স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ইত্যাদি সংস্থার তহবিলের একাংশ সরকারি কোষাগারে চলে যাওয়া এখন সময়ের ব্যাপার। অর্থ মন্ত্রণালয়ের খসড়া তৈরি, মন্ত্রিসভার অনুমোদন, আইন মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষা-নিরীক্ষা (ভেটিং) ও রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের অনুমোদন শেষ। অর্থ মন্ত্রণালয় এখন বিল আকারে তা জাতীয় সংসদে পাঠাবে। আর সংসদ অনুমোদন দিলেই আইনটি হয়ে যাবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্যসমূহ জানা যায়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রস্তাবিত আইনটির নাম ‘স্বায়ত্তশাসিত, আধা–স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যান্সিয়াল করপোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০১৯’। গত ২ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিসভা এই আইনের খসড়া অনুমোদন করেছে। অনুমোদনের জন্য সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, আইনটি প্রণয়ন করা হলে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ ও সুদ পরিশোধ ব্যয় কমবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী তানজীব উল আলম বলেন, সরকার আইন করতেই পারে। তবে টাকা নেওয়ার ভালো সময় এখন নয়। কারণ, অনেক সংস্থার টাকা কিছু দুর্বল ব্যাংকে আছে। ফলে কিছু ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে। আইন করে এখন বরং সরকার অধিকারটা নিয়ে রাখতে পারে, কার্যকরের পথে যেতে পারে পরে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শাহদীন মালিক বলেন, আইনের খসড়াটি দেখে মনে হচ্ছে, অর্থ আয়ের স্বাভাবিক পথে মনোযোগ দেওয়ার পরিবর্তে সরকার অন্য পথে পা বাড়াচ্ছে, যা গোটা আর্থিক খাতকেই অস্থির করে তুলতে পারে। উদ্যোগটিকে সরকারের ‘আর্থিক অব্যবস্থাপনার পরিচায়ক’ বলে আখ্যায়িত করতে চান তিনি।
এদিকে ব্যাংকাররা বলছেন, আইনটি পাস হলে ব্যাংক খাতের তারল্যসংকট বাড়বে। কারণ, ব্যাংক খাত থেকে টাকা চলে যাবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে।
আইনটি পাস হলে সংস্থাগুলোর উদ্বৃত্তপত্রেও (ব্যালান্স শিট) জটিলতা তৈরি করবে। কারণ, উদ্বৃত্তপত্রের যে অংশে সম্পদ দেখানো হয়, তার বিপরীত পাশে দেখানো হয় দায়। সম্পদ নিয়ে গেলে দায়ের কী হবে, তা নিয়ে কিছুই বলা নেই।
আনন্দবাজার/ইউএসএস