ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নূরানি ডাইংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএসইসি

নূরানি ডাইংয়ের বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএসইসি

নূরানি ডাইং অ্যান্ড সোয়েটারের আর্থিক হিসাবে মিথ্যা তথ্য প্রদান ও আইপিও ফান্ড আত্মসাৎ অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশান ও ফৌজদারি মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গতকাল বুধবার বিএসইসির ৮৪০তম নিয়মিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসির নির্বাহি পরিচালক ও মূখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ডিএসইর রিপোর্টের আলোকে নূরানি ডাইং, উদ্যোক্তা/পরিচালক, সংশ্লিষ্ট ইস্যু ম্যানেজার, নিরীক্ষক এবং আইপিও ফান্ড ব্যবহার নিয়ে প্রতিবেদনে সত্যায়িত করা নিরীক্ষকের বিরুদ্ধে শেয়ারহোল্ডারদের বিভিন্নভাবে প্রতারিত করা ও প্রতারণার কাজে সহযোগিতা করায়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ১৭ এর (এ), (বি), (সি) ও (ডি) লঙ্ঘিত হয়েছে। এজন্য কমিশন এনফোর্সমেন্ট অ্যাকশান ও ফৌজদারি মামলা গ্রহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এ অবস্থায় কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের দীর্ঘসময় ধরে বিএসইসি ও উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ তাহলে কি খতিয়ে দেখেছে, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। আইপিওতে নিরীক্ষক, ইস্যু ম্যানেজারের পাশাপাশি উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ ও বিএসইসি সব ফাইল খতিয়ে দেখে। এ করতে গিয়ে কমিশন আইপিও অনুমোদন দিতে কয়েক বছর পর্যন্ত বিলম্ব করে। ওই সময় স্টক এক্সচেঞ্জ এবং কমিশন তাহলে কি করে? অনিয়মের দায়ে অন্যরা অভিযুক্ত হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কেনো নয়?

বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নূরানি ডাইংয়ের ২০১৬ ও ২০১৭ এর নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন ও প্রকাশিত প্রসপেক্টাসে এবি ব্যাংকের প্রদত্ত ঋণ যথাক্রমে ৫৭ দশমিক ২০ কোটি ও ৪২ দশমিক ৯৫ কোটি টাকা উল্লেখ ছিল। কিন্তু ডিএসইর পরিদর্শক ও তদন্ত কমিটির সংগৃহিত ব্যাংক হিসাব অনুযায়ি, ২০১৮ সালে ১৬৮ দশমিক ৯৬ কোটি টাকা, ২০১৯ সালে ১৯২ দশমিক ৬৮ কোটি টাকা ও ২০২০ সালে ২১৬ দশমিক ৪১ কোটি টাকা দায় ছিল। এতে কোম্পানিটির ২০১৬-২০২০ সালের আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকৃত আর্থিক অবস্থা গোপন করা হয়েছে বলে প্রতিয়মান হয়েছে।

এছাড়া আইপিওর মাধ্যমে উত্তোলিত ৪৩ কোটি টাকার মধ্যে ৪১ দশমিক ১৪ কোটি টাকা আত্মসাত, ৩টি ইস্যু ম্যানেজার প্রতিষ্ঠান ডিউ ডিলিজেন্স সার্টিফিকেটের মাধ্যমে প্রকৃত অবস্থা গোপন করেছে, আইপিওকালীন ২০১৭ সালে নিরীক্ষক ক্লিন রিপোর্ট দিয়ে বিভ্রান্ত করেছে এবং ২০১৯ ও ২০২০ সালে জালিয়াতি সত্ত্বেও নিরীক্ষক ক্লিন রিপোর্ট দিয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারনা করেছে। এছাড়া কোম্পানিটির উদ্যোক্তা/পরিচালকেরা তাদের ধারনকৃত ৩০ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার যমুনা ব্যাংক ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের কাছে জামানত রেখে মার্জিন ঋণ গ্রহন করে তসরুফ করে। যা জামানতের বিপরীতে গৃহিত মার্জিন ঋণ খেলাপি হয়।

ডিএসইর সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় নূরানি ডাইং অ্যান্ড সোয়েটার। কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন দেড়শ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ১২২ কোটি ৬২ লাখ টাকা। রিজার্ভ ২ কোটি ৫১ লাখ টাকা। শেয়ার সংখ্যা ১২ কোটি ২৬ লাখ ২৫ হাজার ৩০টি। গতকাল বুধবার শেয়ারটির দর ছিল ৭ টাকা। কোম্পানিটি মোট শেয়ারের ৩০ দশমিক ৯৩ শতাংশ উদ্যোক্তা পরিচালক একাই ধারন করেছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ১৭ দশমিক ২৮ শতাংশ ও সাধারন বিনিয়োগকারী ৫১ দশমিক ৭৯ শতাংশ শেয়ার ধারন করেছে।

আনন্দবাজার/কআ

সংবাদটি শেয়ার করুন