- বগুড়ার ধুনটে সড়কে গাছের গুড়ি পেলে আবরোধ
- পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ
আমন ধান রোপণের পরে এখনো জমিতে সার দেইনি। তিন চারদিন ঘুরে দেখা মিলছে সারের, তাও আবার এক বস্তা বেশি দিচ্ছে না ডিলাররা। আমনের ভরা মৌসুমে সার সঙ্কট দেখা দিলে আমন আবাদে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা রয়েছে : সারের ক্রেতা মমিন ইসলাম
বগুড়ার ধুনটে ইউরিয়া সারের দাবিতে প্রায় একঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেছিল দুইশতাধিক কৃষক। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত কৃষকদের সার প্রাপ্তির বিষয়ে আশ^স্ত করলে অবরোধ তুলে নেয় কৃষকেরা। বুধবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অবরোধের ঘটনাটি ঘটে।
বুধবার সকাল থেকেই ধুনট উপজেলা খাদ্য গুদাম সংলগ্ন নির্ধারিত সারের ডিলার শামীমের গুদাম ঘরের সামনে সার নিতে উপস্থিত হতে থাকে সাধারণ কৃষকরা। সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে সরকার নির্ধারিত দামে সার বিতরণ করার প্রস্ততি নেয় ডিলার। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে প্রয়োজনমত সার না পেয়ে এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে কৃষকেরা ধুনট বগুড়া সড়ক অবরোধ করে। অবরোধ চলাকালে রাস্তায় গাছের গুড়ি ও বিক্ষোভ করতে থাকে। বিক্ষোভে অংশ নেয়া সামসুল নামে এক কৃষক জানান সকাল থেকে এসে দাঁড়িয়ে থেকেও সার পাচ্ছেন না তিনি। সার নিতে এসে কাড়াকাড়ি অবস্থা এবং প্রয়োজনমত সার না পাওয়ায় অনেকে বাধ্য হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। এ কারনে সাধারণ কৃষক রাস্তায় কাঠের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে চাহিদা অনুযায়ী সার দেওয়ার দাবি জানায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, খুচরা বাজারে সার পাওয়া গেলেও অতিরিক্ত দাম হওয়ায় ডিলারের দারস্থ হচ্ছেন কৃষকরা। ধুনটে ৫০ কেজির এক বস্তা ইউরিয়া সার ডিলারের কাছ থেকে সংগ্রহ করা যায় ১ হাজার ১শ টাকায়, খোলাবাজারে যা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৩শ টাকা দরে। একইভাবে এমওপি সারের বস্তা সরকার নির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকা হলেও খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪শ টাকা। টিএসপি সার ডিলার বিক্রি করছেন ১ হাজার ১শ টাকা দরে। এ সার আবার খোলাবাজারে বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৮শ টাকা দরে। ডিএপি সার ডিলারের কাছে পাওয়া যায় ৮শ টাকায়, খোলাবাজারে যা কিনতে কৃষকদের গুণতে হচ্ছে ১ হাজার ১শ টাকা পর্যন্ত।
সার নিতে আসা মমিন ইসলাম বলেন, আমন ধান রোপণের পরে এখনো জমিতে সার দেইনি। তিন চারদিন ঘুরে দেখা মিলছে সারের, তাও আবার এক বস্তা বেশি দিচ্ছে না ডিলাররা। আমনের ভরা মৌসুমে সার সঙ্কট দেখা দিলে আমন আবাদে বিরূপ প্রভাবের শঙ্কা করছেন তিনি।
এরকম পরিস্থিতিতে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত ও ধুনট থানা অফিসার ইনচার্জ কৃপা সিন্ধু বালা’র উপস্থিতিতে সাধারণ কৃষকদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার মহন্ত জানান, ইউরিয়া সারের সংকট নেই। আতংকের কারণে কৃষকেরা অতিরিক্ত সার সংগ্রহের জন্য আসছে। ফলে নির্ধারিত ডিলারের কাছে সরকার নির্ধারিত মূল্যে সার নিতে সাময়িকভাবে দীর্ঘলাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। তবে আরো বরাদ্দের কথা জানিয়েছে এ উপজেলার জন্য।