পদ্মা সেতু পার হতে হলে প্রতিটি মোটরসাইকেল চালকদের গুণতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। তবে এই টাকা জাজিরার টোল প্লাজার কাউন্টারে দিতে হচ্ছে না। এটা নিচ্ছে স্থানীয় দালাল ও পিকআপ- ট্রাকের ড্রাইভাররা। গত রবিবার দুপুরে ও সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্রের দেখা মিলছে।
দেখা গেছে, পাঁচটি স্পট কুতুবপুরের সীমানা, নাওডোবার গোলচত্বর, জমাদ্দার মোড়, নাওডোবার ন্যাশনাল ব্যাংকের সামনে, ঢোল প্লাজার নিকটে স্থানীয় দালাল ও পিকআপ-ট্রাকের ড্রাইভাররা চালকসহ মোটরসাইকেল সিঁড়ি দিয়ে পিকআপ-ট্রাকে উঠাচ্ছে। প্রতিটি মোটরসাইকেল থেকে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা নিচ্ছে। মোটরসাইকেল ও চালকদের পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিচ্ছে তারা।
একাধিক পিকআপ-ট্রাকের ড্রাইভারের সঙ্গে ভাড়ার ব্যাপারে কথা হলে তারা বলেন, আমরা ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা মোটরসাইকেল চালকদের কাছ থেকে নিই, এটা সত্য। তবে স্থানীয় দালালদের প্রতিটি মোটরসাইকেল বাবদ ৬০০ টাকা করে দিতে হয়। তারপর টোল ভাড়া তো আছে, সব দিয়ে আমাদের বেশি থাকে না।
স্থানীয় এক দালালের সঙ্গে কথা হলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছা প্রকাশ করে বলেন, আমরা ১০-১২ জন মিলে মোটরসাইকেল পিকআপ ও ট্রাকে উঠিয়ে দেই। আমাদের প্রতিটি মোটরসাইকেল বাবদ ৬০০ টাকা করে দেয়। পুলিশসহ আরও অন্যান্য জায়গায় টাকা দিয়ে যা থাকে তা আমরা কয়েকজন মিলে ভাগ করে নেই।
এক মোটরসাইকেল চালকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, কী বলবো ভাই, আমাদের দুঃখের কথা শোনার কেউ কি আছে্য? সরকার আমাদের জন্য পদ্মা সেতু করলো। অথচ আমরা সেতু দিয়ে পার হতে পারছি না। এখন আমাদের পদ্মা সেতু পার হতে হলে প্রতিটি মোটরসাইকেল বাবদ ট্রাক ও পিকআপে দিতে হয় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। তাও আবার আমাদের পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে নিয়ে যায়। আগে আমরা ফেরিতে প্রতিটি মোটরসাইকেল বাবদ ভাড়া দিতাম ৭০ টাকা।
পদ্মা দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘মোটরসাইকেল ভর্তি পিকআপ ও ট্রাকের গাড়ি থেকে পুলিশ টাকা নেয় এই কথা আপনার কাছ থেকে শুনলাম। এই ধরনের ঘটনা যদি কোনো পুলিশ সদস্য করে থাকে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের অজান্তে দূরে পিকআপ-ট্রাক থামিয়ে মোটরসাইকেল উঠিয়ে সেতু পারাপার হতে পারে। ধরা পড়লে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আনন্দবাজার/শহক