ঢাকা | শনিবার
২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মা ঈদে বাড়ি আসমু

মা ঈদে বাড়ি আসমু

মা ঈদে বাড়ি আসমু। কয়েকদিন বাড়িতে থেকেন মেয়ে জান্নাতুল মাওয়ার আকিকা দিমু। আমার জন্য দোয়া করবেন। ঈদে বড় ভাইয়াও বিদেশ থেকে বাড়ি আসবে। আপনি সময়মতো ঔষধ খাবেন। হাও মাও করে কেঁদে এ সব কথা বলেন চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত ফায়ার সার্ভিস কর্মী মনিরুজ্জামান মনির মা শরীফা বেগম।

মনির কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউপির নাইয়ারা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত. ছানু মিয়ার ছেলে। রবিবার সকালে ছেলের মৃত্যুর খবর পান মা শরীফা বেগম। মনে হয় যেন আকাশ ভেঙে মাথার উপর পড়েছে। আমার ছেলেকে এনে দেন। শনিবার বিকেলে মায়ের সঙ্গে মুঠো ফোনে ছেলে কথা উপকথন হয়।

তার স্বামীও দেশের জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেন। এখন ছেলেও দেশের জন্য কাজ করতে গিয়ে মারা যান। তাই ছেলে শিশু সন্তানের দিকে থাকিয়ে একটু সহযোগিতা করার জন্য সরকারের কাছে দৃষ্টি কামনা করেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ২০১৬ সালে ফায়ার সার্ভিস কর্মী হিসেবে চাকরি নেন মনিরুজ্জামান মনির। দুই মাস পূর্বে মনির ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম সীতাকুণ্ডে বদলি হয়ে আসেন। ৭ বছর চাকরি জীবনে সাহসী ফায়ার কর্মী একাধিকবার পদকও পান তিনি। তিন বছর পূর্বে বরিশাল জেলায় বিয়ে করেন। সংসার জীবনে জান্নাতুল মাওয়া নামের দেড় মাসের একটি কন্যা রয়েছে। স্ত্রী মাহমুদ আক্তার মুক্তা মেয়েকে নিয়ে বাপের বাড়ি বরিশালে থাকেন। স্বমীর মৃত্যুর খবর শুনে শ্বশুর বাড়ি নাঙ্গলকোটে রওনা হয়েছেন।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগার পর ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় মানুষদের বাঁচাতে গিয়ে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হন। পরে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। পাঁচ ভাই ও এক বোনের মধ্যে মনিরুজ্জামান মনির সবার ছোট। সকল ভাইয়েরা বিবাহ করে পিতক পিতক আছেন।

এ বিষয়ে নিহতের বোনের জামাই আব্দুল কাইয়ুম বলেন, মনির সর্বশেষ রাতে তার বোনকে ফোন করে বলে, পানি নেই। পানি না থাকলে তারা মারা যাবে। এরিমধ্যে সে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তার কাছে ভালো লাগতেছে না। তার জন্য দোয়া করতে বলছেন। রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। সকালে তার মৃত্যুর খবর পাই। নিহতের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মুক্তার মুঠো ফোনে বার বার কল দিও বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় নিহতের বাড়িতে শোকের মাতাম বাইছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন