আব্দুল কুদ্দুস, বয়স ৬০ বছর। তিনি মৌলভীবাজার জেলার সদর উপজেলার শ্রীরাপুর গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় তিনি ঔষুধী গুণী চিরতা, যষ্টিমধু ফেরিওয়ালা। দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ফেরি করে চিরতা গাছের ডাল ও যষ্টিমধু ফেরি করে বিক্রি করে আসছেন। চিরতার ফেরিওয়ালা আব্দুল কুদ্দুস ৫সন্তানের জনক। তার ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে রয়েছে। সবমিলিয়ে ৭ সদস্যের সংসার। ৩০ বছর ধরে চিরতার ডাল আর যষ্টিমধু বিক্রি করে সংসার চলে আব্দুল কুদ্দুসের। শ্রীমঙ্গল হবিগঞ্জ সড়কে আব্দুল্লাহ মার্কেটে চিরতার ডাল আর যষ্টিমধু বিক্রি কালে দেখা হয় চিরতার ফেরিওয়ালা আব্দুল কুদ্দুসের সঙ্গে।
আলাপকালে তিনি জানান, ৩০ বছর আগে অন্য এক ফেরিওয়ালার পরামর্শে এ ব্যবসা শুরু করেন। ওই ফেরিওয়ালার পরামর্শে চিরতা আর যষ্টিমধু চট্টগামের সিতাকুন্ডের মহাজনপট্টির প্রিতমপাশার কাছ থেকে কিনে এনে ব্যবসা শুরু করেন। এরপর থেকে মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও হবিগঞ্জ জেলার মাদবপুরে গিয়ে ফেরি করে চিরতা ও যষ্টিমধু বিক্রি করেন।
আব্দুল কুদ্দুস ও বিভিন্ন মাধ্যম থেকে জানা যায়, চিরতার পাতা ও ডাল রাতে পানিতে ভিজিয়ে রেখে প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস করে পান করলে হৃৎপিন্ড ও যকৃতের সবলকারক, চোখের জ্যোতিবর্ধক ও জ্বর রোগে বিশেষ উপকারি চিরতা। চিরতার উপকারিতা চিরতা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত তিতা খাবার খেলে অসুখ হওয়ার প্রবণতা কম থাকে। চিরতা এরমধ্যে অন্যতম। চিরতা খেলে যেকোনো কাটা, ছেঁড়া, ক্ষতস্থান দ্রুত শুকায়। ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্য চিরতা জরুরি পথ্য। আর একি নিয়মে যষ্টিমধু পানিতে ভিজিয়ে পান করলে তরল আকারে কফ বের করে দেয় এবং কাশি ভালো করতে পারে। এছাড়া ব্রঙ্কাইটিস, টনসিলাইটিস ও কণ্ঠনালীর প্রদাহ দূর করতেও সাহায্য করে। যষ্টিমধুর গাইসিরাইজিক অ্যাসিড মাস্টকোষ হতে হিস্টামিন নিঃসরণ কমিয়ে অ্যালার্জি প্রতিরোধ করে। গাইসিরাইজিন বিভিন্ন কঠিন রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাস বৃদ্ধি ও বংশবিস্তার রোধ করে। লিভার পরিস্কার, কাশিসহ বিভিন্ন রুগের উপশম হয়।
ফেরিওয়ালা আব্দুল কুদ্দুস আরো বলেন, চিরতা আর যষ্টিমধু গুণাগুন অনেকে জানেনা। আর যারা জানেন এবং উপকার পেয়েছেন তারাই তার কাষ্টমার। সপ্তাহে ৬দিন তিনি বিভিন্ন এলাকায় চিরতা বিক্রি করেন। তিনি জানান, অধিকাংশ কাষ্টমারই তার বান্ধা। তাদের কাছে গেলেই বিক্রি হয়। প্রতিদিন চিরতা আর জৈষ্ট মধু বিক্রি করে ৪ থেকে ৫শ’ টাকা লাভ হয়। তা দিয়েই চলে চিরতার ফেরিওয়ালা আব্দুল কুদ্দুসের সংসার।