শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৬ই আশ্বিন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিশ্ববাজারে কমেছে ভোজ্যতেলের দাম-

পাইকারি বাজারে স্বস্তি

পাইকারি বাজারে স্বস্তি

চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ ভোজ্যতেলে ৪শ থেকে ৫শ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বিশ্ববাজারে ভোজ্য তেলের বুকিং রেট ৬শ ডলার কমেছে। এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজারে। তবে পাইকারিতে বিভিন্ন ধরনের ভোজ্যতেলে দাম কমে আসলেও এর প্রভাবও পড়েনি খুচরা বাজারে। উল্টো বোতলের গায়ে কোম্পানি দরেই বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।

গত ২৭ জুন বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৬ টাকা কমে ১৯৯ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়। ৫ লিটারের বোতলের দাম নির্ধারণ করা হয় ৯৮০ টাকা। তাছাড়া প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা ও পামতেল ১৫৮ টাকা লিটার নির্ধারণ করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে বুকং রেট কমে যাওয়ায় বর্তমানে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৭৪ টাকা, পামতেল ১০৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খাতুনগঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলে বুকিং রেট কমে গেছে। খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। মিলাররাও বাধ্য হয়ে সরকারি রেটের কমে ভোজ্যতেল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে মোটা অংকের লোকসান গুনতে হচ্ছে বলে জানান তারা।

তারা আরো জানান, গতমাসে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের বুকিং রেট ছিল ১ হাজার ৮শ ডলার। বর্তমানে তা নেমে ১ হাজার ২শ ডলারে ঠেকেছে। এর প্রভাব খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারেও পড়তে শুরু করেছে। দু’সপ্তাহের ব্যবধানে খাতুনগঞ্জে প্রতি মণ সয়াবিন তেল ৫শ টাকা কমে সাড়ে ৬ হাজার টাকা, পামতেলে মণপ্রতি দেড় হাজার টাকা কমে বর্তমানে ৪ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

আরও পড়ুনঃ  ৯ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতির শঙ্কা

চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. মহিউদ্দিন বলেন, হঠাৎ ভোজ্যতেলের দাম কমার কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। বিশেষ করে মালয়েশিয়াতে তেলের দাম বেশি হারে কমেছে। তবে যাদের কাছে তেলের ডিও ছিল তারা লোকসান গুণছেন।

এদিকে পাইকারি তেলের বাজারে দাম কমলেও নগরীর খুচরা বাজারগুলোতে এর কোন প্রভাব পড়েনি। খুচরা ব্যবসায়ীরা আগের দরেই তেল বিক্রি করছে। গত ২৭ জুন থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৬ টাকা কমে হয় ১৯৯ টাকা, ৫ লিটারের বোতল ৯৮০ টাকা, খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৮০ টাকা ও পামতেল ১৫৮ টাকায় বিক্রি শুরু করেন। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমায় খুচরা বাজারগুলোতে বিভিন্ন ভোজ্যতেলে অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা কমে বিক্রি করার কথা। অথচ খুচরা ব্যবসায়ীরা আগের দরেই তেল বিক্রি করছেন।

নগরীর খুচরা তেলে ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা এখন যে তেলগুলো বিক্রি করছি তা আগের কেনা। তাছাড়া ভোজ্যতেলের গায়ে কোম্পানির দেয়া দামে তেল বিক্রি করছি। এটা তো আমাদের দোষ না। কোম্পানি যে দাম নির্ধারণ করে দেয় আমরা সে দামেই বিক্রি করি।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আন্তর্জাতিক ও পাইকারি বাজারে তেলের দাম কমলেও খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে না। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়লে সরকারি সংস্থাগুলো তেলের দাম সমন্বয়ের জন্য উঠে পড়ে লাগে। এখন যখন কমেছে, তখন তারা খুচরা বাজারে দাম সমন্বয় বা কমানোর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এখন সরকারের উচিত খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয় করা।

আরও পড়ুনঃ  প্রতিনিয়তই বাড়ছে ভোজ্যতেলের দাম

আনন্দবাজার/শহক

সংবাদটি শেয়ার করুন