হিলিতে কেজি প্রতি বেড়েছে ৬ টাকা
- হিলির প্রভাবে দাম বেড়েছে অন্য বাজারেও
বিশ্ববাজারে ডলারের দাম ওঠানামার প্রভাব এবার ছড়িয়ে পড়েছে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরেও। এই বন্দরে গত দুই দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬ টাকা। প্রকারভেদে ২২ টাকার পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিতে ২৮ টাকা দরে। গতকাল শনিবার সকালে হিলির পেঁয়াজ বাজারের চিত্র দেখা গেছে, গত দুদিন আগে কেজিতে ২২ টাকা দরে পেঁয়াজ বিক্রি হলেও আজ বেড়ে হয়েছে ২৮ টাকা। খুচরা ব্যবসায়ী তা বিক্রি করছেন ৩০ টাকা কেজি দরে।
সকালে হিলির বাজারে এসে পেঁয়াজের দাম শুনে বেশ বিপাকেই পড়েছেন এক ক্রেতা। তিনি বলেন, মাত্র কদিনে আগেও পেঁয়াজ কিনেছি ২০ থেকে ২২ টাকা দরে। পেঁয়াজ শেষ হওয়ায় আজকের বাজারে দাম শুনে এককেজি পেঁয়াজ কম নিয়েছি। আগে ১০০ টাকার মধ্যেই পাঁচ কেজি পেঁয়াজ নেওয়া যেতো। আজ থেকে বাজারে এসে যা দেখলাম এখন আর বেশি পেঁয়াজ নেয়া যাবে না। কারণ কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে কেউ কেউ একটু বাড়িয়েই দাম নিচ্ছেন।
বাজারের এক পেঁয়াজ বিক্রেতার কাছ থেকে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাজারে সবকিছুরই দাম এখন বাড়ছে। তেল,চাল, সবজির। এরসঙ্গে বাড়ছে পেঁয়াজের দামও। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। কারণ জ্বালানী তেল আর ডলারের দাম বাড়ছে। এরফলে সবকিছুরই দাম বাড়ছে।
হিলি বাজারের আরেক পাইকারি পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জানান, পেঁয়াজ ভারত থেকে আমদানি করতে হয়। সেখান থেকে আমদানি স্বাভাবিক রয়েছে। তবুও বেড়ে গেছে পেঁয়াজের দাম। তাই ২২ টাকার পেঁয়াজ আজ আমরা বিক্রি করেছি ২৮ টাকা দরে। ডলারের দাম ওঠানামা করায় পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
এদিকে হিলি বাজারে চিত্র এবার ছড়িয়ে পড়েছে দেশজুড়েই। পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি যেন ছড়িয়ে পড়েছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। শুক্রবার গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে সাইনবোর্ড এলাকার কাচাবাজার থেকে পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ৫০ টাকা দরে। বিক্রেতার কাছে রয়েছে তিন রকমের পেঁয়াজ। এই তিন রকমের পেঁয়াজ তিনি তিন রকমেই বিক্রি করছেন। আর তা হলো ৩৫ টাকা, ৪০ টাকা ও ৫০ টাকা দরে।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের চিত্র দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজি প্রতি ১০ টাকা করে বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ গত সপ্তাহে ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। আজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। ভারতীয় পেঁয়াজ গত সপ্তাহে কেজি ছিল ৩০ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজিতে।
এদিকে রাজধানীর কাপ্তান বাজারের এক পেঁয়াজ ব্যবসায়ী বলেন, ভারত থেকে দেশের বাজারে পেঁয়াজ আমদানি কম। আর পেঁয়াজ আমদানি করতে গেলে জ্বালানী তেলের খরচ হয়। অন্যদিকে বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। পেঁয়াজ আনা-নেওয়ার খরচও বেড়েছে। যে কারণে দেশের বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এখন ৫০ টাকা বিক্রি করছি। এরচেয়ে কম বিক্রি করলে আমাদের লাভ থাকবে না।
গত জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে পেঁয়াজের দর ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকা। এর এক মাস পর ভরা মৌসুম ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ বেড়ে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা বিক্রি হয়েছিল। এর পরের মাস থেকে দাম কিছুটা কমে গত সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য অনুযায়ী, কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজের কেজি ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা কেজি দরে। একইভাবে গত সপ্তাহে আমদানি হওয়া পেঁয়াজ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে যে দেশি রসুন ৮০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি হয়েছে এখন সেটি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়।