ঢাকা | শুক্রবার
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ,
২রা কার্তিক, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডোপটেস্ট জটিলতায় অর্থ অপচয়, বাড়ছে ভোগান্তি

ডোপটেস্ট জটিলতায় অর্থ অপচয়, বাড়ছে ভোগান্তি
  • ৪ মাস ধরে বন্ধ নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম

আইনশৃঙ্খলা ও মাসিক সমন্বয় সভায় আলাপ করেও ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছে না: হাবিবুর রহমান, সহকারী পরিচালক, বিআরটিএ, হবিগঞ্জ

ক্রয় পরিকল্পনাতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় ডোপ টেস্ট কিট কেনা হচ্ছে না, অধিদপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত আসলেই ডোপ টেস্ট সেবা চালু করা সম্ভব : মোহাম্মদ নূরুল হক, সিভিল সার্জন, হবিগঞ্জ

ডোপ টেস্ট জটিলতায় হবিগঞ্জে চার মাস ধরে বন্ধ রয়েছে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার কয়েক হাজার গাড়িচালকসহ পরিবহন সংশ্লিষ্টরা। যদিও গত ৩০ জানুয়ারী থেকে পেশাদার গাড়িচালকদের জন্য ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। তবে হবিগঞ্জে এখনও এ সেবাটি চালু করা হয়নি। যে কারনে নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন করতে না পারায় রাস্তায় চালকদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে।

তাছাড়া ডোপ টেস্ট ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার জন্য দায়িত্বশীল মহলে বারবার ধর্ণা দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে জানান পরিবহন নেতারা। এতে ডোপ টেস্ট সনদের জন্য চালকদের সিলেট ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দৌড়াতে হয়। এতে একদিকে যেমন চালকদের সময় ও অর্থ অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে বাড়ছে তাদের নানা ভোগান্তি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন (বিআরটিএ)  হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয় সূত্র জানায়, গত ৩০ জানুয়ারি থেকে পেশাদার গাড়িচালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক করেছে বিআরটিএ। তবে সরকারি এ নির্দেশনার ৪ মাস অতিবাহিত হলেও হবিগঞ্জে এখনও সেবাটি চালু করা হচ্ছে না। এতে ৪ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে চালকদের নতুন লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম। তবে লাইসেন্স নবায়ন সংক্রান্ত বিষয়ে রাস্তায় পুলিশি হয়রানী এড়াতে চালকদের সিøপ দিচ্ছে বিআরটিএ। আপাতত এ স্লিপ দেখালে চালকাদের কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ।

বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে আসা রাসেল মিয়া জানান। ডোপ টেস্ট লাগবে তিনি আগে জানতেন না। অফিসে আসার পর দেখেন কোনো নতুন আবেদন জমা নিচ্ছে না। ডোপ টেস্ট করা হলে তার আবেদন জমা নিবে বিআরটিএ। হঠাৎ বিআরটিএ- এর এ নিয়মে ভোগান্তিতে পড়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাংগঠনিক সম্পাদক সজিব আলী বলেন, ডোপ টেস্ট দিতে আমরা রাজি আছি, তবে হবিগঞ্জে এ সুবিধার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। সিলেট বা ব্রাহ্মণবাড়িয়া গিয়ে ডোপ টেস্ট করা গরীব চালকদের জন্য সম্ভব নয়। আগামী সপ্তাহের মধ্যে হবিগঞ্জে ডোপ টেস্টের কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আমরা কী করব, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।

বিআরটিএ হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, ডোপ টেস্ট সনদ না থাকায় পেশাদার গাড়িচালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু ও নবায়ন কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। আপাতত লাইসেন্স নবায়নের জন্য যে আবেদনগুলো আসছে সেগুলো নিচ্ছি। তবে যারা নতুন লাইসেন্সের জন্য আবেদন করছেন আমরা সেগুলো গ্রহন করছি না। ইতিমধ্যে নবায়নের জন্য অফিসে কয়েক শ আবেদন জমা পড়েছে। জেলায় ডোপ টেস্ট ব্যবস্থাপনার জন্য একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা সভা ও মাসিক সমন্বয় সভাতে আলাপ করেছি। তবুও ডোপ টেস্টের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। তবে চালকরা যাতে কোনো ঝামেলায় না পড়েন আমরা তাদের স্লিপ দিচ্ছি। আপাতত এ স্লিপ দেখালে রাস্তায় চালকদের কোন রকম হয়রানী ও ভোগান্তিতে পড়তে হবে না।

জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ নূরুল হক জানান, হবিগঞ্জে ডোপ টেস্ট জটিলতার বিষয়টি সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে। অধিদপ্তর থেকে সিদ্ধান্ত আসলেই ডোপ টেস্ট সেবা চালু করা সম্ভব হবে। গত অর্থবছরের ক্রয় পরিকল্পনাতে অন্তর্ভুক্ত না থাকায় ডোপ টেস্ট কিট কেনা হচ্ছে না। তবে শিগগিরিই  এ ডোপ টেস্ট জটিলতার বিষয়টি সমাধান করা হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন