বাংলার মরমি কবি ও গানের জগতে কিংবদন্তিতুল্য নাম হাছন রাজা। আজ তার ১৬৫তম জন্মবার্ষিকী। অথচ দিবসটি উপলক্ষে তার জন্মস্থান সুনামগঞ্জে তেমন কোনো আয়োজন নেই। একই সঙ্গে সুরমা নদীর তীর ঘেঁষে লক্ষ্মণশ্রীর তেঘরিয়া গ্রামে তার বাড়িটি সংরক্ষণেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে না। অযত্ন-অবহেলায় ঐতিহাসিক বাড়িটি এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।
সরেজমিন দেখা যায়, যে বাড়িতে হাছন রাজা বসবাস করতেন, সেটি পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পৌর শহরের এ বাড়ি সবার কাছে ‘সাহেব বাড়ি’ নামে পরিচিত।
স্থানীয়রা বলেন, পরিবার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বাড়িটি সংস্কার বা সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই। অথচ জেলার হলহলিয়া জমিদার বাড়ি, গৌরারং জমিদার বাড়ি, সুখাইড় জমিদার বাড়িসহ বিভিন্ন জমিদার বাড়ি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়া প্রশাসনের আয়োজনে বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম, বৈষ্ণব কবি রাধারমণ দত্ত, মরমি গীতিকবি দুরবিন শাহর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হয়। কিন্তু অবহেলা কেবল মরমি সাধক হাছন রাজার বেলায়।
সিলেট থেকে আসা পর্যটক মৃণাল কান্তি দাস বলেন, অনেক দিন ধরেই ইচ্ছা ছিল হাছন রাজার বসতবাড়ি দেখব। কিন্তু বাড়িটির জীর্ণদশা দেখে কষ্ট হচ্ছে। আরেক পর্যটক সাইফুল্লাহ হাসান বলেন, এখানে হাছন রাজার স্মৃতি সংরক্ষণে যে মিউজিয়ামটি আছে সেটি অপ্রতুল।
এ বিষয়ে সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, কয়েকদিন আগে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব ও পর্যটন চেয়ারম্যান হাছন রাজার বাড়ি পরিদর্শন করেছেন। এ সময় হাছন রাজার পরিবারকে বলা হয়েছিল, তার স্মৃতি ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি সংগ্রহশালা করা হবে। সংগ্রহশালায় হাছন রাজার জীবন ও কর্ম নিয়ে চর্চা করা যাবে। তাছাড়া হাছন রাজার বাড়ি সংরক্ষণ করতে তার পরিবারকে একটি প্রস্তাবনা পাঠানোর জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদের কাছ থেকে কোনো প্রস্তাবনা আসেনি।
জন্মবার্ষিকী পালন বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আজ আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এর মধ্য দিয়েই হাছন রাজাকে স্মরণ করা হবে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস