া কৃষিক্ষেত্রে যুগান্তকারী উদ্ভাবন, পশুপালন প্রক্রিয়া একইসাথে পরিবেশ ও পুষ্টিচক্র নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। পাশাপাশি দুধ, মাংস, ডিম ইত্যাদি প্রাণীজ আমিষের গুরুত্বপূর্ণ উৎস। বায়োজয়নামিক ফার্মিং প্রক্রিয়া একইসাথে মাটির উর্বরতা এবং বৃক্ষের বৃদ্ধি তরান্বিত করে। যেহেতু এ প্রক্রিয়ায় খামারে পশুপালন পদ্ধতি বাস্তুসংস্থানকে উৎসাহিত করে।

লেখক: শিক্ষার্থী, পরিবেশ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়

সংবাদটি শেয়ার করুন