শুক্রবার, ২০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

দেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। আমাদের দেশ অসাম্প্রদায়িকতার দেশ। আমরা সবাই বাঙালি। এখানে কেউ হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান হয়ে নয় বরং বাঙালি হয়েই মুক্তিযুদ্ধ করেছি। দেশকে শত্রুর হাত থেকে স্বাধীন করেছি। আমরা সবাই সমান। কেননা বঙ্গবন্ধু অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের কথা বলেছিলেন বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাজধানী ঢাকার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরে বাংলাদেশ মহিলা ঐক্যপরিষদ আয়োজিত সম-অধিকার, সম-মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, এখানে আমরা সবাই বাঙালি, সেই চেতনা ধারণ করে এগিয়ে চলছি। তবে দু-এক জায়গায় অসঙ্গতি যে হয়নি তা বলব না। সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই, আমরা সবাই বাঙালি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আপনারা কেন সংখ্যালঘুর কথা বলেন, আমার জানা নেই। এখানে আমরা সবাই একসঙ্গে চলি। তাই সংখ্যালঘু বলবেন না। যদি এটি বলতেই থাকেন তাহলে আমরা ব্যথিত হই। সংখ্যালঘু-সংখ্যাগুরু আমি বুঝি না, আমি বুঝি সবাই বাঙালি। সবাই মিলে আমরা এগিয়ে যাব।

মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ অর্জিত। এখানে হিন্দু-বৌদ্ধ, খ্রিস্টান না মুসলমানের রক্ত আমরা নির্দিষ্ট করে বলতে পারব না।

ভূমি দখলের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, আপনারা ভূমি দখলের কথা বললেন, এর সঠিক ফিগারটা আমার জানা নেই। তবে আপনাদের কাছে আমি এর বিস্তারিত চাই। কোথায় কার দ্বারা কবে, ঘটনার বাদী-বিবাদী ডিটেইল চাই। দেখব কেন বিচার হয়নি, কেন প্রতিকার হয়নি?

আরও পড়ুনঃ  শীতের তীব্রতার মধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস

নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে ক্ষমতায় এসে নারীর ক্ষমতায়নের কথা বললেন, কীভাবে তাদের এগিয়ে যেতে হবে, সেই পথনকশা দিলেন। ফলে নারীরা আজ সবক্ষেত্রে তাদের দক্ষতার পরিচয় দিয়ে এগিয়ে চলছেন।

তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আলোকিত বাংলাদেশের লক্ষ্যে পৌঁছাব। নারীদের সহযোগিতা ছাড়া আমরা এগিয়ে যেতে পারব না।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধকের বক্তৃতায় খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, কেউ ধর্মের পরিচয়ে মুক্তিযুদ্ধে যায়নি, আমরাও যায়নি। এদেশ আমাদের, মাটি আমাদের। এই মাটি রক্ষায় আমরাও রক্ত দিয়েছি। তাই এই দেশে আমাদেরও সম-অধিকার।

তিনি নিজেদের সংখ্যালঘু না ভাবতে পরামর্শ দেন। মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু নারীদের অংশগ্রহণ ও আত্মত্যাগের কথা উল্লেখ করেন।

হিন্দু ধর্মের মেয়েদের স্বামী ও পিতার সম্পত্তির ভাগ পাওয়া প্রসঙ্গে বলেন, সবার সাথে পরামর্শ করে সুষ্ঠু সমাধানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিতে হবে। আমি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এটি সংসদে উত্থাপন করবো। আশা করি শীতকালীন অধিবেশনেই এটি পাস হয়ে যাবে।

সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে ও দীপালী চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফৌজিয়া মুসলিম, অভিনেত্রী ও এমপি সুবর্ণা মুস্তফা, এটিএন নিউজের সিএনই সাংবাদিক মুন্নি সাহা, গলোরিয়া ঝর্ণা এমপি, ও মূলপ্রবন্ধ পাঠ করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক সুমনা গুপ্তা।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন