ঢাকা | মঙ্গলবার
২৬শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
১১ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছে শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ

শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছে শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ
  • গুরুদাসপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়

শিক্ষার দ্যুতি ছড়াচ্ছে শতবর্ষী বিদ্যাপীঠ গুরুদাসপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯১৭ ওই এলাকার বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী বঙ্ক কর্মকারের পূর্বসুরি ভোলানাথ কুন্ডুর উদ্যোগে গোপিনাথ কুন্ডু গোবিন্দ কুন্ডু ও দেবনাথ কর্মকার মিলিতভাবে জমিও নগদ অর্থ দিয়ে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন।

গুরুদাসপুর থানা সংলগ্ন পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রে মনোরম পরিবেশে গুরুদাসপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়টি অবস্থিত। ২ একর ৮৬ শতকের মধ্যে ১৯৩ শতকজুড়েই মনোমুগ্ধকর খেলার মাঠ ও স্থাপনা শোভা পাচ্ছে। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের ক্যাম্প হিসেবেও ব্যবহৃত হয়ে কালের স্বাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বিদ্যালয়টি।

সরেজমিনে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক কড়া নজরদারীতে রাখা, বন্ধুসুলভ আচরণ, অবিভাবকদের সঙ্গে মাসিক মতবিনিময়, শিক্ষকদের নিয়মিত ক্লাস নিশ্চিত করণ, আইনশৃংখলা রক্ষনাবেক্ষণ, খেলাধুলা, বির্তক প্রতিযোগিতা, ক্যাম্পাস পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও ফলাফলে শ্রেষ্ঠত্ব ধরে রাখায় উপজেলা সদরের এ প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। যার কারণে জেলা উপজেলা পর্যায়ে পুরস্কারের পাল্লাটা কম ভারি নয়। থরে থরে সাজানো রয়েছে পুরস্কারগুলো।

বিদ্যালয়ে সৃষ্টি হয়েছিলো নানামুখী সংকট। এ কারণে কর্র্তৃপক্ষের চাহিদা অনুযায়ী ২০১৫ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন জাহাঙ্গীর আলম মিঠু এম এস এস. এমএড। যিনি ইতোপূর্বে খুবজীপুর বহুমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তার সুনিপুন দক্ষহাতের ছোঁয়ায় স্বল্প সময়ের মধ্যে বদলে যেতে থাকে গুরুদাসপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের চিত্র।

২০১৫ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী বেড়ে হয়েছে দ্বিগুণ। শেণিকক্ষ সংকট দূরীকরণসহ বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলেও এসেছে চমৎকার সাফল্য। ইতোমধ্যে ফলাফলে কয়েকবার উপজেলা সেরা হওয়ায় পুরস্কৃতও হয়েছেন প্রধান শিক্ষক। সেই সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যর অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুসের সহযোগিতায় ২০১৮ সালে জাতীয়করণও হয়েছে বিদ্যালয়টি।

বিদ্যালয় সূত্র বলছে, বর্তমানে বিদ্যালয়ে ১৪ শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত। বিদ্যালয়ের গত কয়েক বছরের ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯ সালের এসএসসি পরীক্ষায় ১১৮ জন পরীক্ষার্থী ২০২০ সালে ১২৭ জন সর্বশেষ ২০২১ সালে ১৩৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। পাসের গড় হার ৯৫ ভাগ। ২০২১ সালে ৫২ জনসহ গত ৩ বছরে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ১৪৪ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়ে পাঠদানের জন্য ২৫ জন শিক্ষক ও ১৩ জন কর্মচারি রয়েছে।

বিদ্যালয়ের গর্ভানিং বডির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীদের পরিক্ষার ফলাফল, খেলাধুলা, স্কাউটিংয়ের মান ও ব্যবস্থাপনা বর্তমানে অনেক ভালো। যে কারণে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সেরা হবার রেকর্ডও রয়েছে। এছাড়া আইসিটি ল্যাব রয়েছে ২টি, ১৬টি মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ ও ২ শতাধিক বই সমৃদ্ধ সুবিশাল গ্রন্থাগার রয়েছে। যেখানে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিঠু বলেন, পরীক্ষায় ভালো ফলাফল অর্জনের জন্য শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিক্ষকরা পরিদর্শন করে থাকে। নিয়মিত ক্লাসের পাশাপাশি জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিশেষ ব্যবস্থায় পাঠদান করা হয়। নিয়মতি অভিভাবক সমাবেশ, শিক্ষকদের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ, মুল্যায়নপত্র অভিভাবকদের হাতে দেওয়া, বিনোদনসহ নিয়মিত খেলাধুলা ও  স্কাউটিং করানো হয়। এছাড়া করোনাকালিন সময়ে নিয়মিত অনলাইনে ভার্চুয়াল ক্লাস ও সাপ্তাহিক অ্যাসাইনমেন্ট করা হয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন