অনেকেই আছেন যারা যেকোনো কাজ করার আগে ভয় পান। কোনো কাজ শুরুর আগে রাজ্যের দুশ্চিন্তা চেপে বসে মাথায়। ভাবতে থাকেন যে, আদৌ কাজটি করতে পারবেন কীনা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আত্মবিশ্বাসের অভাব হলেই এ ধরনের পরিস্থিতি হয়। তখন নিজের প্রতি সন্দেহ দেখা দেয়।
মনোবিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মেয়েদের মধ্য়ে এই সমস্যা আরও বেশি দেখা যায়। শৈশবের নানা অভিজ্ঞতা এর কারণ হতে পারে। যেমন-আপনার বাবা-মা ছোটবেলায় আপনার সাথে কেমন ব্যবহার করেছেন, আপনার কোনও এক ব্যর্থতা যা আপনাকে এখনও দুঃখ দেয়, আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করতে পারে। ভয়ানক সমস্য়ার মুখোমুখি হতে পারেন। তাই নিজেকেই আত্মবিশ্বাস গড়ে তুলতে হবে।
সাহস, আত্মবিশ্বাস এবং মনের জোর বাড়াতে যা করণীয়-
মন ভালো রাখার চেষ্টা করুন: দীর্ঘ বছর ধরে পাওয়া আঘাত অথবা অনেক খারাপ স্মৃতি এবং খারাপ কথা আমাদের মন খারাপ করে দেয়। অনেক সময় সেসব কথা মনে করে কষ্ট হয়। অনেক সময় নিজের প্রতি বিশ্বাস চলে যেতে শুরু করে। ভয় লাগতে শুরু করে। তাই সেসব স্মৃতিকে ধীরে ধীরে মুছে ফেলার চেষ্টা করুন। খারাপ স্মৃতি মন থেকে পরিষ্কার করে ফেলুন। যদিও এটা কোনও সহজ বিষয় নয়। তবে ধীরে ধীরে এবং প্রতিদিন এই অভ্য়াস করা প্রয়োজন। এতে আপনার উপকার হবে এবং আপনি ভালো থাকবেন। এছাড়াও এই একটা বিষয় মনে রাখবেন, সবার মধ্য়েই কোনও না কোনও ঘাটতি থাকে। সবাই সবক্ষেত্রে সফল হয় না।
মেডিটেশন করুন: নিয়মিত মেডিটেশনের করুন। এতে মন ভালো থাকবে। মেডিটেশন মনের ভয় এবং অন্ধকার সরিয়ে দিতে সাহায্য করে। এটি আমাদের লক্ষ্য সম্পর্কে আরও বেশি স্পষ্ট হতে সাহায্য় করে। সেই সাথে আত্মবিশ্বাস, আত্ম সচেতনতা, সাহস বাড়াতে ভূমিকা রোখে। মন ভালো থাকলে অবশ্যই মনের জোর বাড়বে।
তুলনা করবেন না: কখনও অন্যের সাথে নিজের তুলনা করবেন না। অন্যের পরিস্থিতির সাথে নিজের তুলনা করবেন না। সবাই আলাদা আলাদা পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এবং সেই পরিস্থিতিতেই নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন। নিজেকে বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার শক্তি, দুর্বলতা, স্বপ্ন, চাহিদা, ইচ্ছা ও লক্ষ্যকে বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি অনন্য এবং বাকি সবার থেকেই আলাদা। তাই অন্যের কোনও সাফল্য অথবা কারও কোনও কটু কথা আপনার মনকে খারাপ করে দিতে পারে না, যদি আপনি না চান।
লিখে রাখার অভ্যাস ও ভালো মানুষের সঙ্গ: আপনি সারাদিনে কী কী করলেন? কোন কোন বিষয়ের জন্য় আপনি কৃতজ্ঞ থাকবেন, আপনি কী কী পেলেন এবং আপনি কীসে উৎসাহ পেলেন- এইসব বিষয় ডায়েরিতে লিখে রাখুন। আপনি যখন সারাদিন পর এইসব লিখতে বসবেন, তখন আবারও ভালো বিষয়গুলি আপনার মনে পড়বে। যা আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। লেখা হয়ে গেলে সেটি আবার পড়ুন। তখন দেখবেন মন খুব ভালো হয়ে গেছে।
পরিবার এবং ভালো বন্ধুরা মানসিকভাবে আমাদের সাহায্য করে। মন ভালো করতে তাদের সাথে কথা বলুন। এতে মানসিক জোর পাবেন।
সঠিক লক্ষ্য, ভালো অভ্যাস এবং সাহায্য চাওয়া :দৈনন্দিন জীবনে ভালো অভ্যাস তৈরি করুন। যেমন- প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠে যোগব্যায়াম করতে পারেন। সঠিক জীবনধারণ করতে পারেন। এটি আপনার জীবনকে অনেক সহজ করবে। আপনার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। মন ভালো রাখবে। মানুষ মাত্রেই সাহায্য়ের প্রয়োজন। তাই কখনও কারও সাহায্য় প্রয়োজন হলে অবশ্যই সাহায্য চান। এছাড়াও আপনি যদি কখনও মানসিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, কঠিন পরিস্থিতিতে থাকেন, তবে অবশ্যই প্রফেশনাল থেরাপিস্টের সাহায্য় নিতে পারেন।
আনন্দবাজার/টি এস পি