প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চারদিনের সরকারি সফরে আগামী ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে সফর করবেন। তার সফর ঘিরে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক অর্থনীতি, বাণিজ্য, আন্তঃসীমান্ত নদী ও রাজনৈতিক বিষয়ে কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে বিশেষ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে দৈনিক আনন্দবাজারে। আজ চতুর্থ পর্ব- তালিকা বড় রপ্তানি কম।
বাংলাদেশের জন্মের সঙ্গেই প্রতিবেশী ভারতের সহযোগিতার হাত সুপ্রসন্ন। ভারতের সঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশের বাণিজ্য শুরু হয় মূলত ১৯৭২ সাল থেকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে ৩৪৮ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে শুরু হয় দ্বিপাক্ষক বাণিজ্য। সেই যে শুরু আর পেছনে তাকাতে হয়নি বাংলাদেশকে। পণ্য রপ্তানির বাণিজ্য দিন দিন বেড়েই চলেছে। যদিও আমদানির স্রোতও প্রবল।
২০১১ সালের নভেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং দক্ষিণ এশিয়ার স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য দেশটিতে স্পর্শকাতর পণ্যতালিকা ৪৮০টি থেকে কমিয়ে মাত্র ২৫টিতে নামিয়ে আনার ঘোষণা দেন। এতে কার্যত বাংলাদেশকে ভারতের বাজারে প্রায় শতভাগ শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়া হয়। অতিনিকট প্রতিবেশি হওয়ায় বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় ভারতে কম খরচে পণ্য রপ্তানি হওয়ার কথা। তবে তা আশানুরূপ হয়নি।
সূত্রমতে, গেল অর্থবছরে ভারতে আকরিক, স্ল্যাগ ও ছাই রপ্তানি করা হয়েছে ৯২ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৫.৩১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের। যে ছাইকে হেলা ফেলায় ফেলে দেয়া হয় সেটিও এখন ভারতে রপ্তানি করা পণ্য হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। মাছ কাটা থেকে শুরু করে নানান কাজে ছাইয়ের ব্যবহার থাকলেও এখন এটি বড় ধরনের বাজার তৈরি করে ফেলেছে। শুধু ছাই-ই নয় ভারতে আছে বাংলাদেশের সহস্রাধিক পণ্য রপ্তানির বাজার।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরো-ইপিবি) তথ্যমতে, ভারতে সহস্রাধিক আইটেমের পণ্য রপ্তানি করে থাকে বাংলাদেশ। তারমধ্যে আছে তৈরি পোশাক, হোম টেক্সটাইল, কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য, হিমায়িত খাদ্য, মাছ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, ফুটওয়্যার, কাঁচা পাট, পাটজাত পণ্য, প্লাস্টিক পণ্য ও বাইসাইকেল ইত্যাদিই বেশি।
