করোনাভাইরাস ও উইক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বে খাদ্যদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিটি দেশই খাদ্যঝুঁকি তৈরি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে প্রয়োজন নিজেদের প্রয়োজনীয় খাদ্য উৎপাদন করা। এক্ষেত্রে ফলদ বৃক্ষরোপন অন্যতম সহায়ক বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ফলদ বৃক্ষরোপন করুন। এতে নিজেদের পরিবারের চাহিদা পূরণের পর বিক্রি করে আয় করাও সম্ভব। আমরা সড়ক ও মহাসড়কে বৃক্ষরোপন করেছি। এমনকি দলীয়ভাবেও রোপন করছি। ইতিপূর্বে আমরা সমুদ্র ও সুন্দর এলাকায় যে সব গাছ ও বনায়ন করেছিলাম বিএনপি ক্ষমতায় এসে সেগুলো ধ্বংস করে চিংড়ির ঘের তৈরি করেছে। এতে সেসব এলাকায় লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়ে জমি ক্ষয় হয়েছে। মানুষের জীবনযাপন দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা-২০২২, জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা-২০২২’ এর আয়োজন করে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়। রবিবার রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে মেলাটির উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাবউদ্দীন এমপির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ অতিথি ছিলেন মন্ত্রণালয়টির সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী এমপি ও উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার এমপি, ড. ফারহিনা আহমেদ।
এবারের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের স্লোগান নির্ধারণ করা হয়েছে, “অনলি অন আর্থ: লিভিং সাসটেইনেবিলিটি ইন হারমনি উইথ ন্যাচার, এর ভাবানুবাদ হয়- একটাই পৃথিবী: প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন”। একই সঙ্গে ৫ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত পরিবেশ মেলা ও ৫ জুন থেকে ৪ জুলাই পর্যন্ত জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযান ও বৃক্ষমেলা উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বন আমরা ইতিমধ্যে ২২ ভাগে উন্নীত করতে পেরেছি। এটা মাত্র ১১ ভাগ পেয়েছিলাম ৯৬ সালে যখন সরকারে আসি। বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার ফলে আজকে তা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের সামাজিক বনায়নের বিষয়টাও ব্যাপকভাবে করে যেতে হবে। এতে যেমন দরিদ্র জনগোষ্ঠী লাভবান হয়। তারা নিজেরা গাছ শুধু লাগায় না, গাছগুলো চমৎকারভাবে পাহারা দেয়। সেটা আমি নিজে দেখেছি। আমাদের বনভূমি বৃদ্ধি করা পাশাপাশি আমাদের সার্বিক উন্নয়নের কাজও করে যেতে হবে। সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে হবে।
উল্লেখ্য ২৩ এপ্রিল মুভমেন্ট ফর ওয়ার্ল্ড এডুকেশন রাইটস-(এমডব্লিউইআর) ও দৈনিক আনন্দবাজারের উদ্যোগে ‘পরিবেশদূষণে ধ্বংসের পথে প্রাণিজগৎ’ শীর্ষক ওয়েবিনারে সংগঠনের আহ্বায়ক ফারুক আহমাদ আরিফ বৃক্ষরোপন মৌসুমে ৯০ শতাংশ ফলদবৃক্ষরোপনের প্রস্তাব রাখেন। আজকের অনুষ্ঠানে ফলদ বৃক্ষরোপনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে তিনি সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, আমাদের প্রত্যেকের অন্তত একটি করে ফলদ বৃক্ষরোপন করা দরকার। একই সঙ্গে রাষ্ট্রের কাছে অনুরোধ থাকবে সড়ক ও মহাসড়কে যেন ফলদ বৃক্ষরোপন করার সার্বিক ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
আনন্দবাজার/টি এস পি