মুক্তিযুদ্ধে স্বামী হারা রহিমার বেগমের ঠাঁই হয়েছিল তিস্তা পাড়ের বাঁধের ধারে। যেখানে কোনোমতে ছাপড়াঘর বানিয়ে বসবাস করছিলেন। তবে বছর খানেক আগে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলাবৃষ্টির তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সেই মাথা গোঁজার ঠাঁই। এই এক বছরে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ঘর মেরামতে সহায়তা পাননি তিনি। এমনকি অন্যের বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ করে ঘর মেরামতের জন্য চেষ্টা করেছে টাকা জমানোর, কিন্তু সে চেষ্টা ও ব্যর্থ হয় তার। সেই থেকে এই নারীর নির্ঘুম রাত কাটছে ভাঙা একটি জরাজীর্ণ ঘরে!
জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম মুনসীর বাজার গ্রামের গৃহহীন এই নারীর অসহায়ত্ব নিয়ে ২৭ সেপ্টেম্বর, ‘কথা রাখেননি ইউএনও! ৮ মাসেও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি পিআইও এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে দেশের বহুল জনপ্রিয় আনন্দ বাজারে সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি গোচরে আসে সেই আনন্দ বাজারের মানবিক সংবাদ টি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প থেকে তার জন্ম দিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নতুন ঘর পেলেন রহিমা বেগম।
রহিমার বেগমের দুর্দশা নিয়ে আনন্দ বাজারে সংবাদ প্রকাশের পর লালমনিরহাট দুই আসনের সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহম্মেদের নজরে আসে। এরপর তিনি লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর মাধ্যমে রহিমা বেগমের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নতুন গৃহ নির্মাণের আশ্বাস দেন।
আট মাস আগের আশ্বাস পাi হয়ে গেলেও এবার তা আর হয়নি। তাকে নিয়ে দ্বিতীয় বার সংবাদ প্রকাশের এক দিন পার না হতেই না হতেই রহিমার বেগমের নতুন ঘর নির্মাণের বরাদ্দ দেয়া হয়। গতকাল বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে দেয়া গৃহ নির্মাণ কাজের কাজ শুরু হয়েছে। ঘরের কাজ শুরু করতেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন রহিমা বেগম ।
তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দোয়া করেন ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘সারা জীবন কষ্টই করে গেলাম। সুখ কী জিনিস জীবনে সেটা বুঝিনি। শেষ বয়সে এসে পাকা ঘরে থাকবো, জীবন কাটাবো, এটা ভাবতেই ভালো লাগছে। আমাদের মতো গরিবের শেষ আশ্রয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাজার বছর বেঁচে থাকুন আমাদের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল মান্নান দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, মুজিববর্ষে কোনো পরিবার গৃহহীন থাকবে না। প্রধানমন্ত্রীর এমন দিক নির্দেশনায় প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। রহিমা বেগমকে নিয়ে সংবাদটি খুব হৃদয়স্পর্শী ছিল।