ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি ১৯৮ কোটি ডলার

জুলাইয়ে বাণিজ্য ঘাটতি ১৯৮ কোটি ডলার

আমদানির সঙ্গে সামঞ্জস্য নেই রপ্তানির। আমদানি বাড়লেও তাল মিলিয়ে রপ্তানি বাড়ছে না। ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি আকার বড় হচ্ছে। গত অর্থবছরের (২০২১-২০২২) জুলাই মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছর (২০২২-২০২৩) একই সময়ে বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ১৯৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। দেশীয় মুদ্রায় (এক ডলার সমান ৯৫ টাকা ধরে) দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৮১৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। গতকাল রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যালান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বহির্বিশ্বের সঙ্গে দেশের বাণিজ্য ঘাটতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৮১ মিলিয়ন ডলার বা ১৯৮ কোটি ১০ লাখ ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এই ঘাটতি ছিলো ১ হাজার ৩৫৩ মিলিয়ন বা ১৩৫ কোটি ৩০ লাখ ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরের জুলাই মাসের চেয়ে চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে বাণিজ্য ঘাটতি বাড়ে ৬২ কোটি ৮০ লাখ ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় দাঁড়ায় ৫ হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা।

বাণিজ্য ঘাটতি প্রসঙ্গে খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পণ্য আর সেবার আমদানি ব্যয়ের বিপরীতে রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সের জোগান সেভাবে বাড়ছে না। আমদানির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পাচ্ছে না রপ্তানি। এই কারণে বাণিজ্য ঘাটতির হার বাড়ছে।

এদিকে, ২০২১-২০২২ অর্থবছর শেষে ৩৩ বিলিয়ন ডলার ছাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি। যা আগের ২০২০-২১ অর্থবছরের ঘাটতি রেকর্ডকে হার মানায়। একই অর্থবছরে দেশের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে রেকর্ড সাড়ে ১৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি বাণিজ্য ঘাটতি হয়েছিলো। আমদানি পণ্যের পরিমাণ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অতিমাত্রায় ব্যয় বাড়ার কারণে অর্থবছর শেষে বাণিজ্য ঘাটতির চাপে পড়ে দেশ।

তথ্য মতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় ২৮ কোটি ৩০ লাখ ডলারে। গত বছরের একই সময়ে (২০২১ সালের আগস্ট) এ ঘাটতি ছিল ৭ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সেবা খাতের বাণিজ্য ঘাটতি পরিমাপ করা হয় মূলত বিমা ও ভ্রমণ ইত্যাদি খাতের আয়-ব্যয় হিসাব করে। আমদানি বাড়ায় বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যে বা কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ব্যালান্স ঘাটতিও বেড়েছে। অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এ সূচক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩২ কোটি ১০ লাখ ডলারে। গত অর্থবছরের একই সময়ে যা ছিল ২৯ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

অর্থনীতির সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় রয়েছে রেমিট্যান্স। চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ২০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। যা গত ২০২১-২০২২ অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ১৮৭ কোটি ডলার। এহিসাবে চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে প্রবাসী আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ শতাংশ।

সামগ্রিক লেনদেন ভারসাম্যেও ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। চলতি অর্থবছরের জুলাই শেষে সামগ্রিক ঘাটতি দাঁড়ায় ১০৮ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৩১ কোটি ডলার। এ অর্থবছরের জুলাই মাসে বৈদেশিক বিনিয়োগ বেড়েছে ৩০ শতাংশ। এসময়ে বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ এসেছে ৩৯ কোটি ডলার, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ৩০ কোটি ডলার।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন