৬৭ বছর বয়সী আফসার আলি সরদার। রাজবাড়ী জেলার কোর্ট চত্বর, পান্না চত্বর, মক্তব মোড়, রেলগেট, আজাদী ময়দানসহ শহরের বিভিন্ন মোড়ে ডিজেল চালিত মেশিনে আখ ভাঙিয়ে মিষ্টি রস বিক্রি করতে দেখা যায় তাকে। দীর্ঘ ৩৪ বছর ধরে আখ বা আখের রস বিক্রি করেই চলছে আফসারের ৬ সদস্যের সংসার। তবে, বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে আফসারের চোখে মুখে একরাশ হতাশা।
আখের রস বিক্রেতা মো. আফসার আলি সরদার রাজবাড়ী জেলা সদরের দাদশী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের লক্ষ্মীকোল গ্রামের মৃত সাবদুল সরদারের ছেলে। তার সংসারে বৃদ্ধ স্ত্রী, ২ ছেলে ২ মেয়ে সন্তান রয়েছে।
আখের রস বিক্রেতা আফসারের সঙ্গে কথা হয় জেলা সদরের পদ্মা নদীর গোদারবাজার ঘাট এলাকায়। আলাপকালে আফসার বলেন, গত ৩৪ বছর ধরে আমি রাজবাড়ী জেলা শহরের বিভিন্ন এলাকায় আমার এ ভ্যানগাড়ি নিয়ে ডিজেল চালিত মেশিনে আখের ভাঙিয়ে রস বিক্রি করি। প্রতি গ্লাস রস মাত্র ১০ টাকায় বিক্রি করি। গড়ে প্রতিদিন ১শ’ গ্লাস রস বিক্রি করি। রস বিক্রির যে সামান্য আয় হয় তাতে সংসারের খরচ জোগাড় করা দিন দিন কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে বাজারে চাল, ডাল, আটা, তেল, ডিম, মাছ, গোশতসহ সব ধরনের খাবারের দাম অনেক বাড়তি। প্রতিদিনই দাম বাড়ছে। তারপর তো ছেলে মেয়েসহ নাতি-নাতনিদের খরচ আছেই। এরপর আমি এবং আমার বৃদ্ধ স্ত্রীর ঔষধ কিনতে হয়।
তিনি আরও বলেন, আগে ১ মণ আখ কিনতাম সাড়ে ৩শ’ টাকা দামে যা বর্তমানে কিনতে হচ্ছে সাড়ে ৪শ’ টাকায়। এরপর আবার বেড়েছে ডিজেলের দাম। প্রতিদিন আমার প্রায় ১ লিটার ডিজেল তেল লাগে। আগে প্রতি লিটার ডিজেল কিনতাম ৮০ টাকা দিয়ে এখন কিনতে হচ্ছে ১১৪ টাকায়। সব মিলিয়ে অভাবে ও হতাশার মধ্যে পড়েছি। যারা দেশ পরিচালনা করেণ তাদের কাছে অনুরোধ জানাই খাদ্যদ্রব্য ও জ্বালানি তেলের দাম যত দ্রুত সম্ভব কমাতে হবে। তা না হলে আমার মত যারা গরীব মানুষ তারা তো না খেয়েই মরে যাবে।