ভারত বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৪০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি পণ্য আমদানি করেছিল। পরের অর্থবছরে শীর্ষ ১০ দেশ থেকেই আমদানি ছিল ৩৬১ বিলিয়ন ডলারের ওপরে। তবে বাংলাদেশ থেকে গত পাঁচ বছরে দেশটিতে রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ৩৭ গুণ। এই রপ্তানি থেকেও আমদানি ঘাটতির ঘানি আরো বেশি।
ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে রপ্তানি করেছে মোট ১০৯ কোটি ৬৩ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলারের পণ্য। ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছে ৫৭৯ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের পণ্য। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ভারত থেকে আমদানির পরিমাণ ছিল ৫৪৫ কোটি ২৯ হাজার ডলারের এবং বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয়েছিল ৬৮ লাখ ৯৬ হাজার ২০০ ডলারের।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর পরিসংখ্যান বিভাগের কর্মকর্তা জসিমউদ্দীন দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ভারতে অনেক পণ্যই রপ্তানি করা হয়ে থাকে। এটি বিভিন্ন বছর বিভিন্ন ধরনের হয়। গেল অর্থবছরে দুই শতাধিক পণ্য রপ্তানি হয়েছে।
ইপিবির তালিকা অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য রপ্তানিপণ্যের মধ্যে ৩ নম্বরে রয়েছে ১. মাছ, ২. ক্রাস্টেসিয়ান, ৩. মোলাস্ক, ৪. অন্যান্য জলজ অমেরুদণ্ডী প্রাণী। ৪নং পণ্যের মধ্যে দুগ্ধজাত পণ্য; ৫. পাখির ডিম, ৬. প্রাকৃতিক মধু, ৭. পশু উৎপত্তির ভোজ্যপণ্য। ৫ নং পণ্যের রয়েছে ৬. পশুর পণ্য। ৬নং পণ্যের রয়েছে ৭. জীবন্ত গাছ, ৮.অন্যান্য গাছপালা, ৯. বাল্ব, ১০. শিকড়, ১১. ফুল এবং আলংকারিক ১২.পাতা কাটা। ৮নং পণ্যের রয়েছে ১৩. ভোজ্য ফল, ১৪. বাদাম, ১৫. সাইট্রাস ফল বা তরমুজের খোসা। ৯ নং পণ্যের রয়েছে ১৫. কফি, ১৬. চা, ১৭. মশলা। ১০ নং পণ্যের রয়েছে ১৮. সিরিয়াল।
এছাড়া রপ্তানি করা পণ্যের ১১ নম্বরে রয়েছে মিলিং শিল্পের পণ্য; ১৯. মাল্ট স্টার্চ, ২০. ইনসুলিন, ২১. গম-ময়দার আঠা। ১২নং পণ্যের রয়েছে তেল বীজ এবং ২৩. অলিজিনাস ফল; ২২. বিবিধ শস্য, ২৩. বীজ এবং ফল, ২৪. শিল্প বা ঔষধি গাছ; ২৫. খড় এবং পশুখাদ্য। ১৫নং পণ্যের রয়েছে ২৬. প্রাণী বা উদ্ভিজ্জ চর্বি, ২৭. তেল, ২৮. প্রস্তুত ভোজ্য চর্বি, ২৯. পশু বা উদ্ভিজ্জ মোম। ১৭ নং পণ্যের রয়েছে ৩০. চিনি, ৩১. চিনি মিষ্টান্ন। ১৮ নং পণ্যের রয়েছে ৩২. কোকো এবং ৩৩. কোকো প্রস্তুতি। ১৯নং পণ্যের রয়েছে ৩৪. ময়দা, ৩৫. মাড় বা দুধের পণ্য। ২০নং পণ্যের রয়েছে ৩৬. শাকসবজি, ফল, বাদাম বা উদ্ভিদের অন্যান্য প্রস্তুত করা অংশ।
অন্যদিকে, ২১নং পণ্যের রয়েছে ৩৭. বিবিধ ভোজ্য প্রস্তুতি। ২২নং পণ্যের রয়েছে ৩৮. পানীয়, ৩৯. ভিনেগার। ২৩নং পণ্যের রয়েছে ৪০. খাদ্য শিল্পের অবশিষ্টাংশ, ৪১. বর্জ্যে প্রস্তুত পশুখাদ্য। ২৪নং পণ্যের রয়েছে ৪২. তামাক এবং উৎপাদিত তামাকের বিকল্প। ২৫নং পণ্যের রয়েছে ৪২. লবণ, ৪৩. সালফার, ৪৪. পাথর, ৪৫. প্লাস্টারিং উপকরণ, ৪৬. লির্ন, ৪৭. সিমেন্ট। ২৬ নং পণ্যের রয়েছে ৪৮. আকরিক, ৪৯. স্ল্যাগ, ৫০ ছাই। ২৭ নং পণ্যের রয়েছে ৫১. খনিজ জ্বালানি, ৫২. খনিজ তেল এবং তাদের পাতনের পণ্য; ৫৩. বিটুমিনাস পদার্থ, ৫৪. খনিজ মোম। ২৮নং পণ্যের রয়েছে অজৈব রাসায়নিক; ৫৫. মূল্যবান ধাতু, ৫৬. বিরল আর্থ ধাতু, ৫৭. তেজস্ক্রিয় উপাদান বা আইসোটোপের জৈব বা অজৈব যৌগ। ২৯নং পণ্যের রয়েছে ৫৮. জৈব রাসায়নিক। ৩০ নং পণ্যের রয়েছে ৫৯. ফার্মাসিউটিক্যাল পণ্য।
এদিকে, ৩২নং পণ্যের রয়েছে ৬০. ট্যানিং বা ডাইং নির্যাস, ৬১. ট্যানিন এবং তাদের ডেরিভেটিভস, ৬২. রঙ্গক এবং অন্যান্য রঙের বিষয়, ৬৩. পেইন্ট, ৬৪. বার্নিশ, ৬৫. পুটি ৬৬. অন্যান্য কালি। ৩৩ নং পণ্যের রয়েছে অপরিহার্য ৬৭. তেল এবং রেজিনয়েড, ৬৮. সুগন্ধি, ৬৯. প্রসাধনী বা টয়লেট প্রস্তুতি। ৩৪ নং পণ্যের রয়েছে ৭০. সাবান, ৭১. জৈব পৃষ্ঠের সক্রিয় এজেন্ট, ৭২. ওয়াশিং এবং লুব্রিকেটিং প্রস্তুতি, ৭৩. কৃত্রিম বা প্রস্তুত মোম, ৭৪. পলিশিং বা স্কোরিং প্রস্তুতি, ৭৫. মোমবাতি এবং অনুরূপ, ৭৬. মডেলিং পেস্ট, ৭৭. দাঁতের মোম। ৩৫ নং পণ্যের রয়েছে ৭৮. অ্যালবুমিনয়েডাল পদার্থ, ৭৯. পরিবর্তিত স্টার্চ, ৮০. আঠালো এনজাইম। ৩৮নং পণ্যের রয়েছে ৮১. বিবিধ রাসায়নিক পণ্য। ৩৯ নং পণ্যের রয়েছে ৮২. প্লাস্টিক এবং এর সামগ্রী। ৪০ নং পণ্যের রয়েছে ৮৩. রাবার এবং এর সামগ্রী।
তাছাড়া ৪১নং পণ্যের রয়েছে ৮৪. কাঁচা চামড়া, চামড়া (অন্যের পরে ফারস্কিন) এবং চামড়া। ৪২ নং পণ্যের রয়েছে ৮৫. স্যাডলারি, ৮৬. জোতা, ৮৭. ভ্রমণ পণ্য, ৮৮. হ্যান্ডব্যাগ। ৪৪ নং পণ্যের রয়েছে ৮৯. কাঠ, ৯০. কাঠের জিনিসপত্র, ৯১. কাঠের কাঠকয়লা। ৪৬ নং পণ্যের রয়েছে ৯২. খড়, ৯৩. প্লেটিং উপকরণ তৈরি, ৯৪. ঝুড়ি। ৪৮ নং পণ্যের রয়েছে ৯৫. কাগজ বা পেপারবোর্ড, ৯৬. কাগজের সজ্জা, ৯৭. কাগজ বা পেপারবোর্ড। ৪৯ নং পণ্যের রয়েছে ৯৮. মুদ্রণ শিল্পের মুদ্রিত বই, ৯৯. সংবাদপত্র, ১০০. ছবি এবং অন্যান্য পণ্য; পাণ্ডুলিপি, টাইপস্ক্রিপ্ট এবং পরিকল্পনা। ৫০ নং পণ্যের রয়েছে ১০১. সিল্ক।
