- রাজবাড়ীতে বিক্রির টার্গেট ৭৫৭ কোটি টাকার পাট
রাজবাড়ীর পাটের সুনাম দেশজুড়ে। এ জেলায় উৎপাদিত পাট রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়। চলতি বছর রাজবাড়ীতে ৭৫৭ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি পাটবিক্রি হবে বলে জানিয়েছেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
রাজবাড়ী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, চলতি বছর রাজবাড়ীতে ৪৯ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল পাটের চাষাবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে পাটচাষিরা পাটকেটে জাগ দিয়ে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে রোদে শুকিয়ে তা বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি করছেন। জেলায় চলতি বছর হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৫৬ মণ পাট। সে হিসেবে ৪৯ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে পাট উৎপাদন হয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৬০০ মণ বা ১ লাখ ১২ হাজার ২২৪ মেট্রিক টন। উৎপাদিত পাটের হিসেবকে যদি বেল্ট হিসেবে ধরা হয় তাহলে এবার রাজবাড়ী জেলায় ৬ লাখ ২০ হাজার ২২ বেল্ট (১৮১ কেজিতে ১ বেল্ট) পাট উৎপাদিত হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৭ শত ৫৭ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রাজবাড়ী জেলার বিভিন্ন হাটেবাজারে পাটের মাণ ভেদে ২ হাজার ৫০০ থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।
সরেজমিনে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার হরিণবাড়িয়া হাটে গিয়ে দেখা যায়, হরিণবাড়িয়া হাটে নির্দিষ্ট কোনো দিন নয়, সপ্তাহের ৭ দিনই এখানে চলে পাট কেনা বেচা। স্থানীয় পাটচাষিরা তাদের উৎপাদিত পাট এ হাটে এনে বিক্রি করে। ভালো দাম পাওয়ায় চাষিরাও অনেক খুশি।
পাট বিক্রেতা কাইয়ুম খান বলেন, ৪ মণ পাট বিক্রি করেছি। প্রতি মণ পাটের দাম পেয়েছি ২৮০০ টাকা করে। ৪ মণ পাটের দাম ১১ হাজার ২০০ টাকা পেয়েছি।
আরেক বিক্রেতা জিলাল শেখ বলেন, হরিণবাড়িয়া হাটে আমি ২ হাজার ৯০০ টাকা প্রতি মণ দরে ১০ মণ পাট ২৯ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এ দাম পেয়ে আমি খুশি। রাজবাড়ী জেলার এ পাটগুলো ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাগুড়াসহ বিভিন্ন জেলার পাটের মিলে চলে যায়।
হরিণবাড়িয়া হাট বণিক সমিতির সদস্য জামাল মোল্লা জানান, এ মৌসুমে প্রায় ২ মাস ধরে হরিণবাড়িয়ার হাটে চলে পাট কেনা বেচা। ৪টি গ্রেডে ভাগ করে পাটের আকার ও মান ভেদে পাটের দাম নির্ধারিত করা হয়। বর্তমানে ২ হাজার ৫০০ থেকে ৩ হাজার ৫০ টাকা পর্যন্ত প্রতি মণ পাট কেনা বেচা হচ্ছে।
হরিণবাড়িয়া হাট বণিক সমিতির সভাপতি খন্দকার মোকলেছুর রহমান জানান, কালুখালী উপজেলা হরিণবাড়িয়া এ হাটটি দীর্ঘদিনের। এ হাটে বর্তমান সময়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০০ মণ পাট কেনা বেচা চলছে। অর্থনৈতিক হিসেব করলে প্রতিদিন প্রায় ১২ থেকে ১৫ লাখ টাকার পাট আমরা ক্রয় করে থাকি। ২ মাসের হিসেবে যা প্রায় ১০ কোটি টাকার বেশি।
রাজবাড়ী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক এস. এম সহীদ নূর আকবর জানান, চলতি বছর রাজবাড়ীতে ৪৯ হাজার ৮২২ হেক্টর জমিতে উচ্চফলনশীল পাটের চাষাবাদ হয়েছে। ইতোমধ্যে পাট চাষিরা পাট কেটে জাগ দিয়ে পাটের আঁশ ছাড়িয়ে রোদে শুকিয়ে তা বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করছেন। জেলায় চলতি বছর হেক্টর প্রতি উৎপাদন হয়েছে ৫৬ মণ পাট। সে হিসেবে ৪৯ হাজার ৮২২ হেক্টরে পাট উৎপাদন হয়েছে ২৮ লাখ ৫ হাজার ৬০০ মণ বা ১ লাখ ১২ হাজার ২২৪ মেট্রিক টন। উৎপাদিত পাটের হিসেবকে যদি বেল্ট হিসেবে ধরা হয় তাহলে এবার রাজবাড়ী জেলায় ৬ লাখ ২০ হাজার ২২ বেল্ট ( ১৮১ কেজিতে ১ বেল্ট) পাট উৎপাদিত হয়েছে। যার আর্থিক মূল্য ৭ শত ৫৭ কোটি ৫১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রাজবাড়ীতে পাট চাষ উৎপাদন বাড়াতে নিয়মিত চাষিদের প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।