ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঘোলাটে পানিতে শৈশব

ঘোলাটে পানিতে শৈশব
  • শৈশবটাই ছিল অন্যরকম

কার না মনে পড়ে সেই ছেলে বেলার কথা। দিনগুলি এখন শুধুই স্মৃতি হয়ে আছে। ছেলে বেলার সেই বন্ধুদের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা স্মৃতি। আজো কাঁদায় ফেলে আসা সেই দিনগুলো। সত্যিই আজও বার বার ফিরে যেতে মন চায় ফেলে আসা সেই শৈশবের দিনগুলিতে। শৈশব প্রত্যেকের জীবনের মধুর একটি সময়। শৈশব জীবনের দিনগুলি ছিল দুরন্তপনা, দুষ্টুমি আর সারাদিন ছোটাছুটি করে দৌড়ে বেড়ানোর এক অন্যতম মুহূর্ত। আমার শৈশব যেন আজও আমাকে ডাকে বলে আয়-ফিরে আয়।

সত্যিই শৈশব সে তো বড়ই মধুময়। শৈশব শব্দটি চোখে পড়লেই স্মৃতিপটে ভেসে ওঠে হাজারো দুরন্তপনা। বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ফুটবল খেলা, ছুটোছুটি করা। এই পাড়া থেকে ওই পাড়া ছুটে বেড়ানো। বৃষ্টিতে ভিজে সাইকেলের টায়ার চালিয়েছি। গোল্লাছুট, চোর-পুলিশ খেলেছি,আবার পুকুরে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গোসল করেছি আরও কত কি…! শৈশবে নদী কিংবা পুকুরে গোসল করতে গিয়ে জল ঘোলা করে ফেলার স্মৃতি কমবেশি সবারই রয়েছে।

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়ান গড় গ্রামের মাহাদই পাড়ার রাস্তার পাশে একটি পুকুরে একদল দুরন্ত শিশুর লম্পঝম্প চিত্র মনে করিয়ে সেই স্মৃতি। আনন্দে আত্মহারা এসব শিশুদের দেখলে স্মরণে চলে আসে ছোটবেলার সেই দিনগুলো। প্রচণ্ড তাপদাহে অসহনীয় গরম থেকে বাঁচতে মরিয়া নগরবাসী। এ গরমে সবাই খোঁজে একটু শীতলতার পরশ। আর পুকুরের এ ঘোলাজলে একদল শিশু খুঁজে নিয়েছে তাদের শীতলতা। জানা গেছে, এসব শিশু প্রায় প্রতিদিনই দুপুর হলেই ঝাঁপিয়ে পড়ে পুকুরের পানিতে। শীতল পরশে দুরন্ত শিশুর দল যেন গভীর এ পুকুরকে খেলার বস্তু বানিয়ে নিয়েছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা সময় কাটিয়ে দেয় এই পুকুরে।

নাগরিক জীবনে ছকে গাঁথা বিনোদন কেন্দ্র শিশু পার্কে যাওয়ার ভাগ্যে না হলেও বিনোদনের কোনো কমতি নেই যেন তাদের। বিভিন্ন যান্ত্রিকতার মাঝে থেকেও গ্রামের এই শিশুরা মুক্ত শৈশব উদযাপনে নিজেরাই তৈরি করে নিয়েছে নানা আয়োজন।

খেলার সাথীদের নিয়ে দৌড়ে লাফিয়ে নদীর পানিতে ঝাপ দিয়ে পড়া। আবার নদীর পানিতেই জমে ওঠে তাদের সাতার প্রতিযোগিতা। অনেক সময় সাতরে চলে যায় নদীর গভীরে। সময় কাটিয়ে আবার সেখান থেকে ফিরে আসা। খেলার ছলেই ঘন্টার পর ঘণ্টা অতিবাহিত করে পুকুরের ঘোলাজলে। আর এভাবেই কেটে যায় তাদের সেই শৈশব।

শৈশবে কাটানো সময়ের কথা বলতে গিয়ে এলাকার বিভিন্ন প্রবীণরা বলেন, ‘সেই দিনগুলো ছিল অন্যরকম। যা বলে বোঝানো যাবে না। সবথেকে আনন্দের বিষয় ছিল- হাফ প্যান্ট পরে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে ফুটবল খেলা। তখন আমাদের বই বহনে জন্য ব্যাগ ছিল না। বৃষ্টির দিনে সবাই একটা পলিথিন ব্যাগ সাথে রাখতাম। স্কুল ছুটির পর বৃষ্টি হলে বইগুলো পলিথিন ব্যাগে ভরে বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে বাড়িতে চলে আসতাম। আবার বইগুলো রেখে অনেকক্ষণ বৃষ্টিতে ভিজে খেলাধুলা করতাম। দীর্ঘসময় বৃষ্টিতে ভিজলেও জ্বর-সর্দি কিছুই আসত না। আমরা যে পরিমাণ খেলাধুলা করেছি, এখনকার ছেলে-মেয়ে সেই খেলার নামই জানে না।

সংবাদটি শেয়ার করুন