বিশ্বের উদীয়মান বাজার ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর (ইএমডিই) ঋণ গ্রহণ বাড়ছে। গত পাঁচ দশকে এ ঋণ খুব দ্রুত এবং ব্যাপক মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালে ইএমডিইগুলোর ঋণের পরিমাণ রেকর্ড ৫৫ ট্রিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে টানা আট বছর ইএমডিইগুলোর ঋণ গ্রহণ বাড়ল। খবর গার্ডিয়ান।
ইএমডিইগুলোর ঋণের মাত্রা বৃদ্ধির একটা বড় অংশজুড়ে রয়েছে চীনের ঋণ। ওয়াশিংটনভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থাটি জানিয়েছে, ১০০টি দেশ নিয়ে এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সরকারি ও বেসরকারি খাতের সংস্থাগুলোর ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ায় সিংহভাগ দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ওয়েভস অব ডেট’ শীর্ষক সমীক্ষায় দেখা যায়, ২০১০ সালে ঋণ গঠন শুরুর পর থেকে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ঋণ-জিডিপি অনুপাত ৫৪ শতাংশীয় পয়েন্ট বেড়ে ১৬৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। উল্লেখ্য, ১৯৭০ সালের পর থেকে ঋণ প্রবৃদ্ধির চারটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব নিয়ে ‘গ্লোবাল ওয়েভস অব ডেট’ সমীক্ষাটি করা হয়েছে।
সমীক্ষাটিতে ভোক্তা, ব্যবসা ও সরকারি—মোট সব ধরনের ঋণ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে ঋণের অর্থ পরিশোধ, বিশেষ করে ব্যাংক ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ তহবিলগুলোর ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অর্থনীতির প্রতিটি অংশে যে পরিমাণ চাপ পড়ে তার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে।
সমীক্ষায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০০টি দেশের ঋণ-জিডিপি অনুপাত প্রতি বছর গড়ে সাত শতাংশীয় পয়েন্ট করে বাড়তে দেখা গেছে, যা ১৯৮০ সালে লাতিন আমেরিকায় উদ্ভূত ঋণ সংকটের চেয়ে প্রায় তিন গুণ দ্রুত।
বিশ্বব্যাংকের ইকুইটেবল গ্রোথ, ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনস বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট চেয়েলা পাজারবাসিগলু বলেন, ইতিহাসে দেখা গেছে, বড় আকারের ঋণ বৃদ্ধি প্রায়ই উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থিক সংকটের সঙ্গে সংযুক্ত। আর এসব কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জনগণ। তিনি বলেন, ঋণ ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক সংকটগুলোর মুখে ঝুঁকির মাত্রা কমাতে এসব দেশের নীতিনির্ধারকদের অবিলম্বে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
আনন্দবাজার/ইউএসএস