প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে চারদিনের সরকারি সফরে আগামী ৫ থেকে ৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে সফর করবেন। তার সফর ঘিরে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। তারই অংশ হিসেবে দুদেশের দ্বিপাক্ষিক অর্থনীতি, বাণিজ্য, আন্তঃসীমান্ত নদী ও রাজনৈতিক বিষয়ে কূটনীতিক ও বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে বিশেষ কয়েকটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে দৈনিক আনন্দবাজারে। আজ দ্বিতীয় পর্ব- ত্রিপুরার বর্জ্যে ধুঁকছে তিতাস।
ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার স্যুয়ারেজ, শিল্প ও হাসপাতালের দূষিত বর্জ্যে ধ্বংস হচ্ছে তিতাস নদীর জীববৈচিত্র্য। মানুষের দেহে তৈরি হচ্ছে রোগব্যধি। দূষিত পানির প্রবাহ মেঘনাকে দূষিত করে ধেয়ে চলেছে বঙ্গোপসাগরে। তাছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জের রহিমপুর খালের বাঁধ কাটতে দিচ্ছে না দেশটি। এতে সেখানকার ৫টি ইউনিয়নের কৃষিকাজসহ মানুষজন বিপাকে পড়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে এসব বিষয়ে সুরাহা হোক বলে দাবি জানিয়েছে স্থানীয় জনগোষ্ঠী।
অবশ্য প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের আগেই রাজধানী নয়াদিল্লীতে গত ২৫ আগস্ট দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জয়েন্ট রিভার্স কমিশন- জেআরসি) মন্ত্রী পর্যায়ের ৩৮তম বৈঠক হয়েছে। ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শাখাওয়াৎ ও বাংলাদেশের পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুকের নেতৃত্বে বৈঠকে দু’দেশের অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। তবে মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকের দুদিন আগেই ২৩ আগস্ট সচিব আলোচনা হয়।
সূত্রমতে, জেআরসি বৈঠকে সিলেটের কুশিয়ারা নদীর বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর সফরে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যার আলোকে কুশিয়ারা নদীর পানি রহিমপুর খাল দিয়ে কৃষিকাজে ব্যবহার শুরু করার পর প্রতিদিন ফেনী নদীর ১.৮২ কিউসেক পানি দেবে ভারত। তাছাড়া ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকে ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে সরবরাহ করার বিষয়টিও নিশ্চিত হবে।
সূত্রমতে, ২০২১ সালের ৫ ও ৬ জানুয়ারি জেআরসির টেকনিক্যাল কমিটির দুদিন ব্যাপী ভার্চুয়াল বৈঠকে অভিন্ন ৬টি নদী খোয়াই, ধরলা, দুধকুমার, মনু, মুহুরী ও গোমতীর পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়। এছাড়া সেখানে গঙ্গা ও তিস্তার পানিবণ্টন, সীমান্তবর্তী নদীগুলোর তীরসুরক্ষা নিয়েও পর্যালোচনা হয়। তারও আগে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তাসহ অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে তাগিদ দেন। যে কারণে পরবর্তীতে জেআরসির টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠকে বিষয়গুলো পর্যালোচনা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সিএন্ডএফ কাস্টমস ক্লিয়ার এন্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট মো. মনির হোসেন বাবুল দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই ত্রিপুরার আগরতলা শহরের শিল্প, সুয়ারেজ ও হাসপাতালের দূষিত বর্জ্য আখাউড়ার কালন্দি খাল দিয়ে ঢুকে সাইনধারা ও তিতাস নদীর পানি নষ্ট করছে। এটি ১০ কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত। কালো বর্জ্য হয়ে খালে ঢুকে সেটি নদীতে গিয়ে লাল রং ধারণ করছে। এতে নষ্ট হচ্ছে নদীমাতৃক জীববৈচিত্র্য। কৃষি ফসল ফলানোতেও সমস্যার সৃষ্টি করছে। নো-ম্যান্সল্যান্ডসহ বিভিন্ন জায়গায় সভা, সেমিনার, মানববন্ধন করে দীর্ঘদিন যাবত আমরা দাবি জানিয়ে আসছি। কোনো সুরাহা হচ্ছে না।
মনির হোসেন বাবুল আরও বলেন, আখাউড়া স্থলবন্দর, নদীঘাটসহ নানা কারণে এ পথ দিয়ে এক থেকে দেড় হাজার মানুষ দুই দেশে যাতায়াত করে থাকে। এ জন্য ভারতীয় অংশে পানি শোধানাগার (ইটিপি) স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই। নদীতে মেশা বর্জ্যের কারণে চুলকানি, ঘা, ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয় জনসাধারণ। এবারের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে আশা করি ভালো একটি সমাধান আসবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-সহকারি প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, ভারতীয় এসব দূষিত পানি ও বর্জ্য কালন্দি খালে ঢুকছে। এসে মিলিত হচ্ছে তিতাস নদীতে, আর তিতাস পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলাকে ঘিরে বয়ে চলেছে। আবার মিশেছে মেঘনার সঙ্গে আর মেঘনা চলে গেছে বঙ্গোপসাগরে তাহলে বোঝা যাচ্ছে আমরা কী পরিমাণ ক্ষতির মুখে পড়েছি। এটি নিয়ে অনেকবার কথা হয়েছে। নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ভারত থেকে যদি এখানে পানি শোধানাগার (ইটিপি) না করা হয় তাহলে সমস্যার সমাধান হবে না।
পাউবো প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আরও বলেন, আমাদের জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে। জীবনমান ক্ষতি হচ্ছে। সার্বিকভাবে পরিবেশকে নষ্ট করছে। খালটি তিতাস, মেঘনা হয়ে বঙ্গোপসাগরকেও দূষিত করে ফেলবে কোনো এক সময়। ইতিমধ্যে তো তিতাসের পানি নষ্ট হয়েছে, মেঘনার পানিতেও ছড়াচ্ছে।
বিএসএফের বাধায় বন্ধ জকিগঞ্জ পাম্প হাউজ পাউবোর তথ্যমতে, সিলেটের জকিগঞ্জ থানার রহিমপুর খালটির পাম্প হাউজ ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের (বর্ডার গার্ড ফোর্সেস) বাধার কারণে ৬ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে। মাত্র ৫০ মিটার খনন করলেই এটি ব্যবহার করা যায়। তবে বিএসএফ এতে বাধা দিচ্ছে। অথচ এই অভিন্ন খাল থেকে ৪৯টি পাম্প দিয়ে পানি তুলে সেচ দিচ্ছে ভারত।
‘আপার সুরমা-কুশিয়ারা’ প্রকল্পের আওতায় জকিগঞ্জের রহিমপুর পাম্প হাউজ ও কুশিয়ার নদীর সঙ্গে সংযোগকারী ইনটেল চ্যানেল অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রকল্পটি ২০০১-০২ থেকে শুরু হয়ে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে শেষ হয়। এতে খাল পুনর্খনন, বাঁধ নির্মাণ করা হয়। প্রকল্পে পাম্প হাউজ স্থাপন, খাল পুনর্খনন ও বাঁধ নির্মাণ করা হলেও কুশিয়ারার সঙ্গে ইনটেক চ্যানেলের কাজ সম্পূর্ণরূপে সমাপ্ত করা যায়নি। ইনটেক চ্যানেলের ৪১০ দশমিক শূন্য মিটার দৈর্ঘের মধ্যে ৩২৫ মিটারের কাজ শেষ হয়েছে। বাকি ৮৫ মিটার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত হওয়ায় বাধা দিচ্ছে ভারত। ইনটেক চ্যানেল বাদ দিয়ে ৪ বছর আগে কাজ শেষ হয়।
ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রপোজাল-ডিপিপি অনুযায়ী, প্রকল্পটির উদ্দেশ্য ছিল ৫৩ হাজার ৮২০ হেক্টর জমিতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন সুবিধাসহ ১০ হাজার ৬০০ হেক্টর এলাকাকে সেচ-সুবিধায় নিয়ে আসা। এজন্য বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ করা হয় ১৪৬ কিলোমিটার, ৪৮.৫০ কিলোমিটার নিষ্কাশন খাল ও ৩৯.৫০ কিলোমিটার সেচ খাল খনন। প্রকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন সুবিধা পেলেও সেচ সুবিধা সম্পন্ন করা যায়নি। ৩৯.৫০ কিলোমিটার খাল খননের মাধ্যমে ৫ হাজার ৬০০ হেক্টর এলাকা সেচ-সুবিধা পেলেও পাম্প হাউজের মাধ্যমে আরো ৫ হাজার হেক্টর এলাকা সেচ সুবিধায় আনা যেত। ২০১০ সালের ১৯ জুন পাম্প হাউজের কাজ শুরু হলেও বিএসএফের বাধায় তা করা যাচ্ছে না।
আগাম বন্যা থেকে আউশ ফসল বাঁচানো, নিশ্চিন্তে বোরো উৎপাদনসহ জলবায়ুর প্রভাব থেকে ফসল সুরক্ষার লক্ষ্যে ‘আপার সুরমা কুশিয়ারা’ মহাপ্রকল্পের অধীনে প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে পাউবো সিলেটের জকিগঞ্জে প্রকল্পটি শুরু করে। ইতোমধ্যে ৪টি পাম্প বসানো হয়েছে, চীন থেকে আনা হয়েছে সব যন্ত্রপাতি। পাম্প হাউসটি তৈরি হয়েছে ৪০ ফুট মাটির নিচে। ৪টি পাম্পের মাধ্যমে প্রায় সাড়ে ২৫০ কিউসেক পানি উত্তোলন করবে রহিমপুরী খালে। প্রকল্পের কাজ শেষ হলে খালের পানি দিয়ে জকিগঞ্জে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমি চাষ করা সম্ভব। পর্যায়ক্রমে তা বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জসহ সিলেটের বেশ কয়েকটি উপজেলা লাভবান হবে।
স্থানীয়রা জানান, সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার বারঠাকুরী ইউনিয়নের রহিমপুর খালের শরীফগঞ্জ বাজারের কাছে নির্মিত বাঁধটি এলাকার চাষিদের গলারকাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শরীফগঞ্জ বাজার থেকে সুলতানপুর ইউনিয়নের তিরাশী গ্রাম পর্যন্ত সাত কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি ঐ বাঁধের কারণে পানিশূন্য হয়ে পড়েছে। মরতে বসেছে খালটি এবং সংশ্লিষ্ট পাঁচ ইউনিয়নের চাষাবাদযোগ্য ভূমিও মরুভূমিতে রূপ নিচ্ছে। এক সময় খুবই গভীর এই খালে সারাবছর পানি থাকতো এবং পাওয়া যেত প্রচুর মাছ। এখন সেই অবস্থা আর নেই। সামান্য পানি থাকে খালে। তাছাড়া পুরো খালটি কচুরিপানায় ভরা। এ কারণে উপজেলার সুলতানপুর, বারঠাকুরী, কসকনকপুর, কাজলশাহ, মানিকপুর ও জকিগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দেড় শতাধিক গ্রামের জমিতে চাষাবাদ ব্যাহৃত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কুশিয়ারা বাংলাদেশ-ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির উৎস বরাক বা বরবক্র নদী। যারর উৎপত্তি স্থল মণিপুরের উত্তরে আঙ্গামীনাগা পাহাড়। সেই পাহাড় হতে বরাক নদী উৎপন্ন হয়ে মণিপুর হয়ে কাছাড় জেলা ভেদ করে বদপুর দিয়ে সিলেটে প্রবেশ করেছে। সিলেটের সীমান্তস্থিত অমলসিদ স্থান থেকে দুই শাখায় দুই ভিন্ন নামে প্রবাহিত হচ্ছে। যার একটি হচ্ছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক নদী সুরমা, অপরটির নাম কুশিয়ারা। কুশিয়ারা নদীর দৈর্ঘ্য ১২০ মাইল। এটি উৎপত্তিস্থল থেকে দক্ষিণ দিকে পশ্চিমাভিমুখে সিলেট কাছাড় সীমান্ত হয়ে মেঘনা নদীর উৎস স্থলে পতিত হয়েছে।