এসব পণ্য ছাড়াও রয়েছে আরও গুরুত্বপূর্ণ রপ্তানিপণ্য। এক্ষেত্রে ৫১নং পণ্যের রয়েছে ১০২. উল, ১০৩. সূক্ষ্ম এবং মোটা পশুর চুল, ১০৪. ঘোড়ার চুলের সুতা এবং ১০৫. বোনা কাপড়। ৫২নং পণ্যের রয়েছে ১০৬. তুলা। ৫৩ নং পণ্যের রয়েছে ১০৭. উদ্ভিজ্জ টেক্সটাইল ফাইবার, ১০৮. কাগজের সুতা, ১০৯. কাগজের সুতার বোনা কাপড়। ৫৪নং পণ্যের রয়েছে ১১০. মনুষ্যসৃষ্ট ফিলামেন্ট। ৫৫ নং পণ্যের রয়েছে ১১১. মানবসৃষ্ট প্রধান তন্তু। ৫৬ নং পণ্যের রয়েছে ১১২. ওয়েডিং ফেল্টস, ১১৩. বিশেষ সুতা, ১১৪. সুতা, ১১৫. কর্ডেজ, ১১৬.দড়ি। ৫৭নং পণ্যের রয়েছে ১১৭. কার্পেট এবং অন্যান্য টেক্সটাইল মেঝে আচ্ছাদন। ৫৮নং পণ্যের রয়েছে ১১৮. বিশেষ বোনা কাপড়, ১১৯. জরি। ৫৯ নং পণ্যের রয়েছে ১২০. আচ্ছাদিত বা স্তরিত টেক্সটাইল কাপড়। ৬০নং পণ্যের রয়েছে ১২১. বোনা বা ক্রোশেটেড কাপড়।
আরও বহুবিধ পণ্য রয়েছে ভারতে রপ্তানিকরা পণ্য তালিকায়। এর মধ্যে ৬১ নং পণ্যের রয়েছে ১২২. পোশাক এবং পোশাক আনুষাঙ্গিক। ৬২ নং পণ্যের রয়েছে ১২৩. পোশাক এবং পোশাকের জিনিসপত্র, বোনা বা ক্রোশেটেড নয়। ৬৩ নং পণ্যের রয়েছে ১২৪. সেট জীর্ণ পোশাক এবং জীর্ণ টেক্সটাইল। ৬৪: নং পণ্যের রয়েছে ১২৫. জুতা, গাইটার। ৬৫ নং পণ্যের রয়েছে ১২৬. হেডগিয়ার এবং এর অংশ। ৬৬নং পণ্যের রয়েছে ১২৮. ছাতা, ১২৯. সূর্যের ছাতা, ১৩০. হাঁটার লাঠি, আসনের লাঠি, ১৩১. চাবুক। ৬৭ নং পণ্যের রয়েছে ১৩২. প্রস্তুত পালক, ১৩৩. কৃত্রিম ফুল। ৬৮নং পণ্যের রয়েছে ১৩৪. পাথর, ১৩৫. প্লাস্টার, সিমেন্ট। ৬৯নং পণ্যের রয়েছে ১৩৬. সিরামিক পণ্য। ৭০নং পণ্যের রয়েছে ১৩৭. কাচ এবং কাচের পাত্র।
তাছাড়া ৭২নং পণ্যের রয়েছে ১৩৮. লোহা, ১৩৯. ইস্পাত। ৭৪নং পণ্যের রয়েছে ১৪০. তামা এবং এর জিনিসপত্র। ৭৫নং পণ্যের রয়েছে ১৪১. নিকেল। ৭৬ নং পণ্যের রয়েছে ১৪২. অ্যালুমিনিয়াম এবং এর সামগ্রী। ৭৯ নং পণ্যের রয়েছে ১৪৩. দস্তা। ৮২নং পণ্যের রয়েছে ১৪৪. বেস ধাতুর সরঞ্জাম-সরঞ্জাম, ১৪৫. কাটলারি, ১৪৬. চামচ এবং কাঁটা। ৮৩নং পণ্যের রয়েছে ১৪৭. বেস মেটালের বিবিধ। ৮৪নং পণ্যের রয়েছে ১৪৭. পারমাণবিক চুল্লি, ১৪৮. বয়লার, ১৪৯. যন্ত্রপাতি। ৮৫নং পণ্যের রয়েছে ১৫০. বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং