দাম ঠিক করবে বাজার
–গভর্নর
চলমান ডলারের সংকট শিগগিরই শেষ হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্টের (বিআইবিএম) বার্ষিক ব্যাংকিং কনফারেন্স ২০২২-এ তিনি এ তথ্য দেন।
এসময় গভর্নর বলেন, ডলার সংকট একটি জটিল সমস্যা। আমাদের সকলকে ধৈর্য্য ধরতে হবে। বর্তমানে আমরা যে মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হচ্ছি তা আমদানি-প্ররোচিত। ডলারের দাম স্বল্পমেয়াদী প্রবাহ, রেমিট্যন্স ও রপ্তানি এবং বহিঃপ্রবাহ ও আমদানির ওপর নির্ভর করে। সবকিছুর মধ্যে ভারসাম্য থাকলে দাম স্থিতিশীল থাকে। এ জন্য বাজার দরের ভিত্তিতে ডলার রেট নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হবে। দুই-তিন মাস পর এ বিষয়ে আরও কিছু বলা সম্ভব হবে।
ফোরেক্স মার্কেট থেকে বেশ কয়েকটি ব্যাংকের উচ্চ মুনাফা করার বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংক তদন্ত করছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, মুনাফা অর্জনকারী ব্যাংক এবং মুনাফা অর্জনকারী ব্যবসার মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তাদের (ব্যাংক) অনেক দায়িত্ব এবং নিয়ম মেনে চলতে হবে।
দেশের ব্যাংকিং খাত সম্পর্কে আবদুর রউফ তালুকদার বলেন, অবস্থা দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। কোভিড-১৯ এর প্রভাব এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এ খাত একটি জটিল পরিবেশে নতুন চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য ‘টেকসই ব্যাংকিংকে উৎসাহিত করা এই পরিস্থিতিতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সেইসাথে প্রযুক্তির ব্যবহারও প্রয়োজন। প্রযুক্তির বিবর্তনের সাথে, সমগ্র খাতেরই একটি বিশাল রূপান্তর ঘটেছে যেখানে অর্থ লেনদেনের পদ্ধতি এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে এসেছে আমূল পরিবর্তন।
এসময় গভর্নর পরামর্শ দিয়ে বলেন, ব্যাংকগুলোকে তাদের সুনাম বজায় রাখতে এবং গ্রাহক, বিনিয়োগকারী এবং নিয়ন্ত্রকদের আস্থা অর্জনের জন্য একটি ভালো কমপ্লায়েন্স সংস্কৃতি দেখানো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভালো কমপ্লায়েন্স কালচার আরও ভালোভাবে সাংগঠনিক এবং ব্যক্তিগত ঝুঁকি কভার করে ব্যাংকগুলোকে বিভিন্ন উপায়ে উপকৃত করতে পারে। এছাড়া, কর্মীদের কাজের সময় আত্মবিশ্বাসী করে তোলা এবং তাদের কাজে স্বচ্ছতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে এই কালচার।
সম্প্রতি দেশের বাজারে ডলার সংকট দেখা দেয়। আমদানি খরচ বেড়ে যাওয়ায় এই পরিস্থিতির তৈরি হয়। অন্যদিকে কমে যায় টাকার মান। ডলারের দাম সবশেষ বাংলাদেশ ব্যাংক ৯৫ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও খুচরা বাজারে ১২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
ডলার সংকট কাটাতে একের পর এক উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়। মানি চেঞ্জার প্রতিষ্ঠানের লেনদেন বন্ধ করে দেওয়ারও ঘটনা ঘটেছে। একাধিক বেসরকারি ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে দায়িত্ব থেকে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও ডলার কারসাজি রোধে একের পর এক অভিযান চালিয়েছে। এখনো বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি চলমান রয়েছে।
আনন্দবাজারে/শহক