সিলেটের জকিগঞ্জ উপজেলার পাউবোর উপ-সহকারী প্রকৌশল শাখার কর্মকর্তা মো. মাহফুজুর রহমান ভূঁইয়া দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, জকিগঞ্জের এই প্রকল্পটি ২০১৬ সালে কিছু কাজ বাকি রেখে সমাপ্ত হয়ে আছে। ভারতের বাধার কারণে আমরা বাকি কাজ করতে পারছি না। প্রকল্পটির ব্যাপারে আড়াই মাস আগে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা বিষয়টি তদারকি করছে। বিষয়টি যতদ্রুত সুরাহা হবে তাতে উভয়ের জন্যই কল্যাণকর।
সিলেট পওর উপ-বিভাগ-১, বাপাউবো, সিলেটের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এ. কে. এম. নিলয় পাশা দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, দীর্ঘ ৬ বছর যাবত পাম্প হাউজটি চালু করতে কী কী পদক্ষেপ নিতে হবে, কত টাকা ব্যয় হবে তা নিয়ে কমিটি কাজ করছে। তাছাড়া এখানে পলি পড়ে গেছে। আমরা বাঁধটি তৈরি করলেও ভারতের বাধার কারণে সেটি করা যাচ্ছে না। কাজ করতে গেলেই একটি যুদ্ধেংদেহী অবস্থার সৃষ্টি হয়। এখানকার সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় জনগণ এটি চালু করতে দাবি জানিয়ে আসছে।
পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অবসর) জাহিদ ফারুক দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, জকিগঞ্জে বিএসএফ ২০টি পয়েন্টে বাধা সৃষ্টি করছে। এসব বিষয় সুরাহায় আলোচনা হবে। তাছাড়া আখাউড়ার কালন্দি খালে পানি শোধানাগার (ইটিপি) স্থাপনের বিষয়ে আলোচনা হবে। মন্ত্রী আরও বলেন, তিস্তানদীর ড্রেজিং নিয়েও কথা হবে। কারণ এটি ড্রেজিং করতে দরপত্র চালু আছে। সেখানে ভারত ও চীন আগ্রহ দেখিয়েছে। ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার কোটি টাকা। ড্রেজিংয়ে বেশকিছু সমস্যাও আছে।
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সাদাত দৈনিক আনন্দবাজারকে বলেন, আখাউড়া অঞ্চলে ভারতীয় শিল্প, স্যুয়ারেজ ও হাসপাতাল বর্জ্যের কারণে কী ধরনের ক্ষতি হচ্ছে তা নিয়ে একটি গবেষণা ও তথ্য থাকা দরকার। সার্বিকভাবে কথা বলে তেমন কোনো উপকারে আসে না। এই সমস্যা নিয়ে জোর দাবি উত্থাপন করতে হলে গবেষণা দরকার। আন্তঃনদী আইন ও আন্ত্রঃসীমান্ত নদী নিয়েও আইন আছে। সেসব নদীর পানি ও অন্যান্য বিষয় ব্যবহার ও উপভোগের কথাও বলা আছে।
অধ্যাপক ড. এ এইচ এম সাদাত আরও বলেন, দেখা যায় শিল্প-কারখানা বা অন্যান্য অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি অংশ মালিক, শ্রমিক ভোগ করে কিন্তু এর ক্ষতিকর দিকটি ভোগ করে সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি গোষ্ঠী। যদিও বৈদেশি রপ্তানির হিসেব জিডিপিতে যুক্ত হয়। ধরুন, পানি ও পরিবেশ দূষিত হচ্ছে এ কারণে নদীকেন্দ্রীক জীবনধারার সঙ্গে যারা জড়িত তারা কিন্তু ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের জীবন-জীবিকায় আঘাত আসছে। এটি পরিবেশগত অবিচার। এক্ষেত্রে সঠিক তথ্য উপাত্ত না থাকলেও দাবি আদায়ে জোর থাকে না।
আনন্দবাজার/শহক