ঢাকা | শুক্রবার
২৯শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সবুজে দুলছে স্বপ্ন

সবুজে দুলছে স্বপ্ন

কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় রোপা আমনের সবুজের মাঠ যে দিকে চোখ যায় সেদিকে সবুজ আর সবুজের মাঝে নতুন ধানের সমারহ। দোল খাচ্ছে নতুন ধানের শীষ। আর এরই মাঝে বাম্পার ফলনের আশা বেঁধেছেন রোপা আমন চাষিরা। কৃষকের মনে সঞ্চয় হচ্ছে স্বপ্ন, হালকা বাতাসে দুলছে নতুন ধানের শীষ ও সবুজ ধানের কচিপাতা। কয়েকদিনের মধ্যেই ধান গাছের ফুলে শীষে দুধ-দানা। জমিগুলো এক ফসলি ছিলো, বন্যার প্রকোপ না থাকায় এখন একটি জমিতে তিন ফসল, জমিভেদে কখনো চার চারটি ফসল তুলছেন চাষিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, রোপা আমন চাষিরা এবার ধানের ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। এবার ধানের বিভিন্ন ধরনের রোগবালাই থাকলেও প্রায় সে সমস্যা থেকে কেটে উঠতে পেরেছেন রোপা আমন চাষিরা। অনেক বাঁধা বিপত্তি কেটে রোপা আমন চাষিরা বাম্পার ফলনের আশা করছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলার বিভিন্ন মাঠে ধানের সবুজ গাছগুলোতে পোকামাকড় রোধে  কীটনাশক, সার প্রয়োগে নিবিড় পরিচর্যায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন তারা।

উপজেলার সরকার পাড়া গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আশরাফ আলী জানান, কৃষি অফিসারদের পরামর্শ ও সহযোগিতায় এবার ধাানের ভালো ফলন হবে আশা করছি। কিশোরপুর গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম, আমজাদ আলী, মাহাফুজার রহমান, নাড়িকেলবাড়ি মুন্সিপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম সেনাবাহিনী (অবঃ) বলেন, প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে। জুম্মাহাট কাঁঠাল বাড়ি বামনাছড়া গ্রামের কৃষক সুশান্ত কুমার বলেন, রোপা আমনের বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে। এবার অনেক স্বপ্ন দেখাচ্ছে রোপা আমন।

উলিপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর  উলিপুর উপজেলায় পৌরসভাসহ মোট ২৪ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যার অর্জিত লক্ষ্যমাত্রা ২৪ হাজার ৫৫০ হেক্টর জানান তিনি। চলতি বছর উপজেলা থেকে চালের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৪ হাজার ৬৫০ মেট্টিক টন। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা যাবে।

উপজেলার নাড়িকেলবাড়ি পন্ডিত পাড়া গ্রামের শাহিন আলম বলেন, হিরা-১০ ও বিনা-১৭ লাগিয়েছি ১০ শতক ২৫ শতক জমিতে। আগাম ধানের অনেক বাম্পার ফলন হয়েছে। তিনি আশা করেন শতাংশ প্রতি ৩০ কেজি থেকে ৩৫ কেজি পর্যন্ত হবে। তিনি আরও বলেন, আগাম ধানের ভালো ফলন পেতে উন্নত জাতের ধানের বীজের কোনো বিকল্প নেই। এ ধান কাটার পর সরিষা উৎপাদন করা যাবে বলে জানান তিনি।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমিতে আতব, সুগন্ধিসহ উন্নত ফলনশীল ব্রি-ধান ৪৯, ৫১, ৭৫, ৮৭, স্বর্ণা, ৫ ও রনজিৎ, জাতের ধান চাষ হয়েছে। আগাছা পরিষ্কার ও রোগবালাই কম থাকায় অধিক শ্রমের বিনিময়ে বাম্পার ফলনের স্বপ্নবুনে যাচ্ছেন চাষিরা। তবে কৃষকের দাবি, সারসঙ্কট ও জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে সেচ দিয়ে রোপা আমন চাষে খরচও বেশি হয়েছে, তাই খুব বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব না। যদি ভালো ফলন-দামে বিক্রি করা যায় তবে কিছুটা লাভবান হতে পারবে তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম বলেন, সুষম মাত্রায় ইউরিয়া প্রয়োগ, তুলনামূলকভাবে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় পোকামাকড়ের আক্রমণ কিছুটা আছে, সেগুলো নিধনের জন্য মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে শেষ পর্যন্ত বাম্পার ফলনের আশা করা যায়। সেই সঙ্গে কৃষকের মুখে হাসি ফুটবে বলে আশা করছি। আমাদের কৃষি অফিসাররা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন