- এক্সচেঞ্জগুলোতে দেড় টাকার বেশি মুনাফা নয়
কেনা দামের চেয়ে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করতে পারবে মানি এক্সচেঞ্জগুলো। বিক্রির সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল বুধবার মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেই কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করেন ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল।
এখন থেকে মানি এক্সচেঞ্জগুলো যে দামে ডলার কিনবে, তার চেয়ে ১ থেকে সর্বোচ্চ দেড় টাকা বেশি দামে ডলার বিক্রি করতে পারবে। এর বেশি মুনাফা করতে পারবে না। এরই মধ্যে বিষয়টি মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশনকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডলারের খোলাবাজার স্থিতিশীল করতে এ সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, এবিবি ও বাফেদার সঙ্গে মিটিং করে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেটা হলো- ব্যাংকগুলো যে দামে রেমিট্যান্স ও রপ্তানি বিল আনবে তার থেকে সর্বোচ্চ এক টাকা বেশি দরে ডলার বিক্রি করবে। এ ব্যাপারে নীতিগত একটা সিদ্ধান্ত হয়েছে। মানি এক্সচেঞ্জ অ্যাসোসিয়েশন সঙ্গে মিটিং করে একই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংকের এভারেজ রেট থেকে তারা এক টাকা বাড়তি দামে ডলার কিনবে। পরবর্তী সময়ে বিক্রির ক্ষেত্রে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো সর্বোচ্চ এক থেকে দেড় টাকা পর্যন্ত মুনাফা করতে পারবে।
আমদানি ব্যয় বৃদ্ধিতে বেড়েছে ডলারের চাহিদা। রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় দেখা দিয়েছে বাণিজ্য ঘাটতি। এদিকে বিগত সময়ের তুলনায় কমেছে প্রবাসী আয়। এতে দেখা দিয়েছে ডলার সংকট। এই সুযোগে কারসাজিতে জড়িয়ে পড়ছেন এক শ্রেণির অসাধু ডলার ব্যবসায়ী। ইচ্ছেমতো মূল্য নির্ধারণ করে চলেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। এতে বাজার হয়ে উঠেছে অস্থিতিশীল। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলোকে বেঁধে দেয়া হয় ডলারে লাভে সীমা। এবার সেই সীমা বেঁধে দেওয়া হলো মানি এক্সচেঞ্জগুলোকে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার এক ডলার কিনতে গ্রাহকদের খরচ করতে হয়েছিল ১১৮ থেকে ১২০ টাকা। গ্রাহকরা তখন বলেছিলেন, ১২০ টাকায়ও ডলার পাওয়া যাচ্ছিলো না। এরপর গত রবিবার খোলা বাজারে নগদ ডলারের দাম ১১২ থেকে ১১৪ টাকায় নেমে আসে।
সাম্প্রতিক ডলারের বাজার নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শক দল মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানগুলোতে তদন্ত করে। তদন্তে বড় ধরনের অনিয়ম পাওয়ায় কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সব ধরনের ব্যবসায়িক কার্যক্রম স্থগিত করেছে। এছাড়া ডলার মজুত ও বেআইনিভাবে কেনাবেচার দায়ে আরও দুটি মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এমন পদক্ষেপে ডলারের সরবরাহ বাড়তে শুরু করে। বাড়তি মুনাফার আশায় যারা বেআইনিভাবে ডলার মজুত করেছিলেন, তারা এখন সেগুলো বিক্রি করতে শুরু করেছেন। ফলে ব্যাংক ও মানি চেঞ্জার্স প্রতিষ্ঠানগুলোয় ডলারের প্রবাহ বেড়ে গেছে। দামও কিছুটা কমে এসেছে।