খুলনার কয়রায় মাদরাসার অধ্যক্ষকে তুলে এনে ইউনিয়ন পরিষদে পিটিয়ে জখমের মামলায় জামিন মেলেনি কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলামের। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টায় পাইকগাছা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতে জামিন প্রার্থনা করলে জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক আনোয়ারুল ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটায় খুলনা মহানগরের হরিণটানা এলাকা থেকে এসএম বাহারুল ইসলামকে অধ্যক্ষকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কয়রা থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত)মো: ইব্রাহিম আলী বলেন, ভিকটিম অধ্যক্ষ মো: মাসুদুর রহমান এর স্ত্রী সাদিয়া সুলতানা বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলামের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৫ জনের বিরুদ্ধে শুক্রবার (২২ জুলাই) মামলা দায়ের করেন। মামলা নাম্বার ১২।
মাদ্রাসা কমিটিতে চেয়ারম্যানের নাম না দেওয়ায় অধ্যক্ষের ওপরে বর্বরোচিত নির্যাতন চালানো হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে কয়রার উত্তরচক আমিনীয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো: মাসুদুর রহমানকে তুলে এনে ইউনিয়ন পরিষদে পিটিয়ে জখমের অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। ঐ ঘটনায় ভুক্তভোগী কয়রা উত্তরচক আমিনীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মো: মাসুদুর রহমান জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। একইসঙ্গে তিনি থানায় অভিযোগ দেন।
জেলা প্রশাসকের নিকট দেওয়া অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, গত সোমবার (১৮ জুলাই) ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান মাদ্রাসায় বসে কাজ করছিলেন। এসময় সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এসএম বাহারুল ইসলাম এবং ওই মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মোস্তফা আব্দুল মালেকের নির্দেশে স্থানীয় ইউনুসুর রহমান বাবু, মোঃ নিয়াজ হোসেন, মাসুদুর রহমান, মিলন হোসেন, জহুরুল ইসলাম, রিয়াল, আমিরুল, অমিত মন্ডল, রফিকুল গাজী, সাদিকসহ ১৫/২০ জন লোক তাকে জোর করে ধরে রুম থেকে কলার ধরে বের করে নিয়ে আসে। এসময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। এরপর তাকে সেখানেই ফেলে চোখে, ঘাড়ে, কানে পিঠে এলাপাতাড়িভাবে মারপিট করে। এরপর তাকে সেখান থেকে তুলে নিয়ে চেয়ারম্যানে বাহারুল ইসলামের অফিসের একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। চেয়ারম্যান অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং তাকে আঘাতের নির্দেশ দেয়। সেখানেও তাকে বেদম মারপিট করে। এতে তার চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং কানের পর্দা ফেটে যায়। সেখানে চেয়ারম্যান তাকে মাদ্রাসা থেকে পদত্যাগ করতে বলে। বিষয়টি তার পরিবারের সদস্যদের মাধ্যমে থানায় খবর দেওয়া হলে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। পরিবার প্রথমে তাকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।