ভোলা জেলার বিভিন্ন উপজেলার চরে লবনাক্ত জমিতে উচ্চ মূল্য মানের ফসল চাষের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের আয় বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি শীর্ষক ভ্যালু চেইন উপ-প্রকল্পের আওতায় গ্রীষ্মকালীন বেবি তরমুজ চাষ করে ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে।
এ তরমুজ চাষের প্ররিচালনা করেন ভোলা গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা। পর্যায়ক্রমে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় লবনাক্ততা চরেও এ প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে বলে জানান সংস্থার চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মহিন। এর মধ্যে চরফ্যাশন উপজেলার শশিভূষণে কৃষকের উৎপাদিত তরমুজের বাজার জাতকরন শুরু হয়েছে।
কৃষক তারানা জানান, তিনি চলতি বর্ষায় পতিত লবনাক্ত ৩৩ শতাংশ জমিতে সর্জানে তরমুজ চাষ করেন। তার গাছে ২৫০০ তরমুজ বড় হয়েছে। প্রতিটি তরমুজ বিক্রি যোগ্য হয়েছে। বাকি গুলো এখনো একটু ছোট, সেখানেও প্রায় ১৫ থেকে ১৬শ তরমুজ হবে। প্রতিটি তরমুজের গড় ওজন ৩ থেকে ৫ কেজি। কৃষক ২৫০-৩৫০ টাকা দরে প্রতিটি তরমুজ স্থানীয় বাজারের পাইকারের কাছে বিক্রি করছেন। এ তরমুজ চাষ করতে সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৩৫ হাজার টাকা। মাত্র আড়াই মাসে তিনি প্রাথমিক ১ লাখ ১৫ হাজার টাকা তরমুজ বিক্রি করেছেন। আরো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রির আশা করছেন তিনি।
ভোলা গ্রামীন জন উন্নয়নের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন মহিন বলেন, কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে,ভালো থাকবো আমরা সবাই। এ আশা নিয়ে আমার গ্রামীণ জন উন্নয়ন সং¯’ার উদ্যোগে পিকেএসএফ এর সহযোগীতায় ভ্যলু চেইন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন উপ-প্রকল্প বাস্ত বায়নের সুযোগ পেয়েছি। ভোলার বিভিন্ন চরে পতিত লবনাক্ত (যে সব জমিতে ফসল হয়না) জমিতে বেবি তরমুজ চাষের জন্য বিভিন্ন কৃষককে বিনা শর্তে টাকা, বীজ, সার,ঔষধ দিয়ে কাজে লাগাই। তারা প্রথমে আগ্রহ না হলেও পরে গাছ ও ফলন দেখে খুশী এবং দাম ও লাভ পেয়ে আতœহারা। এখন লবনাক্ত পতিত জমি আর থাকবেনা, বেবি তরমুজ চাষে চাষিরা ব্যাপক উদ্যোগী হয়েছেন। সামনের দিকে চাষীদের মধ্যে বেবি তরমুজ বিপ্লব ঘটাবে বলে অমি আশা প্রকাশ করছি।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা (কৃষি) মিজানুর রহমান জানান, ভোলার লবনাক্ত জমি গুলোতে কোন প্রকার ফসল হতনা। তাই হাজার হাজার একর জমি পতিত থাকতো। কেউ কোন ফসল করতে উদ্যোগী হতোনা। বেবি তরমুজ চাষের জন্য ভোলার লবনাক্ত জমি বিশেষ উপযোগী। ভোলার গ্রামীণ জন উন্নয়ন সংস্থা পিকেএসএফ এর সহযোগীতায় উদ্যোগ নিয়ে পতিত লবনাক্ত জমিতে চাষীদের দিয়ে পরিক্ষা মুলক বেবি তরমুজ চাষ করে বিপ্লব ঘটিয়েছেন। চাষিরা যেমন অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, তেমনি পতিত জমি আবাদের আওতায় এসে জাতীয় অর্থনীতিতে যোগ হবেন বলে আমি আশা করছি।
আনন্দবাজার/শহক