শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পিঁয়াজ আদা রসুনের বাজার অস্থির

ঈদুল আজহার এখনো এক মাসের বেশি বাকি থাকলেও মশলার বাজার নীতিমতো অস্থির হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম লাগামহীনভাবে বাড়ছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরাবাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজে ১৫ থেকে ২০ টাকা, আদা ১০ থেকে ৪০ টাকা ও রসুন ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। তবে ১৫ দিনের হিসেব করলে দাম বেড়েছে আরো বেশি।

দিনাজপুরের হিলি বন্দর ও রাজধানীর কাওরান বাজারে খোঁজ নিয়ে দাম বাড়ার এ তথ্য পাওয়া যায়। এদিকে হঠাৎ করে লাগামহীনভাবে দাম বাড়ায় ভোক্তারা শঙ্কিত। ঈদের আগে একটি অসাধু চক্র কারসাজি করে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা বলেছেন, সম্প্রতি ভারতের মহারাষ্ট্রে বন্যায় পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কারণে সেখানে আগের চেয়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া ভারত সরকার পেঁয়াজ রপ্তানিতে প্রণোদনা প্রত্যাহার করে নেওয়ায় দেশের বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও কমে যাচ্ছে। এজন্য দাম বেড়েছে।

গত মাসে সচিবালয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি-সংক্রান্ত এক পর্যালোচনা বৈঠকে বাণিজ্যসচিব মো. মফিজুল ইসলাম ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে বলেন, মাত্র ১৫ দিনের ব্যবধানে ৮০ টাকার আদা ১৬০ টাকা হলো কেন? আগামী কোরবানির ঈদ আসতে আসতে এটা আরো বেড়ে যাবে। কিন্তু, কেন এটা হবে?

ঐ বৈঠকের পর দাম না কমে উল্টো আরো বেড়েছে। গত ১০দিন ধরে হুহু করে দাম বেড়েছে আমদানিকৃত পেঁয়াজের। বর্তমানে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরের মোকামগুলোতে মানভেদে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৪-২৬ টাকা দরে। সপ্তাহখানেক আগে এই পেঁয়াজ ১৭ থেকে ২০ টাকায় পাইকারি বিক্রি হয়।

আরও পড়ুনঃ  নতুন দামেও মিলছে না ভোজ্যতেল

রাজধানীর খুচরাবাজারে প্রতি কেজি আমদানি পেঁয়াজ ৩৬ থেকে ৪৫ টাকা ও দেশি পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহে ছিল যথাক্রমে ২৮ থেকে ৩৫ টাকা ও ২৫ থেকে ৩০ টাকা। গত এক বছরের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৪৭ শতাংশের বেশি।

দেশি রসুন ১১০ থেকে ১২০ টাকা ও আমদানিকৃত রসুন ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়। যা গত সপ্তাহে ছিল যথাক্রমে ১০০ থেকে ১১০ টাকা ও ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা। গত এক বছরের ব্যবধানে রসুনের দর বেড়েছে ২০ থেকে ৫৩ শতাংশ।

এছাড়া খুচরাবাজারে মানভেদে প্রতি কেজি আদা বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ২০০ টাকায়। গত গত সপ্তাহে ছিল ১৩০ থেকে ১৬০ টাকা। এক বছরে দাম বেড়েছে ৩৬ শতাংশ। সরকারের বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেবে দাম বাড়ার এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। তবে বাস্তবে দাম বেড়েছে আরো বেশি।

বাবুবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, এবার দেশে আদার উত্পাদন কম হয়েছে। আদা আমদানিকারক দেশ ভারত, চীন ও মিয়ানমারেরও একই অবস্থা। উত্পাদন কম হয়েছে। ফলে আদার দাম বেশি।

হিলি বন্দর দিয়ে পেঁয়াজ আমদানিকারক মোফাজ্জল হোসেন জানান, গত সোমবার বন্দরে ভারতীয় পেঁয়াজ সবোচ্চ ২৮ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হয়েছে। কমে বিক্রি হয়েছে ২৫-২৬ টাকায়। আজ সেই পেঁয়াজের দাম কেজিতে আবার ২-৩ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে। বৃষ্টির কারণে দাম কমেছে। তবে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা থাকায় দাম আবার বাড়বে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুনঃ  ভরা মৌসুমেও ইলিশের দেখা নেই বরিশালে

স্থানীয় আমদানিকারকের প্রতিনিধি আইয়ুব আলী জানান, সামনে কোরবানীর ঈদ। দাম কমার কোনো লক্ষণ নাই।

সংবাদটি শেয়ার করুন