শ্রীনগরে কৃষকের উৎপাদিত ধান বিক্রি করে খরচের টাকা উঠছে না। চলতি বছর বোরো মৌসুমের শুরুতেই অসময়ের বৃষ্টিতে বীজতলার ক্ষতি থেকে শুরু করে জমির জলাবদ্ধতা কাটিয়ে ধানের চারা রোপন করতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েন কৃষক। এছাড়া ধান কাটার আগমুহুর্তে কালবৈশাখী ঝড়, আগাম জোয়ারের পানিতে জমিতে জলাবদ্ধতার মধ্যে দিয়ে ফসলের ফলন কম ও অতিরিক্ত দামে কৃষি শ্রমিক দিয়ে জমিতে ডুবা ধান কাটতে হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে কৃষকের উৎপাদিত ধান বিক্রি করে খরচ উঠছে না।
ঝাড়া-শুকনা প্রতিমণ ভালমানের ধান সর্বোচ্চ বিক্রি হচ্ছে ১২শ’ টাকা। ভিজা ও মাড়াই করা ধান বিক্রি হচ্ছে ৮শ’ থেকে সাড়ে ৮শ’ টাকা করে। চলতি বছর নানা প্রতিকূলতার মাঝে ধানের উৎপাদন হয়েছে কম। খরচ হয়েছে বেশি। এমনটাই বলছেন ধান চাষিরা।
স্থানীয় খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস জানায়, সরকারিভাবে কৃষকের প্রতি কেজি ধানের মূল্য ২৭ টাকা ও রাইস মিলাদের প্রতি কেজি চালের মূল্য নির্ধারন করা হয়েছে ৪০ টাকা করে। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ হয়েছে। এর মধ্যে আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশে প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম ধান চাষ হয়েছে। কোথাও কোথাও ধানি জমিতে আগাম জোয়ারের পানি ও ঝড়বৃষ্টিতে অপরিপক্ক ধান ডুবে যায়।
ধানের পাইকাররা জানায়, রিষ্টপুষ্ট ভালোমানের ঝাড়া-শুকনা ধানের মণ কেনা হচ্ছে ১২শ’ টাকায়। অন্যান্য ধানের (মান অনুসারে) মণ কেনা হচ্ছে সাড়ে ৯শ’ থেকে সাড়ে ১১শ’ টাকা করে। এছাড়াও ভিজা ধান কেনা হচ্ছে সাড়ে ৮শ’ টাকায়। এসব ধান কমলা ঘাটসহ বিভিন্ন ধানের পাইকারি বাজারে পাঠানো হচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্ত ধান চাষিরা জানান, হাইব্রিড ২৮ ও ২৯ জাতের ধান চাষ বেশি হয়েছে। ৩ বেলা খাবার দিয়ে ১২শ’ থেকে ১৩শ’ টাকা করে একজন কৃষি শ্রমিকের মজুরি দিয়ে ধান কাটতে হয়েছে। এর সঙ্গে বীজ, পানিসেচ, সার-কীটনাশক, নিড়িসহ অন্যান্য খরচতো আছেই। এ বছর ধানের ফলনও কম হয়েছে। সব বাদ দিয়ে এ দামে ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না বলেন তারা।