সরঞ্জাম, ১৫১. সাউন্ড রেকর্ডার এবং রিপ্রডিউসার, ১৫২. টেলিভিশন ইমেজ এবং সাউন্ড রেকর্ডার। ৮৬নং পণ্যের রয়েছে ১৫২. রেলওয়ে বা ট্রামওয়ে লোকোমোটিভ, ১৫৩. রোলিং-স্টক এবং এর অংশ, ১৫৪, রেলওয়ে বা ট্রামওয়ে ট্র্যাক ফিক্সচার এবং জিনিসপত্র এবং তার অংশ; যান্ত্রিক (ইলেক্ট্রো-মেকানিক্যালসহ) সব ধরণের ট্র্যাফিক সিগন্যালিং সরঞ্জাম। ৮৭নং পণ্যের রয়েছে ১৫৫. রেলওয়ে বা ট্রামওয়ে রোলিং-স্টক ব্যতীত অন্যান্য যানবাহন।
অন্যদিকে, ৯৪নং পণ্যের রয়েছে ১৫৬. আসবাবপত্র; বিছানাপত্র, গদি, গদি সমর্থন, কুশন এবং অনুরূপ স্টাফ গৃহসজ্জার সামগ্রী; বাতি এবং আলোর জিনিসপত্র। ৯০ নং পণ্যের রয়েছে ১৫৭. অপটিক্যাল, ১৫৮. ফটোগ্রাফিক, সিনেমাটোগ্রাফিক, পরিমাপ, পরীক্ষা, নির্ভুলতা, ১৫৯. চিকিৎসা বা অস্ত্রোপচারের যন্ত্রপাতি। ৯১ নং পণ্যের রয়েছে ১৫৯. ঘড়ি এবং ঘড়ির কিছু অংশ। ৯২ নং পণ্যের রয়েছে ১৬০ বাদ্যযন্ত্র। ৯৫ নং পণ্যের রয়েছে ১৬১. খেলনা, খেলা এবং খেলাধুলার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র; এর অংশ এবং আনুষাঙ্গিক। ১৬২. ৯৭ নং পণ্যের মধ্যে রয়েছে শিল্পকর্ম, সংগ্রাহকদের টুকরা এবং প্রাচীন জিনিসপত্র।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর-ইপিবি তথ্যমতে, ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে রপ্তানি হয় ৩৮৩ কোটি টাকা। ১৯৮৯-৮০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৭৪৯ কোটি টাকা। ১৯৮৯-৯০ সালে ১৫২৪ কোটি টাকা। ১৯৯৯-২০০০ সালে ৫৭৫২.২০ কোটি টাকা। ২০০৯-১০ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬২০৪.৬৫ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ সালে রপ্তানি হয় ৩৩৬৭৪.০৯ কোটি টাকা।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, ভারত সরকার নিজ দেশের ব্যবসায়ীদের দাবিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। তাদের স্থানীয় শিল্প-ব্যবসাকে সুরক্ষা দিতে কখনও বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে কাউন্টার ভেইলিং ডিউটি (সিভিডি) আরোপ করছে। আবার কখনও বা বিশেষ কোনো পণ্যে বসাচ্ছে আ্যান্টি ডাম্পিং ডিউটি। আগে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতেও সিভিডি আরোপ করলেও ২০১৪ সালে তা প্রত্যাহার করে নেয়। এখন পাটজাত পণ্যে এটি ধার্য আছে। এসব নানাবিধ কারণে ভারতের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে সুবিধাজনক অবস্থানে নেই বাংলাদেশ।
আনন্দবাজার/শহক