ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আবর্জনা গিলছে খাল

আবর্জনা গিলছে খাল

লক্ষীপুরের রায়পুর উপজেলার ডাকাতিয়া নদীর চরবংশী বাজার খালের পাড় দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অনেক অবৈধ স্থাপনা। খালে ময়লা-আবর্জনা ফেলে খাল দখল, ময়লার দুর্গন্ধের কারণে পরিবেশ দূষণে কবলে পরিণত হয়েছে।

এতে খাল ভরাট হয়ে পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়ে খালের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। এ খাল দিয়ে বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়। তবে, দখল-দূষণে পানি নিষ্কাশনের এ পথ বন্ধ হয়ে পড়ায় চরমোহনা, উত্তর ও দক্ষিণ চরবংশী ইউনিয়ন প্লাবিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, রায়পুর উপজেলার প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র পৌর শহরের সঙ্গে বংশী বাজারের ডাকাতিয়া নদীর মোহনার খালের পাড়ে গড়ে তোলা হয়েছে অনেকগুলো অবৈধ স্থাপনা।

এতে পানিপ্রবাহে বাধার সৃষ্টি হচ্ছে। এ ছাড়া খালে বাজারের বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। খাল থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। খালটি দখল হওয়া অংশ উদ্ধারে দ্রæত পদক্ষেপ না নিলে এর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয়রা জানায়, বর্জ্য ফেলার কারণে খালের পানি দূষিত হয়ে পড়েছে। অথচ বোরো মৌসুমে এ খালের পানি দিয়ে অন্তত দু’টি ইউনিয়নের ২০০ একর জমিতে সেচ দেওয়া হয়। খালটি দখল ও ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে বর্ষায় বৃষ্টির পানি ঠিকমতো নামতে পারে না। এতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় প্রায় ২৫টি গ্রামে।

বংশী বাজারের বাসিন্দা জাফর ও বেলায়েত বলেন, খালটি ভরাট ও দখল হয়ে যাওয়ায় গত বছর ২৫টি গ্রামে বন্যা দেখা দেয়। খালের জায়গা দখল করে বাড়িঘর কাপড়-জুতার দোকান, সেলুন, ফার্নিচার, ফাস্টফুড ও মাংসের দোকান করা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে।

বংশী বাজার কমিটির সভাপতি ডা. মনি আহম্মেদ বলেন, বংশী ষ্টিল ব্রিজের সামনের এলাকা থেকে সড়কের আধা কিলোমিটার পর্যন্ত অংশে সবচেয়ে বেশি দখল ও দূষণ হয়েছে। খালের এক পাড়ের ওপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘর গড়ে উঠেছে। বাজার এলাকায় খালের অংশে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনার কারণে খালটি ছোট হয়ে আসছে। এ কারণে উজান থেকে নেমে আসা পানি এ খালের অংশ দিয়ে ডাকাতিয়া নদীতে বৃষ্টি ও ঢলের পানি প্রবাহিত হতে বাঁধা সৃষ্টি হচ্ছে ।

চরবংশী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন বলেন, মোহনা খালটি দখল আর দূষণে পানি নিস্কাশনের পথ বন্ধ প্রায়। খালের অস্তিত্ব হুমকির মুখে রয়েছে। খাল দখল করে গড়ে তোলা দোকান পাটগুলো উচ্ছেদ না করলে খনন করে কোনো লাভ হবে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার অঞ্জন দাস বলেন, খালটি দখল ও দূষণমুক্ত করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সক্রিয় অংশগ্রহণ লাগবে। কারণ, পানি প্রবাহের রাস্তা তৈরি করতে হবে। তবে নদী-খাল দখলে নূন্যতম ছাড় দেয়া হবে না।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন