লেনদেনে শীর্ষে বেক্সিমকো, পদ্মা লাইফ
- ডিএসইতে ৬শ কোটি, সিএসই ১৯
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল রবিবার লেনদেন ৬শ কোটি টাকার ঘরের কাছাকাছিতে অবস্থান করেছে। অপরদিক চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন ১৯ কোটি ঘরে চলে এসেছে। উভয় স্টকের সব ধরনের সূচক পতন হয়। এদিন কমেছে দুই স্টকে অধিকাংশ কোম্পানি শেয়ার ও ইউনিট দর।
বিভিন্ন মহলের শত চেষ্টায় পুঁজিবাজার উত্থানে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। কিন্তু সম্প্রতি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে বলেন, সবাই ধৈর্য ধরুন,পুঁজিবাজার ভালো হবে। শিবলী রুবাইয়াতের এমন আশ্বাসের ঠিক পরের কার্যদিবস সত্যিই ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার। কিন্তু কিছুদিন পর ঘুরে ফিরে সেই পুঁজিবাজার উত্থান পতন গড়াগড়ি। সেই ধারায় গতকাল রবিবার পুঁজিবাজার পতন রুপে রয়েছে। এ ধরনের পতন বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে চাচ্ছে বিনিয়োগকারীরা।
দুই স্টকের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। এর মধ্যে ডিএসইর ৫১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং সিএসইর ৬৩ দশমিক ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর কমেছে। অপরদিকে ডিএসইর ৩৩ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং সিএসইর ২৩ দশমিক ১০ শতাংশ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে।
ডিএসইতে ব্যাংক, নন ব্যাংকিং আর্থিক, বিমা, ইঞ্জিনিয়ারিং, বস্ত্র, খাদ্য আনুষঙ্গিক, জ্বালানি শক্তি, সিরামিক, সিমেন্ট, আইটি, সেবা আবাসন এবং ভ্রমন অবসর খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর কমেছে। অপরদিকে এদিন পাট খাতের শতভাগ কোম্পানির দর উত্থান হয়েছে। বিবিধ, ওষুধ রসায়ন, চামড়া এবং টেলিকম খাতের অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে। শেয়ার দর বাড়া-কমার একই চিত্র ছিল পুঁজিবাজার সিএসইতে।
ডিএসইতে গতকাল রবিবার লেনদেন হয়েছে ৫৯৩ কোটি ৪৯ লাখ টাকার শেয়ার। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ৫৮০ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার। ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৮২টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৯৯টির, কমেছে ২৩৬টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪৭টির।
এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ২০ দশমিক ২১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩০৪ দশমিক ২৮ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক ৬ দশমিক ২৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ১ দশমিক ১১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২৬৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ২৪ পয়েন্টে।
অপর পুঁজিবাজার সিএসইতে এদিন (রবিবার) লেনদেন হয়েছে ১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। গত বৃহস্পতিবার লেনদেন হয়েছিল ১৯ কোটি ৪৫ লাখ টাকার শেয়ার। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯০টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৬৭টির, কমেছে ১৮৩টির এবং পরিবর্তন হয়নি ৪০টির। এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ৭১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৫২৩ দশমিক ৫১ পয়েন্টে।
এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক ৫ দশমিক ৮১ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ২৯ দশমিক ২০ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ৪৩ দশমিক ৭০ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ৩ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩৫৭ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ৫৭৯ দশমিক ১৭ পয়েন্টে, ১১ হাজার ৯৯ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট এবং ১ হাজার ১৭০ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে বেক্সিমকোর শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। বেক্সিমকো ৩৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা এদিন অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং ২৯ কোটি ২ লাখ টাকা, তিতাস গ্যাস ১৬ কোটি ২১ লাখ টাকা, ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ১৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, ফু-ওয়াং ফুড ১১ কোটি ৭০ লাখ টাকা, শাইনপুকুর সিরামিকস ১১ কোটি ৬ লাখ টাকা, এসিআই ফর্মুলেশনস ১০ কোটি ১২ লাখ টাকা, কাট্রালি টেক্সটাইন ৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা, পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা এবং গোল্ডেন সন ৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।
অপরদিকে সিএসইতে পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কেনাবেচায় কদর সবচেয়ে বেশি ছিল। ফলে লেনদেন শীর্ষে কোম্পানিটির শেয়ার স্থান পায়। এদিন পদ্মা লাইফ ইন্স্যুরেন্স ৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়। লেনদেনের শীর্ষ অবস্থানে থাকা অন্য কোম্পানিগুলোর মধ্যে জিএসপি ফাইন্যান্স ৮১ লাখ টাকা, তিতাস গ্যাস ৭৩ লাখ টাকা, জেএমআই হসপিটাল ৫৮ লাখ টাকা, বেক্সিমকো ৪০ লাখ টাকা, মিরাকেল ৩৬ লাখ টাকা, স্কয়ার ফার্মা ৩৩ লাখ টাকা, ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং ৩২ লাখ টাকা, খান ব্রাদার্স পিপি ৩২ লাখ টাকা এবং ইউনিয়ন ব্যাংক ৩১ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়।