ডিমলায় অবস্থিত পচনশীল বর্জ্য নিয় প্যারাগন এগ্রো লিমিটেডের একটি জৈব সার তৈরির কারখানার বর্জ্য ও বায়বীয় দুর্গন্ধে বিপর্যস্ত জনস্বাস্থ্য। কারখানার বর্জ্য পদার্থ অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার জন্য বারবার কারখানা কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ করা হলেও মেলেনি সুফল।
এ কারণে ভুক্তভোগী এলাকাবাসীর মধ্যে তৈরি হয়েছে চরম ক্ষোভ। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পরিবেশ আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সরকার বিভিন্ন কারখানার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেও প্যারাগন কোম্পানির এই কারখানা দূষণ রোধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানি ইউনিয়নের ছাতুনামা ভেন্ডাবাড়ি চর এলাকায় প্যারাগন জৈব সার কারখানায় দেশের
বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মুরগির বিষ্টা, গোবরসহ বিভিন্ন পচনশীল ও অপচনশীল বর্জ্য দ্রব্য এসে জড়ো হয়। স্তূপীকৃত এসব পচনশীল বর্জ্যের দূষণ ও দুর্গন্ধে আশপাশের কয়েক গ্রামের হাজার মানুষ মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। এছাড়া সার তৈরিতে ব্যাবহৃত বিভিন্ন কেমিকেল বাতাসের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় নিঃশ্বাস নেওয়াই দুরূহ হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক জানান, জৈব সার তৈরি প্রকল্পে স্থানীয় মানুষজন উপকৃত হওয়ার কথা ঠিক। কিন্তু ঠিক ততটাই অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন তারা। তার একমাত্র কারণ, ওই পচনশীল দ্রব্যের গন্ধে অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষ। ব্যাপক দুর্গন্ধে বড়দের পাশাপাশি শিশুরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। অন্তঃসত্ত্বা নারীরাও পড়েছেন বিপাকে। দুর্গন্ধের কারণে তারা বমিও করে ফেলছেন। এই দুর্গন্ধে তারা প্রায় দুই বছর ধরে ভুগছেন। বার বার অভিযোগ জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
ছাতুনামা কেল্লাপাড়া গ্রামের আব্দুল জব্বার, বানেছা, এলিজাসহ কয়েকজন জানান, বিষ্ঠার দুর্গন্ধে অসহনীয় যন্ত্রণা নিয়ে বসবাস করছি। রোদবৃষ্টিতে বাতাসে গন্ধ আরও বেশি ছড়িয়ে পড়ে। দুর্গন্ধে বমি আসে খাওয়া-দাওয়া করা যায় না। ঘুমাতেও কষ্ট হয়। সবচেয়ে সমস্যার সম্মুখীন শিশু ও বৃদ্ধরা।
এ বিষয়ে প্যারাগন এগ্রো লিমিটেডের-২ এর ম্যানেজার সারোয়ার হোসেন জানান, আমরা গোবর, ছাই, বিষ্ঠা নিয়ে কাজ করি। একটু তো গন্ধ থাকাটাই স্বাভাবিক। জৈবসার উৎপাদন করে দেশকে সহযোগিতা করছি। সরকার রেজিস্ট্রেশন দিয়েছে প্রতিষ্ঠানকে।
নীলফামারী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মন জানান, প্যারাগন এগ্রো লিমিটেড জৈবসার উৎপাদনে পরিবেশ দূষণ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলেয়েত হোসেন জানান, এ বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান যদি পরিবেশ দূষণে জড়িত থাকে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আনন্দবাজার/শহক