ঢাকা | শনিবার
২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনাকালে বাল্যবিয়ের ধুম

করোনাকালে বাল্যবিয়ের ধুম
  • বার্ষিক পরীক্ষা দেয়নি ৫ লাখ শিক্ষার্থী
  • তথ্য দেয়নি সাড়ে ৮ হাজার প্রতিষ্ঠান

করোনা মহামারিতে দেড় বছরের বেশি সময় বন্ধ ছিল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খাতটি হচ্ছে শিক্ষা। শুধু ২০২১ সালে দেশের ১১ হাজার ৬৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে বাল্যবিয়ে হয়েছে ৪৭ হাজার ৪১৪ জনের। জীবন বাঁচাতে শিশুশ্রমে যুক্ত হয়েছে ৭৭ হাজার ৭০৬ জন। গতকাল সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন উইংয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

প্রতিবেদনের জন্য দেশের ১১ হাজার ৬৭৯টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২১ সালের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। বর্তমানে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে মোট মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে ২০ হাজার ২৯৪টি। সেই হিসাবে তথ্য পাঠায়নি ৮ হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ১১ হাজার ৬৭৯টি প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৬৫ লাখ ৫৬ হাজার ৫৩৬ জন। এর মধ্যে বালক ২৯ লাখ ৬২ হাজার ৪৬ জন এবং বালিকা ৩৫ লাখ ৯৪ হাজার ৪৯১ জন। ২০২১ সালে মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬ লাখ ৪৯ হাজার ৫৩৮ জন। এর মধ্যে বালক ৩০ লাখ ২১ হাজার ২৩৩ জন এবং বালিকা ৩৬ লাখ ২৮ হাজার ৩০৫ জন। প্রাপ্ত তথ্যে কোভিড-১৯ অতিমারির মধ্যে ২০২০ সালের তুলানায় মোট শিক্ষার্থী বেড়েছে ৯৩ হাজার ২ জন।

এতে বলা হয়, ২০২১ সালের বার্ষিক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে ৬১ লাখ ৬৮ হাজার ৪৮৩ জন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে বালক ২৮ লাখ ৫ হাজার ৭৯১ জন এবং বালিকা ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৯২ জন। পরীক্ষায় অনুপস্থিত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৫ জন, যা মোট শিক্ষার্থীর ৭ দশমিক ২৩ শতাংশ। তথ্য অনুযায়ী, বাল্যবিয়ের কারণে ৪৭ হাজার ৪১৪ জন পরীক্ষায় অনুপস্থিত, শিশুশ্রমে যুক্ত হওয়ার কারণে পরীক্ষায় অংশ নেয়নি ৭৭ হাজার ৭০৬ জন এবং অন্যান্য কারণে অংশ নেয়নি ৩ লাখ ৫৫ হাজার ৯৩৫ জন শিক্ষার্থী।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশের ৯টি অঞ্চলের মধ্যে পরীক্ষা অনুপস্থিতির হার সর্বনিম্ন ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ ও বরিশালে ৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। বাল্যবিয়ের কারণে শিক্ষার্থী অনুপস্থিতির হার সবচেয়ে বেশি রাজশাহী অঞ্চলে মোট ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং সিলেটে সর্বনিম্ন ৪ দশমিক ৩০ শতাংশ। শিশুশ্রমের কারণে শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতির হার সর্বোচ্চ রাজশাহী অঞ্চলে মোট ১৮ দশমিক ৮০ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন চট্টগ্রামে ১২ দশমিক ৬৮ শতাংশ।

গত ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনার রোগী শনাক্ত হলে ওই বছর ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়। একটানা প্রায় ১৮ মাস শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সশরীর ক্লাস শুরু করা হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের পাঠানো প্রতিবেদনে করোনায় বার্ষিক পরীক্ষায় অনুপস্থিতির এই চিত্রের বিপরীতে কোনও সুপারিশ তুলে ধরা হয়নি।

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন