- সড়ক অবরোধ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের বাসিন্দাদের নিরবচ্ছিন্ন পানি-বিদ্যুতের সরবরাহের দাবিতে সড়ক অবরোধ, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় নারী-পুরুষসহ প্রায় ২শ’ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেছে বলে জানিয়েছেন সীতাকুণ্ড থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুমন।
তিনি বলেন, ‘জঙ্গল সলিমপুরের বাসিন্দারা পানি-বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরসহ সীতাকুণ্ড থানায় ৬টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ১৫০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে মামলার আসামি করা হয়েছে।’
এর আগে, গত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত নগরের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ অবরোধ করে রাখে তারা। এসময় ওই সড়ক দিয়েও যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। তাদের দাবি— পানি-বিদ্যুতের সংযোগ দিতে হবে এবং উচ্ছেদের আগে পুনর্বাসন করতে হবে। এরপর ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ লিংক রোড ও ফৌজদারহাট-বন্দর সড়কের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রাখে। এ সময় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বারবার তাদের সঙ্গে কথা বলে শান্ত করার চেষ্টা করেন। পুনর্বাসনের আশ্বাস দিয়ে তাদের ফিরে যেতে বারবার অনুরোধ করলেও তাতে কর্ণপাত করছিলেন না অবরোধকারীরা।
অন্যদিকে যানজটে আটকা পড়ে অবর্ণনীয় দুর্দশায় পড়েন হাজার-হাজার মানুষ। এক পর্যায়ে বিকেল ৫টার দিকে স্থানীয়রা এসে অবরোধকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করতে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গেও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তারা। এরপর স্থানীয়দের ধাওয়ায় বায়েজিদ সড়কের ১ নম্বর ব্রিজের উপর অবস্থান নেয় অবরোধকারীরা। সেখান থেকে পাথর ছুড়তে থাকে সড়কে। পাথরের আঘাতে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন এবং ১২টি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর কিছুক্ষণ উভয়পক্ষে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলে। এক পর্যায়ে স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ এগিয়ে এলে অবরোধকারীরা জঙ্গল সলিমপুরের দিকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
প্রসঙ্গত, কারাগার স্থানান্তরসহ সরকারি মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সীতাকুণ্ডের জঙ্গল সলিমপুরের আলীনগরে সরকারি পাহাড় দখল করে গড়ে তোলা অবৈধ বসতি ও স্থাপনা উচ্ছেদ শুরু করে জেলা প্রশাসন। কয়েকদফা চালানো অভিযানে দুই শতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় বিদ্যুৎ সংযোগ। তবে প্রথমদিনেই উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। তারা উচ্ছেদে বাধা দেয়ার পাশাপাশি সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের চেষ্টা করে।
জঙ্গল সলিমপুরের বাসিন্দাদের দাবি— ওই এলাকার দুই অংশ ছিন্নমূল ও আলীনগরের সব বাসিন্দাকে সরকারি খাস জমি স্থায়ী বন্দোবস্ত দিয়ে সেখানে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হবে। তবে প্রশাসন বলছে, প্রকৃত ভূমিহীনদেরই শুধু পুনর্বাসন করা হবে।