ঢাকা | সোমবার
২৫শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১০ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জীবন কাটে নৌকায়

জীবন কাটে নৌকায়

আধুনিক সভ্যতার যুগে মানুষের উন্নত জীবনযাপনের পাশাপাশি নৌকায় জীবন ধারণের ব্যতিক্রম চিত্রও দৃশ্যমান রয়েছে। সংসার সংগ্রামে নদী ও খালের বিভিন্ন স্থানে ভাসমান নৌকায় কাটছে তাদের জীবন। কোনো জমি ভিটামাটি না থাকায় বেদে সম্প্রদায়ের এসব পরিবারগুলো যুগযুগ ধরে নৌকায় বসবাস করে আসছেন। মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরেও বেশকিছু বেদে পরিবার উপজেলার সদর এলাকায় খালে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ভাসমান ছোট ছোট নৌকায় প্রায় শতাধিক পরিবার বসবাস করছেন।

শ্রীনগর-গোয়ালীমান্দ্রা খাল, দেউলভোগ ও আলপুর খাল ও পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষা ভাগ্যকূল এলাকার বিভিন্ন শাখা খালে নোঙর করা নৌকায় বেদে পরিবারের দেখা মিলেছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, বাসস্থানসহ কোনো মৌলিক চাহিদাই যেন ঠিকমত জুটছেনা এদের ভাগ্যে। নৌকায় পরিবারের শিশু, বৃদ্ধসহ নারী পুরুষ সদস্যরা গাদাগাদি করে থাকার পাশাপাশি রান্নাবান্না ও সাংসারিক যাবতীয় কাজ কর্মকর্ম করছেন। একটি পরিবারের সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩টি করে নৌকা রয়েছে। 

জানা গেছে, বেদে পরিবারের পুরুষদের এখন প্রধান পেশা হচ্ছে মাছ শিকার করা। মাছ বিক্রির টাকায় কোনো রকমে সংসার চলছে তাদের। এ সম্প্রদায়ের নারীরা এক সময় নৌকায় ফেরি করে বিভিন্ন গ্রামে চুরি, ফিতা, তৈজসপত্র বিক্রি করতেন। এখন বিভিন্ন কারণেই এ অঞ্চলের খালগুলো মরতে বসছে। এতে নৌকা যাতায়াতের ব্যাহত হচ্ছে। তার পরেও জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার তাগিদে এ পরিবারের সদস্যরা থেমে নেই। বেদে সম্প্রদায়ের নারী পুরুষদের অনেকেই এখন নানামুখী কর্মজীবি হয়ে উঠেছেন। পুরুষরা দিনমজুর, শ্রমিক ও ইজিবাইক চালিয়ে অর্থ উপার্জন করছেন। অপরদিকে নারীরা এলাকার বিভিন্ন গ্রাম, পাড়া মহল্লায় হেঁটে তৈজসপত্র বিক্রি করছেন। কেউ কেউ আবার নৌকায় বসে হস্তশিল্পের কাজও করছেন। রোদ, বৃষ্টি-ঝড় উপেক্ষা করে পরিবারের সদস্যরা সুখে দুঃখে নৌকাই তাদের শেষ ঠিকানা।

বেদে পরিবারের সদস্যরা বলেন, পূর্ব পুরুষদের অনুসরণ করাই তাদের পরিবারগত সভাব। তাদের জন্ম-মৃত্যু হচ্ছে এ নৌকাতেই। মাছ বিক্রির টাকায় চলে তাদের সংসার। এ সম্প্রদায়ের পুরুষরা এখন অনেকেই অন্য কাজে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন