মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার থেকে গুলিবর্ষণে উত্তরাঞ্চলে একটি স্কুলে অন্তত ১১ শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ১৫ জন নিখোঁজ রয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্কুলটি দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহীদের ঘাঁটি অঞ্চলে অবস্থিত। সেনাবাহিনীর দুটি এমআই-৩৫ হেলিকপ্টার থেকে গত শুক্রবার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় সাগাইং অঞ্চলের তাবাইন টাউনশিপের একিট স্কুলে গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সাত শিশু প্রাণ হারায়। আহত হন তিন শিক্ষক ও ১৪ শিশু। পরে সেনারা গ্রামে অভিযান চালালে আরো দুই শিশু মারা যায়। আহতদের হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুই শিশুর মৃত্যু হয়।
সামরিক সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয় বলছে, লেট ইয়েট কন গ্রামের স্কুলে লুকিয়ে থাকা বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে। গ্রামটিতে কাচিন ইন্ডিপেনডেনস আর্মি (কেআইএ) ও প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে সেনারা অভিযান শুরু করেছেন। হামলার আগে প্রতিরোধযোদ্ধারা ও ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির ‘চরমপন্থীরা’ স্কুলটিতে লুকিয়ে ছিলেন।
হেলিকপ্টাের হামলার পরে স্কুলটি দেখতে গিয়েছিলেন এমন এক গ্রামবাসী বলেন, শিশুর শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন ছিল। স্কুলের ভেতরে রীতিমতো রক্তের পুকুর তৈরি হয়েছিল। ফ্যান, দেওয়াল, ছাদ- সব জায়গায় মাংসের টুকরো ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছিলো।
গ্রামের আরেক বাসিন্দা বলেন, দুই সন্তানের খোঁজে স্কুলে গিয়েছিলেন তাদের বাবা-মা। কিন্তু সেখানে সন্তানদের পোশাক ছাড়া আর কিছুই ছিল না। জান্তা সৈন্যরা বাচ্চাদের শরীরের একটি অংশও রেখে যায়নি। তাই বাবা-মা সন্তানদের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াও করতে পারেননি।
ইউনিসেফ বলেছে, হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণে শিশুরা নিহত হয়েছে। তারা অবিলম্বে নিখোঁজ ১৫ শিশুকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। শিশু হারানো পরিবারের প্রতি শোক জানাচ্ছে ইউনিসেফ। স্কুল নিরাপদ হওয়া উচিত। কোনও শিশুকে কখনও হামলা শিকার হওয়া উচিত না।
আনন্দবাজার/কআ