টিসিবির পেঁয়াজের দাম কমিয়ে কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা থেকে ৩৫ টাকা করা হয়েছে । তারপরেও পেয়াঁজ কিনতে ক্রেতাদের তেমন আগ্রহ নেই এমনকি পেঁয়াজের ট্রাকের সামনেও পূর্বের মতো নেই উপচে পড়া ভিড়। অধিকাংশ স্থানেই বিক্রেতারা পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ডেকে ডেকে।
রাজধানীর ৫০টি জায়গায় টিসিবির ট্রাকভর্তির পেঁয়াজ থাকলেও অধিকাংশ স্থানেই অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। আর ক্রেতারা আসছেন থেমে থেমে । নিজেদের ইচ্ছেমতো কেউ এককেজি, কেউ দুই কেজি, এমনকি কেউ পাঁচ কেজি করে পেঁয়াজ ক্রয় করছেন । এসব তথ্য পাওয়া গেছে রাজধানীর কয়েকটি স্থানে টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রি কার্যক্রম পরিদর্শন করে।
রাজধানীর তোপখানা রোডে অবস্থিত জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংক ছেড়ে কিছুটা দূরে অবস্থানকারী টিসিবির পেঁয়াজ বিক্রির ট্রাক দেখা গেলেও ক্রেতাদের কোন প্রকার ভিড় ছিল না। উভয় জায়গাতেই ট্রাক দুটিকে ঘিরে কয়েকজন মানুষের জটলা দেখা গিয়েছে। তারা নিজেদের চাহিদা মাফিক পরিমাণ মতো পেঁয়াজ কিনছেন। অথচ মাত্র কয়েকদিন পূর্বেও রাজধানীর অনেক জায়গা থেকে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পেঁয়াজ স্বল্পমূল্যে কেনার জন্য বিশাল লাইন থাকত।
মতিঝিলে টিসিবির ট্রাক থেকে পেঁয়াজ কিনতে আসা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী রোকেয়া খাতুন বলেন, আগে পেয়াঁজের দাম ৪৫ টাকা থাকলেও এখন ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে বলে কিনতে এসেছি। আগেও লাইনে দাঁড়িয়ে ভিড় ঠেলে মাত্র এককেজি পেঁয়াজ কিনতে পারতাম। আর এখন চাহিদা অনুযায়ী পেঁয়াজ কিনতে পারছি।
তিনি আরও বলেন, বাজারে দেশি পেঁয়াজ আসা শুরু করলেও দাম এখনও আমাদের নাগালের বাইরে। এককেজি পেঁয়াজ কিনতে লাগে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, যা আমাদের পক্ষে অনেকটাই কষ্টকর, তাই এখনও টিসিবির পেঁয়াজ খাচ্ছি।
অপর একজন ক্রেতা মফিজুর রহমান জানান, ‘জীবনে এমন সাইজের, এমন স্বাদের, অথবা এমন রঙের পেঁয়াজ দেখিনি। দাম কম তাই পাঁচ কেজি কিনলাম ১৭৫ টাকা দিয়ে। এর আগে তো বাজারে এই দামে এককেজি পেঁয়াজও পেতাম না। নিয়ে নিলাম, মাকে দেখাবো বলে।’
এ প্রসঙ্গে টিসিবির চেয়ারম্যানের পক্ষে তার পিএস হুমায়ুন কবির বলেছেন, বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলতে থাকবে। পেঁয়াজের দামও ৪৫ টাকা থেকে কমিয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। সরবরাহও অনেক বেড়েছে। আগে প্রতিট্রাকে এক টন পেঁয়াজ দেওয়া হলেও এখন দেওয়া হচ্ছে চার টন করে পেঁয়াজ ।
উল্লেখ্য, ২৯ সেপ্টেম্বর ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধ করে দেওয়ায় সারাদেশে পেঁয়াজের সংকট তৈরি হয়। সরকার এই সংকট মেটাতে নানা উদ্যোগ নিয়েও পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ওঠেছিল ২৫০ টাকা পর্যন্ত ।
আনন্দবাজার/ফখরুল ইসলাম