- ১০ মাসে আড়াই লাখ কোটি টাকার ঘাটতি
অস্বাভাবিক হরে আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দেশে বড় বাণিজ্য ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক রাখতে আমদানি নিয়ন্ত্রণে এনে, রপ্তানি রেমিট্যান্স বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা। তা না হলে ক্রম সম্প্রসারণমান অর্থনীতি সংকটে পড়বে বলে মনে করছেন তারা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বাণিজ্য ঘাটতি মানে দেশে অর্থ আসার চেয়ে বেশি বেরিয়ে যাচ্ছে। আমদানি বেশি হচ্ছে রপ্তানি রেমিট্যান্স কম হচ্ছে। এখন ঘাটতি কমাতে হলে রপ্তানি রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। অন্যদিকে রপ্তানির তুলনায় আমদানি বেশি হওয়ায় অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের (ব্যাল্যান্স অব পেমেন্ট) হালনাগাদ তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত পণ্য বাণিজ্যে বাংলাদেশের ঘাটতি পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৬ কোটি ৯০ লাখ ডলার। বর্তমান বিনিময় হার হিসেবে (প্রতি ডলার ৯০ টাকা) যার পরিমাণ ২ লাখ ৪৮ হাজার ১২১ কোটি টাকা।
অথচ গেল অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৮০১ কোটি ডলার। আর গত অর্থবছরের পুরো সময়ে এই ঘাটতি ছিল ২ হাজার ২৮০ কোটি ডলার। ১০ মাসে আড়াই লাখ কোটি টাকার বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
আমদানির নামে কী আসছে তা তদারকি করার পরামর্শ দিয়েছেন সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ। তার মতে, আমদানির পণ্য দেশে আসছে কি না তাও খতিয়ে দেখতে হবে। পাশাপাশি রপ্তানি পণ্যের যে অর্থ বিদেশে পড়ে আছে তা দ্রুত আনা দরকার। এর আগে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের মূল্য ৮৯ নির্ধারণ করে দিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত ঠিক ছিল না। এখন তা তুলে নিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার বাজার ঠিক রাখতে হলে হলে বহুমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন ড. আহমেদ।
প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সময়ে রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অন্যদিকে আমদানি বেড়েছে ৪১ দশমকি ৪২ শতাংশ। আলোচিত ১০ মাসে রপ্তানি থেকে দেশ আয় করেছে ৪ হাজার ১১০ কোটি ডলার। পণ্য আমদানির পেছনে ব্যয় হয়েছে ৬ হাজার ৮৬৭ কোটি ডলার। আমদানি ব্যয় থেকে রপ্তানি আয় বাদ দিলে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়ায় দুই হাজার ৭৫৬ কোটি ডলার।
মূলত দেশে রপ্তানির তুলনায় ব্যাপক হারে বেড়েছে আমদানি। এ কারণে বহির্বিশ্বের সঙ্গে রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতিতে পড়েছে দেশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৭৫৬ কোটি ডলার। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় আড়াই লাখ কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে।